SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): July 2018

Tuesday 31 July 2018

উত্তমকুমার অভিনীত সবকটি ছবির নাম দিয়ে লেখা পত্রখানি সত্যিই সুন্দর সৃষ্টি(সংগৃহীত)


উত্তম কুমার স্মরনে

*“প্রিয়তমা” “বিপাশা”*
                           
        *“সবার উপরে”* তোমাকে দিলাম আমার *“রক্ততিলক”* *“অভিনন্দন”*। *“অন্নপূর্ণার মন্দির”*এ *“বিকালে ভোরের ফুল”* কুড়োতে গিয়ে আমি  *“হারানো সুর”* খুঁজে পেলাম। *“প্রিয় বান্ধবী”* যেদিন *“অপরিচিত”* আমরা প্রথম মন *“দেয়া নেওয়া”*র *“অগ্নিপরীক্ষা”*য় *“উত্তীর্ণ”* হলাম সেদিন আমাদের *“নবজন্ম”* হলো। *“শুকসারী”* আমাদের *“আলোর ঠিকানা”*য় পৌঁছে দিল। আমাদের এতদিনের *“জীবন জিঞ্জাসা”*র *"রৌদ্র ছায়া”*য় মিলেমিশে একাকার হয়ে গেল। তারপর *“মন নিয়ে”* খেলতে খেলতে তুমি একদিন *“পরিনীতা”* হলে *“রাজ নন্দীনি”*র মতো। *“ওগো বড় মানুষের মেয়ে”* *“ধন্যি মেয়ে”* তুমি, তারপর *“নায়িকার ভুমিকায়”* অভিনয় করে অনেকের *“মনহরন”* করলে। *“শুধু একটি বছর”* তারপর *“চিরন্তন”* নিয়মের মতোই *“অগ্নিসাক্ষী”* করে তোমার বিয়ে হলো *“শিউলি বাড়ী”* তে, তবে এই *“কলঙ্কিত নায়ক”* এর সাথে নয়, আমার *“পুরাতন বন্ধু”* *“শ্রীকান্ত”*র সাথে।  *“শেষ অঙ্কে”* আমার *“পথে হলো দেরী”*। ততক্ষনে তুমি *“সূয’তোরন”* পেরিয়ে চলে গেছো *“গলি থেকে রাজপথে”*, *“সমাধান”* হলো *“সাহেব বিবি গোলাম”* এর *“বাঘ বন্ধী খেলা”* । *“তোমার বিরহে”* *“ওগো বধূ সুন্দরী”* আমি  *“দেবদাস”* এর মতো সুরাপান  করে *“অমানুষ”* হয়ে গেছি।  শেষ হলো আমার *“তাসের ঘর”*এ *“রাজা সাজার খেলা”* । মাঝে  মাঝে মনে হয় *“সাথীহারা”* আমি  *“সন্যাসী রাজা”* হয়ে *“সদানন্দের মেলা”* চলে যাই। *“কাল  তুমি আলেয়া”* হয়ে এসেছিলে *“ছোটিসি মুলাকাত”* করতে আমার *“এখানে পিঞ্জর”* এ। একদিন ভাবলাম *“মায়ামৃগ”* এর মতো *“ছদ্মবেশী”* সেজে তোমার  কাছে যাই, তোমাদের *“চৌরঙ্গী”* র *“আনন্দ  আশ্রম”*এ একগোছা  *“রাতের রজনীগন্ধা”* নিয়ে  তোমার *“সেই চোখ”* দেখতে । কিন্তু তুমি এখন *“বিচারক”* *“শ্রীকান্ত”* র  *“স্ত্রী”* তাই *“বড় দিদি”* আমায়  নিষেধ করলো তোমার *“শঙ্খ বেলা”*র   *“উত্তরায়ণ”*এ আমার *“বিলম্বিত লয়”* মানবেনা তাই।  *“হাত বাড়ালেই বন্ধু”* অনেক পাওয়া যায় কিন্তু *“ওরা থাকে ওধারে”* । বন্ধু  *“অগ্নীশ্বর”* এর  সাথে *“জীবন মৃত্যু”* উপেক্ষা করে *“এন্টনী ফিরিঙ্গী”* র মতো *“মরূতীর্থ হিংলাজ”* যাবার ইচ্ছা আছে। এই *“ছিন্নপত্র”* এ আমি *“বন পলাশির পদাবলী”* লিখছি না।  শুধু তোমার আমার *“দুই পৃথিবী”*র *“ব্যবধান”* টুকু জানালাম। *“অভয়ের বিয়ে”* তে *“সব্যসাচী”*  *“বসু পরিবার”* এর *“সাগরিকা”* কে বিয়ে করার প্রস্তাব  দিয়েছিল। কিন্তু আমার এ জীবনে *“শাপমোচন”* করার ক্ষমতা সাগরিকার মতো কোন *“ব্রতচারিনী” “রাজকুমারী”* র নেই।  সেদিন *“চিড়িয়াখানা”* হয়ে *“লাল পাথর”* এর *“সপ্তপদী”* মন্দির দর্শন করলাম। ওখানেই *“ঝিন্দের বন্দী” “সাত নম্বর কয়েদী” “সাড়ে চুয়াত্তর”* বছরের *“রাজদ্রোহী” “রাইকমল”* এর সাথে *“কমললতা”* কে দেখলাম। *“বিভাস”* বলল ওর  *“স্ত্রী"  “ইন্দ্রানী”* খুব অসুস্থ । তোমাকেই *“চিরদিনের”* ভেবে এখনো তোমার স্মৃতিতে *“দ্বীপ জ্বেলে যাই”*। *“কলঙ্কিনী কঙ্কাবতী”* তুমি *“শিল্পী”* হলে বুঝতে আমার মতো *“তন্দ্রাহীন” “নায়ক”* এর ব্যাথা।
                  বিদায়  ইতি
            *“কলঙ্কিত নায়ক”*
                  *“চন্দ্রনাথ”*

Thursday 26 July 2018

Santal (সাঁওতাল)

ভারত ও বাংলাদেশে  বসবাসকারী আদিবাসী বিশেষ। প্রায় ৬৫ হাজার বৎসর আগে, আফ্রিকা থেকে নরগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ ধীরে ধীরে অন্যান্য মহাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল। এই দলটি প্রোটো-অস্ট্রালয়েড নামে বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করেছেন। এদের গায়ের রং কালো, নাক অনুচ্চ, চুল কালো ও কুঞ্চিত, উচ্চতা মাঝারি। প্রোটো-অস্ট্রালয়েড  মানব হিসেবে এদের সাথে বিশেষ নৃতাত্ত্বিক ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে মুণ্ডা ও মালপাহাড়িদের সাথে। আবার দ্রাবিড় সংস্কৃতিরও কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য এদের ভিতরে পাওয়া যায়।

এদের ভাষার নাম সাঁওতালি। উল্লেখ্য এই ভাষাটি অস্ট্রো-এশিয়াটিক ভাষা পরিবার-এর অন্তরর্গত। সাধারণভাবে এদের ভাষাকে অস্ট্রিক ভাষা গোষ্ঠীর অন্তর্গত ভাষা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।  অস্ট্রিক ভাষাভাষী মানুষদের একটি বড় অংশ ভারতবর্ষের প্রবেশ করেছিল খাইবার বোলান গিরিপথ দিয়ে। গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডাস-এর বিবরণ থেকে জানা যায়, সিন্ধু ও বেলুচিস্থানের কুটির শিল্পীদের বলা হতো সান্তাল। এই অঞ্চলে কিস্কু এবং মাণ্ডি গোষ্ঠীর লোকের সমভাবে শক্তিশালী হয়ে উঠার কারণে আধিপত্যের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এই সময় চাম্পা অঞ্চল ত্যাগ করে সান্তালরা উত্তর ও পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়তে থাকে। সাঁওতালরা ভারত-উপমহাদেশের কৃষির পত্তন ঘটিয়েছিল বলে অনেকে মনে করেন।

আর্যদের ভারতবর্ষে প্রবেশের পর বিভিন্ন অনার্যগোষ্ঠীর ভিতরে বিবাহাদি হতে থাকে। এই সময় আর্যদের আধিপত্য স্বীকার না করায়, অনেক স্থলে অনার্যদের সাথে আর্যদের সংঘর্ষ হয়। আর্যরা অপেক্ষাকৃত শক্তিশালী হওয়ায়, অনার্যদের অনেকে জঙ্গলে আশ্রয় নেয়। দীর্ঘদিন ধরে নগর সভ্যতার সাথে সম্পর্কীহীন থাকায় এরা অরণ্যচারী আদিবাসীতে পরিণত হয়। একালের সাঁওতালরা হলো সেই বিদ্রোহী অরণ্যচারী সাঁওতালদের উত্তরপুরুষ। পূর্ব-ভারতে পালিয়ে আসা সাঁওতালরা বনে জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে এক সময় ছোটনাগপুর অঞ্চলে বসতী স্থাপন করে। যতদূর জানা যায়, এই অঞ্চলে মৌর্য সাম্রাজ্যের উত্থানের সময় পর্যন্ত (খ্রিষ্টপূর্ব ৩২০ অব্দ) এরা বেশ শান্তিতেই ছিল। এরপর থেকে সাঁওতালদের সাথে ভারতীয় মিশ্রজাতির লোকদের তিক্ততার সৃষ্টি হতে থাকে। তবে গোড়ার দিকে এই অসন্তোষ বড় হয়ে দেখা দেয় নি। নবাবী আমল পর্যন্ত সাঁওতালরা নিজেদের মতও চলতো। ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলা দখল নেওয়ার পর, স্থানীয় জমিদার এবং পুলিশ প্রশাসনকে কর ও উৎকোচ প্রদানের ভার, ইউরোপীয় নীল-ব্যবসায়ী ও কর্মকর্তাদের নানাবিধ অত্যাচারে সাঁওতালদের জনজীবনকে দুর্বিসহ হয়ে উঠে। এই সূত্রে ১৮৫৫ খ্রিষ্টাব্দে সাঁওতালরা কোম্পানির শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। ইতিহাসে এই বিদ্রোহকে বলা হয় 'সাঁওতাল বিদ্রোহ'।

সাঁওতালরা নিজেদেরকে খেরওয়াল বংশ বলে পরিচয় দেয়। গিবার্সন তাঁর 'Linguistic survey of India' গ্রন্থে লিখেছেন সাঁওতাল, মুণ্ডারি, ভূমিজ, কোড়া হো টুরি, আসুরি এবং কোরওয়া একই ভাষার ভিন্ন ভিন্ন রূপ। এই সব আদিবাসীদের সকলকে এক সময়ে "খেরওয়ার বা থারওয়া' বলা হতো।

সাঁওতালরা বাংলাদেশের রাজশাহী, দিনাজপুর, রংপুর ও বগুড়া জেলায় বসবাস করে। অন্যদিকে ভারতের রাঢ়বঙ্গীয় অঞ্চল, বিহার ও উড়িষ্যার অরণ্যাঞ্চল এবং ছোটনাগপুরে বসবাস করে।

১৮৮১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারিতে দেখা যায় যে পাবনা, যশোর, খুলনা, এমনকি চট্টগ্রাম জেলায়ও অল্প সংখ্যায় সাঁওতালদের বসতি ছিল। ১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দের জরিপ অনুযায়ী বর্তমান বাংলাদেশ এলাকায় সাঁওতালদের সংখ্যা ছিল প্রায় আট লক্ষ। ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে পাক-ভারত বিভাগের পর লোকগণনার সময় সাঁওতালদের স্বতন্ত্র জাতি হিসেবে গণ্য করা হয় নি। ফলে বহুদিন তাদের যথার্থ সংখ্যা নির্ধারণ করা সম্ভব হয় নি। ১৯৯১ খ্রিষ্টাব্দের আদমশুমারি অনুযায়ী সাঁওতাল জনসংখ্যা দুই লক্ষের বেশি। ২০০১ খ্রিষ্টাব্দের জরিপে এদের মোট সংখ্যা জানা যায় নি।
সাঁওতাল নামের উৎপত্তি
ধারণা করা হয় সংস্কৃত সামান্ত পাল (সীমান্ত রক্ষক) শব্দটি মধ্যযুগে 'সামন্ত আল' শব্দে পরিণত হয়েছিল। প্রাচীন মেদেনীপুরের একটি অংশের নাম ছিল সাওন্ত বা সামন্তভূমি। এই শব্দই সাঁওতালদের ভিতরে শাওনতার হিসেবে প্রচলিত হয় বেশ আগে থেকে। কালক্রমে সাওন্ত>সাওন্তাল  বা শাওনতার থেকে সাঁওতাল শব্দটির প্রচলন হয়।

সাঁওতালদের গোত্র-উপগোত্র
আফগানিস্তানের অংশবিশেষের নাম ছিল কান্দাহার বা গান্ধার। আর সমগ্র সিন্ধু প্রদেশের নাম ছিল চায় চাম্পা। চাম্পা অঞ্চলে সান্তালদের ছিল ১৪টি গোষ্ঠীর ১৪টি কেল্লা বা গড়। এই গড়গুলো হলো—

১.কুটামপুরি গড় (হাঁসদা গোষ্ঠী)
২. ময়নামতী গড় (হাঁসদা গোষ্ঠী)
৩. কঁয়ড়া গড় (কিস্কু গোষ্ঠী)
৪. চাম্পা গড় (মুর্মু গোষ্ঠী)
৫. যায়রি গড় (হেমবম গোষ্ঠী)
৬. বাদোলী গড় (মাণ্ডি গোষ্ঠী)
৭. চায়গড় (সরেন গোষ্ঠী)
৮. সিমগড় (টুডু গোষ্ঠী)
৯. লুই বাড়ি লুকুই গড় (টুডু গোষ্ঠী)
১০. হারবালোয়ং গড় (বাস্কে গোষ্ঠী)
১১, বানসারিয়া গড় (বেসরা গোষ্ঠী)
১২. জাঙ্গেকোডে গড় (চঁড়ে গোষ্ঠী)
১৩. বামাগড় (পাউড়িয়া গোষ্ঠী)
১৪. হলংগাড়া গড় (বোয়ালি গোষ্ঠী)
বর্তমানে সাওঁতালদের মোট ১২টি গোত্রের নাম পাওয়া যায়। এই গোত্র গুলো হলো— কিস্কু, হাঁসদা, মুর্মু, হেমব্রম, মাণ্ডি, সরেন, টুডু, বাস্কে, বেশরা, চঁড়ে, পাঁউরিয়া ও বেদেয়া। এদের ভিতরে বর্তমানে বেদেয়া গোত্রের লোক দেখা যায় না। এদের ভিতরে কিছু গোত্র কিছু কিছু বিশেষ কাজে দক্ষ ছিল। এই সকল গোত্রের লোকেরা কাজের সূত্রে বিশেষ নামে অভিহিত হতো।

সরেন সেপাই: সরেনরা একসময় সৈনিক হিসেবে কাজ করতো।
কিস্কু রাপাজ: রাজ্য চালনায় সুদক্ষ ছিল। এই কারণে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
মাণ্ডি কিসাঁড়া বা কিলিপসাড়: মাণ্ডিরা কৃষিকাজ করতো বলে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
মুর্মু ঠাকুর: পৌরিহত্য করতো বলে, এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো।
এছাড়া অন্যান্যরা পৃথক নাম না পেলেও, তারাও বিশেষ কাজে পারদের্শী ছিল। যেম হেমব্রমরা করতো দেওয়ান-এর কাজ, বাস্কেরা করতো  ব্যবসা, হাঁসদা এবং টুডু-রা ছিল লোহার কর্মকার। এই গোত্রের লোকেরা নাকাড়া জাতীয় মাদল বাজনাতেও দক্ষ ছিল। আগে সাঁওতালরা নিজ নিজ গোত্রের জন্য চিহ্ন ব্যবহার করতো। বিশেষ করে গরু মহিষের গায়ে এরা নিজ গোত্রের চিহ্ন ব্যবহার করতো। ফলে তাদের গোত্রের প্রাণী খুঁজে পাওয়া সহজ ছিল।

প্রতিটি গোত্রের রয়েছে নিজস্ব ধর্মীয় প্রতীক বা টোটেম। প্রতিটি গোত্রের রয়েছে বেশকিছু উপগোত্র। এ সকল উপগোত্রেরও রয়েছে পৃথক টোটেম। এই টোটেম নির্ভর ভাবনা থেকে এদের উপগোত্রে কিছু বিধিনিষেধ বা ট্যাবু মান্য করা হয়। নিচে গোত্র-ভিত্তিক পরিচয় তুলে ধরা হলো।

১. হাঁসদা গোত্র: সমাজে এদের প্রধান পরিচয় লোহার কর্মকার হিসেবে। এদের গোত্রীয় চিহ্ন এবং টোটেম ছিল হাঁস। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– সিঁদুর, সাদা রঙ, বুনো ছত্রাক, বেনা ঘাস ইত্যাদি। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র হাঁসদা। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ হাঁসদা, অবর হাঁসদা, কাঁড়া ওজা হাঁসদা, কাঁহু  হাঁসদা, কুণ্ডা হাঁসদা, কুহি হাঁসদা, কেডওয়ার হাঁসদা, গাড় হাঁসদা,  চিল বিন্দা হাঁসদা, জিহু হাঁসদা, নায়কে থিল হাঁসদা, পিট কাণ্ডা হাঁসদা, মাঝি থিল হাঁসদা, যুগী হাঁসদা, রকলুতুর হাঁসদা, রাতওয়ারা হাঁসদা, সলে হাঁসদা, সাঁক হাঁসদা, সাদা হাঁসদা,

২. কিস্কু: রাজ্য চালনায় সুদক্ষ ছিল। এই কারণে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। কিস্কুদের চিহ্ন  ছিল লাঠি। এদের টোটেম শঙ্খচিল। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কেয়াফুল, সাদা রঙঁ, শকুন, ঘোড়া, কাঠ বিড়াল এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র কিস্কু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ কিস্কু, অবর কিস্কু, আড কিস্কু,  আবে কিস্কু, কাডা কিস্কু, কাতওয়ার কিস্কু, গাড় কিস্কু, জিহু কিস্কু, টিকা কিস্কু, নায়কে মিল কিস্কু, পাটি কিস্কু, বাদার কিস্কু, বিটল কিস্কু, মাঝি মিল কিস্কু, লাৎ কিস্কু, রকলুতুর কিস্কু, লাহের কিস্কু,  সন কিস্কু, সাদা কিস্কু।

৩. মুর্মু:  পৌরিহত্য করতো বলে, এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। এদের চিহ্ন ছিল লম্বা মই। এদের টোটেম নীলগাই। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– চাঁপাফুল, কুড়চিফুল, পলাশফুল, সাদা রং। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র মুর্মু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ মুর্মু, অবর মুর্মু, কাডা মুর্মু, কুড়াম মুর্মু, কোলহা মুর্মু, গাজার মুর্মু, চাপোয়ার মুর্মু, জিহু মুর্মু, টিকা বা তিলক মুর্মু, টুটি মুর্মু, টুরকু লুনাম মুর্মু, নায়কে মিল মুর্মু, পোণ্ডু মুর্মু, বাদাড় মুর্মু, পোয়ার মুর্মু, বিটল মুর্মু, বোওয়ারা মুর্মু, মাঝি মিল মুর্মু, যুগি মুর্মু, লাৎ মুর্মু, সাওয়ার মুর্মু, সাং মুর্মু, সাদা মুর্মু, হাণ্ড মুর্মু।

৪. মাণ্ডি: এদের অন্য নাম মাণ্ডি কিসাঁড়া বা কিলিপসাড়। এরা কৃষিকাজ করতো বলে এদেরকে এই নামে অভিহিত করা হতো। এদের চিহ্ন ছিল  তীর। এদের টোটেম খেরদা নামক ঘাস। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– পিয়াল গাছ, ধ গাছ, ঘোড়া, সোনা, মিরুবাহা নামক ফুল। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র মাণ্ডি। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অবর মাণ্ডি, কাডা মাণ্ডি, কুলমি মাণ্ডি, কেদওয়ার মাণ্ডি, গদা মাণ্ডি, জনক মাণ্ডি, টিকা মাণ্ডি, টুরকু লুখাম মাণ্ডি, থাণ্ডা যোগাও মাণ্ডি, থিরু মাণ্ডি, নায়কে মিল মাণ্ডি, পোণ্ড মাণ্ডি, বাবড়ে মাণ্ডি, বিটল মাণ্ডি, বুবু বেরেৎ মাণ্ডি, ভগো মাণ্ডি, মাঝি মিল মাণ্ডি, মাড় মাণ্ডি, যারা মাণ্ডি, যুগী মাণ্ডি, রকলতুর মাণ্ডি, রত মাণ্ডি, রূপা মাণ্ডি, লাকি মাণ্ডি, সাদা মাণ্ডি, সিদুপ মাণ্ডি, হেগেল মাণ্ডি।

৫. হেবব্রম: দেওয়ান-এর কাজ করতো। এদের চিহ্ন ছিল আঁকশি। এদের টোটেম সুপারি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– আমলকি গাছ, শকুন, তসর, শাঁখা, সাদা রং। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র হেবব্রম। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ হেবব্রম, অবর হেবব্রম, কুওয়ার হেবব্রম,গাড় হেবব্রম, গুয়া হেবব্রম, গুয়া সরেন হেবব্রম, ঠাকুর হেবব্রম, চাষা হেবব্রম, দাতেলা হেবব্রম, নায়কে মিল হেবব্রম, বাদার হেবব্রম,বিটল হেবব্রম, মাঝি মিল হেবব্রম, লাহের হেবব্রম, সলে হেবব্রম, সাৎ হেবব্রম, সাদা হেবব্রম, হাট হেবব্রম, হাণ্ডি হেবব্রম।

৬. সরেন: সরেনরা একসময় সৈনিক হিসেবে কাজ করতো। সেই থেকে সরেন সৈনিক নামে এরা পরিচিতি লাভ করে। এদের গোত্রীয় চিহ্ন ছিল হাঁস। এদের টোটেম সপ্তর্ষিমণ্ডল। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– আমলকি গাছ, শকুন, তসর, শাঁখা, সাদা রং, সিঁদুর। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র সরেন। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ সরেন, অবর সরেন, খাণ্ডা (বাদর) সরেন, গুয়া সরেন, চেহেল সরেন, জিহু সরেন, টুরকু সরেন, দাঁতেলা সরেন, নায়কে মিল সরেন, পেন্ড সরেন, বাজি সরেন, বিটল সরেন, মাও সরেন, মাঝি সরেন, মাণ্ডা সরেন, মাল সরেন, যুগী সরেন, রকতুল সরেন, লুমাম সরেন, সাঁক সরেন, সাজা সরেন, সাদা সিদুপ সরেন, সিদুপ সরেন।

৭. বাস্কে: এদের মূল পেশা ছিল ব্যবসা। এদের চিহ্ন ছিল লাঙ্গল। এদের টোটেম পান্তাভাত। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কাঠ বিড়াল, সোনা, শকুন। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র বাস্কে। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ বাস্কে, অবর বাস্কে, কুহি বাস্কে, কেদওয়ার বাস্কে, গাড় বাস্কে, জাহের বাস্কে, জিহু বাস্কে, ঠুন্টা বাস্কে, নায়কে মিল বাস্কে, পটম বাস্কে, বিটল বাস্কে, বিন্দার বাস্কে, ভিডি বাস্কে, মাঝি মিল বাস্কে, মুণ্ডা বাস্কে, লাৎ বাস্কে, সাদা বাস্কে, সারুগতা বাস্কে, সুড়ে বাস্কে, হেন্দে বাস্কে।

৮. বেসরা: এদের চিহ্ন ছিল ঢেরা। এদের টোটেম বাজপাখি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– কাক, শকুন, নিমকাঠি, হাঁড়িয়া। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র বেসরা। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ বেসরা, অবর বেসরা, কাহু বেসরা, কুসি বেসরা, গাড় বেসরা, গুয়া বেসরা, নায়কে মিল বেসরা, বাস্কে বেসরা, বিন্দাড় বেসরা, মন বেসরা, মাঝি বেসরা, রকলুতুর বেসরা, লাৎ বেসরা, সাদা বেসরা।

৯. টুডু: এর ছিল লোহার কর্মকার। এদের চিহ্ন ছিল টুইডুদের 'বৃত্তের ভিতর কাটা'। এদের মূল গোত্রে টোটেম জানা যায় নি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– সোনা হাঁড়িয়া। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র টুডু। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ টুডু, অবর টুডু, আঙ্গারিয়া টুডু, কুডাম টুডু, খরহারা টুডু, গাড় টুডু, চিমি টুডু, চুরুচ টুডু, তিলক টুডু, দাতেলা টুডু, নায়কে মিল টুডু, বাঁবড়ে টুডু, বাস্কে টুডু, বিটল টুডু, ভক্তা টুডু, মাঝি মিল টুডু, যুগী টুডু, লাৎ টুডু, সাদা টুডু।

১০. চঁড়ে: এদের টোটেম গিরগিটি। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– শকুন ও সাদা রঙ। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র চঁড়ে। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ চঁড়ে, অবর চঁড়ে, কাহু চঁড়ে, গাড় চঁড়ে, চপেয়ার চঁড়ে, চাচারহাৎ চঁড়ে, ঠাকুর চঁড়ে, নায়কে মিল চঁড়ে, নিজ চঁড়ে, বিটল চঁড়ে, বিন্দার চঁড়ে, মাঝি মিল চঁড়ে, লাৎ চঁড়ে, সাদা চঁড়ে, সিঁদুর চঁড়ে।


১১. পাউরিয়া: এদের টোটেম পায়রা। এর উপগোত্রগুলোর উল্লেখযোগ্য টোটেম– শকুন কাঠ বিড়াল ও সাদা রঙ। এদের উপগোত্রগুলো হলো–

মূল উপগোত্র পাউড়িয়া। অন্যান্য উপগোত্রগুলো হলো– অক্ পাউড়িয়া, অবর পাউড়িয়া, গাড় পাউড়িয়া, চাউরিয়া পাউড়িয়া, নায়কে মিল পাউড়িয়া, নিজ পাউড়িয়া, পটম পাউড়িয়া, বিটল পাউড়িয়া, ভিতার পাউড়িয়া, মাঝি মিল পাউড়িয়া, মুণ্ডা পাউড়িয়া, লাৎ পাউড়িয়া, সাদা পাউড়িয়া, সিদুপ পাউড়িয়া, সোনা পাউড়িয়া।

১২. বেদেয়া: এই গোত্রের নাম কিছু বই পত্রে পাওয়া যায়। কিন্তু এদের সন্ধান পাওয়া যায় না। সম্ভবত এরা অন্য কোনো গোত্রের সাথে মিশে গেছে।

টোটেম-এর উপর ভিত্তি করে সাঁওতালদের গোত্রে নানা ধরনের প্রাণী হত্যা বা আচরণগত ট্যাবু মান্য করে। যেমন যে সকল গোত্রে সাদা রঙ টোটেম। তাদের মেয়েরা শাঁখা পড়ে না, সাদা মুরগী খায় না। যাদের ঘোড়া টোটেম। তারা ঘোড়া হত্যা করে না, ঘোড়া স্পর্শ করে না। দূর থেকে ঘোড়াকে প্রণাম করে।

সাঁতালদের ধর্ম বিশ্বাস
সাঁওতালরা মূলত ধর্মবিশ্বাসের দিক থেকে সর্বপ্রাণবাদী ও প্রকৃতি উপাসক। তবে মূর্তি পূজার চল নেই।  এদের সৃষ্টিকর্তার নাম 'ঠাকুরজিউ'। তবে সাঁওতাল পৌরাণিক কাহিনীতে একজন পরমস্রষ্টার কথা পাওয়া যায়।  সাঁওতলাদের সৃষ্টি তত্ত্ব মতে,

আদিতে পৃথিবীতে জল ছাড়া আর কিছু ছিল না। একদিন চাঁদের মেয়ে স্নান করার সময়, তার শরীরের ময়লা দিয়ে এক জোড়া হাঁস তৈরি করলো। হাঁস দুটি অনেকদিন জলে ভেসে থাকার পর, এরা সৃষ্টিকর্তার কাছে খাবার প্রার্থনা করলো। সৃষ্টিকর্তা এই সময় মাটির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করলেন। সমুদ্রের তলদেশ থেকে মাটি তুলে আনার জন্য রাঘব বোয়াল, কাঁকড়া ও কচ্ছপদের দায়িত্ব দেওয়া হলো। এরা ব্যর্থ হলে, এই কাজ সম্পন্ন করলো কেঁচো। কেঁচো জলের উপর ভেসে থাকা কচ্ছপের পিঠের উপর লেজ রেখে, সমুদ্রের তলদেশে গিয়ে মাটি খেতে থাকল এবং তা লেজ দিয়ে বের করে দিতে থাকলো। এই ভাবে বিরাট কচ্ছপের পিঠের উপর সরের মতো মাটি জমে জমে পৃথিবী তৈরি হলো।

এর কিছুদিন পরে হাঁসা দু'টো ডিম পাড়ল, এই ডিম ফুটে জন্ম নিল এক নারী ও পুরুষ। এদের নাম ছিল পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ি। পৃথিবীর আদি মানব-মানবী বাস করতো হিহিড়ি-পিহিড়ি নামক স্থানে একটি জায়গায়। এদের মাধ্যমে আদিতে সাত কন্যা ও সাত পুত্রের জন্ম হয়।  পিলচু হাড়াম ও পিলচু বুড়ি ঈশ্বরের নির্দেশমতো পুত্র ও কন্যাদের নিয়ে সিংবীর ও মান্বীর নামক দুটি পৃথক স্থানে রাখা হলো। হাড়াম ছেলেদের বারণ করল কখনও মান্বীরে না যেতে। বুড়িও কন্যাদের নিষেধ করল সিংবীরে না যেতে। কিন্তু ঘটনাক্রমে এদের ভিতর দেখা হয়ে যায় এবং এরা বিবাহ করে। এই সূত্রে তৈরি হয় সাতটি বংশের- হাঁসদা, মুমু, কিস্কু, হেমব্রম, মারান্ডি, সোরেন ও টুডু৷ গোত্রের লোকেরা। পৌরাণিক কাহিনী ভেদে সাঁওতালদের গোত্রের সংখ্যা ১৪ বা ১২টিও পাওয়া যায়।

এদের প্রধান উপাস্য দেবতা সিং বোঙ্গা (সূর্য দেবতা)। পর্বত দেবতা মারাং বুরু এদের ধর্মে বিশেষ স্থান দখল করে আছে। এই দেবতা সমতলের সাঁতালদের কাছে গ্রামদেবতা হিসেবে পূজিত হয়ে থাকে। আর গৃহদেবতা হিসেবে তাই 'আবে বোঙ্গা'-কে মান্য করা হয়। নতুন গ্রামের পত্তন হলে, গ্রামের ভিতর দিয়ে একটি রাস্তা তৈরি করা হয়। এই রাস্তার মুখে শালকুঞ্জ তৈরি করে, তাতে মারাংবুরুকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। একে বলা হয় জাহের থান। এরূপ আর এজন দেবীকে গ্রামবাসী পূজা করে। এই দেবীর নাম জাহের এরা। অনেক সাঁওতাল শিব ও মনসা পূজা করে।

সাঁওতালদের বিশ্বাস আত্মা অমর এবং সেই অনৈসর্গিক আত্মাই (বোঙ্গা) সব ঐহিক ভালমন্দ নির্ধারণ করে থাকে। তাই দৈনন্দিন পূজা-অর্চনায় বোঙ্গা গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।

 সাঁওতালদের উৎসব
সাঁওতালরা খুবই উৎসবপ্রিয় জাতি। বাঙালিদের মতো এদেরও বারো মাসে তেরো পার্বণ। এদের বছর শুরু হয় ফাল্গুন মাসে। প্রায় প্রতিমাসে পরব বা উৎসব। এই উৎসবে নৃত্যগীতবাদ্য সহযোগে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এই উৎসবগুলো বিভিন্ন নামে অভিহিত হয়ে থাকে। যেমন—

স্যালসেই: নববর্ষের মাস ফাল্গুনে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
বোঙ্গাবোঙ্গি: চৈত্র মাসে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
হোম: বৈশাখে অনুষ্ঠিত উৎসব।
দিবি: আশ্বিন মাসে অনুষ্ঠিত উৎসব
সোহরাই: পৌষ পৌষ সংক্রান্তির দিন অত্যন্ত জাঁকজমকের সঙ্গে এই উৎসব উদ্‌যাপিত হয়। এই উৎসবে ফসলের দেবতার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। নাচ-গান-বাদ্য এবং ফুলের মনোরম শোভায় উৎসবটি বর্ণাঢ্য হয়ে থাকে। এর বড় আকর্ষণ সাঁওতাল তরুণীদের দলবদ্ধ নৃত্য করে।
বাহা: বসন্তকালে এই উৎসব হয়ে থাকে। একে বলা হয় ফুলফোটার উৎসব। বসন্তের শুরুতে এ উৎসবের উদ্দেশ্য নানা রঙের ফুলফোটার সৌন্দর্যকে অভ্যর্থনা ও অভিনন্দন জানানো। এই উৎসবেও থাকে নাচ-গান ও বাদ্যের সমারোহ। বসন্ত উৎসবের অন্যতম দিক হলো তরুণ-তরুণীদের জন্য চিত্তবিনিময়ের সুযোগ তৈরি করা। এ ধরনের চিত্তবিনিময় বা সঙ্গী-সঙ্গিনী নির্বাচনের কেন্দ্রস্থল হলো 'আখড়া'।
সাঁতালদের সমাজ
সাঁওতাল সমাজ প্রধানত কৃষিজীবী। কিন্তু আর্থ-সামাজিক কারণে দারিদ্র্য তাদের নিত্যসঙ্গী। তাই বাধ্য হয়ে অতি অল্প বিনিময়মূল্যে এরা চা বাগানে বা অন্যত্র শ্রম বিক্রয় করে। এছাড়া এরা মাটি কাটে, মোট বয় বা অনুরূপ দিনমজুরির কাজে নিজেদেরকে নিয়োজিত রাখে। এরা কঠোর পরিশ্রমে অভ্যস্ত। সাঁওতাল নারী-পুরুষ ওরাওঁদের মতো দেহে উল্কিচিহ্ন ধারণ করে। সাঁওতাল সমাজ এখনও ঐতিহ্যবাহী পঞ্চায়েতি ব্যবস্থায় পরিচালিত এবং গ্রামপ্রধান সমাজে বিশেষ মর্যাদা ভোগ করে থাকে। এই পঞ্চায়েত ৭টি পদস্থ ব্যক্তি পরিচালনা করে। এরা হলো- মাঝি, জগমাঝি, পারণিক, জগ-পারণিক, গোডেত, নায়কে ও কুডাম নায়কে।

মাঝি: গ্রামের সর্বময় কর্তা। জন্ম, মৃত্যু বিবাহ, পূজা ইত্যাদির জন্য অনুষ্ঠান এর নির্দেশে করা হয়। সাধারণত কোনো গ্রাম পত্তন হলে মাঝি আনুষ্ঠানিকতার মধ্য দিয়ে তা উদ্বোধন করেন। এছাড়া নতুন ঘর তৈরি, বাড়ির সীমানা নির্ধারণ, পূজার স্থান নির্বাচন, গ্রাম দেবতার প্রতিষ্ঠায় মাঝির নির্দেশই মান্য করা হয়।  গ্রামের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মাঝির অধীনে কিছু কর্মী কাজ করে। মাঝির মৃত্যু হলে, তাঁর পুত্র বা ভাই মাঝি হয়। যদি এরূপ কোনো জ্ঞাতি না থাকে, তবে পরাণিক মাঝি হয়।

পরাণিক: মাঝির সহকারী এবং মাঝির পরবর্তী ক্ষমতাধর ব্যক্তি হলেন পরামাণিক। মাঝি গ্রামের বাইরে গেলে তাৎক্ষণিকভাবে পরামাণিক মাঝির দায়িত্ব পালন করে। মাঝির মৃত্যু হলে, তাঁর পুত্র বা ভাই মাঝি হয়। যদি এরূপ কোনো জ্ঞাতি না থাকে, তবে পরাণিক মাঝি হয়।

জগমাঝি: মাঝির নির্দেশে গ্রামের যুবক-যুবতীদের নিয়ন্ত্রণ করে জগমাছি। বিশেষ করে যুবক-যুবতীরা অনৈতিক কাজ করলে, তার শাস্তির বিধান দেন জগমাঝি। সোহরাই উৎসবে গ্রামের সকল কম বয়সী ছেলেমেয়েরা জগমাঝির বাড়িতে অবস্থান করে। এই সময় যুবক-যুবতীদের ভিতর কোনো অসমাজিক কাজ হলে, জগমাঝিকে সমাজের কাছে কৈফিয়ত দিতে হয়। জগমাঝি তার দায়িত্ব পালনে অসমর্থ হলে, তাকে মাঝির গোয়াল ঘরে বেধে রাখা হয়। উৎসবে জগমাঝি সঙ্গীত পরিচালকের ভূমিকা পালন করেন।

জগ পরাণিক: জগমাঝির সহকারী। জগমাঝির অবর্তমানে জগ পরাণিক তার দায়িত্ব পালন করেন।

গোডেত: মাঝির বার্তাবাহক এবং প্রচারক। মাঝির যে কোন আদেশ বা সংবাদ জানানো গোডেতের কাজ। অনেক সময় মাঝির নির্দেশে গোডেত, পুলিশের
মতো অপরাধীকে ধরে, মাঝির কাছে হাজির করে।

নায়কে: গ্রামের সকল ধরনের পূজার পৌরিহিত্য করেন।
কুডাম নায়কে: নায়কের সহকারী।

সাঁওতালদের বিবাহ ও পারিবারিক অবস্থা
সাঁওতাল সমাজে বাল্য বিবাহ এবং বহু বিবাহ নেই। বিধবা বা তালাকপ্রাপ্তাদের বিবাহের ব্যবস্থা আছে। এদের স্বগোত্রের ভিতর বিবাহ হয় না। সাধারণভাবে পিতামাতা বা অভিভাবকদের পছন্দে এবং অনুমোদনে বিবাহ হয়। তবে জোর করে বিবাহ করার রীতিও সাঁতাল সমাজে আছে। বিবাহ বহির্ভুত যৌন সম্পর্ক অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। বিবাহের প্রকৃতি অনুসারে, বিবাহ রীতিকে পাঁচ ভাগে ভাগ করা হয়। এগুলো হলো–

কিরিঞ বীহু বাপলা: বিবাহযোগ্য সন্তানের জন্য, পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের অনুমতি নিয়ে ঘটকের সাহায্যে এই বিবাহ হয়। সাঁওতালি ভাষায় ঘটককে বল হয় 'রায়বার'।
টুঙকি দিপিল বাপলা:  এই বিবাহ পিতা-মাতা বা অভিভাবকদের অনুমতি সাপেক্ষে হয়। তবে এক্ষেত্রে পাত্র-পাত্রীর পরিবার খুব দরিদ্র হলে এই বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই জাতীয় বিবাহে কোনো অনুষ্ঠান হয় না। পাত্রপক্ষ সাধ্যমতো কন্যাপণ দিয়ে বিবাহ করে। এই বিবাহে কনে বাড়িতে কোনো আয়োজন হয় না।
অর আদের বাপলা: হিন্দুদের রাক্ষস বিবাহের মতো। এক্ষেত্রে কন্যার অমতে জোর করে ধরে নিয়ে গিয়ে বিবাহ করা হয়।
ঞির বল বাপলা: পাত্র-পাত্রীর মধ্যে প্রণয় হলে এবং যদি পাত্রপক্ষ এই বিবাহে রাজি না থাকে, তাহলে মেয়েটি জগমাঝিকে জানায়। এরপর মেয়েটি জোর করে ছেলের বাড়িতে গিয়ে ঢুকে পড়ে। প্রথমাবস্থায় ছেলের বাড়ির লোকেরা মেয়েটিকে নানাভাবে অপমান করলেও যদি মেয়েটি নাছোড়অ বান্দার মতো থেকেই যায়, তখন জগমাঝি এদের বিবাহের ব্যবস্থা করে দেয়।
ইতুৎ সিঁদুর বাপলা: পাত্র-পাত্রীর মধ্যে প্রণয় হলে এবং যদি পাত্রীপক্ষ এই বিবাহে রাজি না থাকে, তাহলে ছেলেটি জোর করে মেয়েটির সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেয়। এর ফলে মেয়েটি ওই ছেলের বৌ হিসেবে স্বীকৃতি পায়। উল্লেখ্য কোনো ছেলে যদি ইচ্ছাপূর্বক কোনো মেয়ের সিঁথিতে সিঁদুর বা কোনো গুঁড়ো লাগিয়ে দেয়, তাহলেও তা বিবাহ হিসেবেও গণ্য হয়। সাঁওতালরা সিঁদুরের প্রদানের প্রথাকে গভীরভাবে মান্য করে। সাঁওতাল মেয়েরা সারা জীবনের জন্য একজন পুরুষের সিঁদুরকেই গ্রহণ করে। বিধবা বিবাহের পর, তারা নতুন স্বামীর সিঁদুর পরে না। যদি মেয়েটিকে ছেলেটি তালাকও দেও, তাহলেও ওই মেয়ের পরে বিবাহ হলে সিঁদুর পরে না।  উল্লেখ্য তালাকপ্রাপ্তা মেয়েকে বলা হয় 'ছাড়ুই'। ছাড়ুই হওয়া মেয়েকে সাঁওতাল সমাজের কেউ সম্মান করে না। এদের পরে বিবাহ হলে তাকে 'সাঙ্গা' বলে। সাঙ্গা বিবাহে কন্যাপণ কম লাগে।
কিরিঞ জাওয়ার বাপলা: এই জাতীয় বিবাহ সর্বসম্মতিতে হয়। তবে এক্ষেত্রে বরপণ দিতে হয়। এই জাতীয় বিবাহ সাঁওতাল সমাজে খুব কম দেখা যায়।
সাঁওতালদের মৃতদেহ সৎকার:
সাধারণত এরা মৃতদেহ দাহ করে। তবে অন্তঃসত্তা নারী এবং শিশুদের কবর দেওয়া হয়। কারো মৃত্যু হলে, গডেথ সেই সংবাদ গ্রামবাসীকে জানায়।  আত্মীয়রা মৃতদেহে তেল হলুদ মাখে এবং কপালে সিঁদুর দেয়। এরপর একটি খাটিয়া করে মৃতদেহকে চৌরাস্তায় এনে কিছুক্ষণ রাখা হয়। অশরীরী আত্মা যাতে মৃত্সৎকারে বাধা না দেয়, সে জন্য তারা তুলাবীজ ও খই ছিটায়।

শ্মশানের চিতায় মৃতদেহকে দক্ষিণ দিকে মাথা রেখে শোয়ানো হয়। এই সময় মুরগির বাচ্চা বলি দেওয়া হয়। এদের বিশ্বাস মুরগির বাচ্চার আত্মা মৃত ব্যক্তির আত্মাকে স্বর্গে নিয়ে যাবে। মুখাগ্নি করে পরিবারের বড় ছেলে। বড় ছেলে না থাকলে আত্মীয়দের ভিতরে কোনো একজন। মুখাগ্নির পরে পরিবারের সবাইও চিতায় আগুন দেয়। চিতাভস্ম কোনো গাছের নিচে পুঁতে রেখে স্নান করে শুদ্ধ হয়। পরবর্তী পাঁচদিন ধরে শ্রাদ্ধ হয়। একে বলা হয় 'তেল

ᱫᱟᱜ ᱞᱩ ᱜᱷᱟᱴ ᱨᱮ(Dah Lu Ghat Re SANTAIL STORIES )

Dah Lu Ghat Re

ᱮᱱ ᱦᱤᱞᱚᱜ ᱵᱮᱞᱟ ᱡᱟᱸᱦᱟᱱ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱵᱟᱝ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱ ᱛᱮ ᱱᱟᱢ ᱛᱮᱠᱚ ᱥᱮᱫ ᱫᱟᱬᱟ ᱵᱟᱲᱟ ᱤᱧ ᱥᱮᱱᱞᱮᱱᱟ᱾ ᱥᱮᱱ ᱠᱟᱛᱮᱧ ᱧᱮᱞᱠᱮᱫᱮᱭᱟ ᱱᱟᱢᱟᱨᱮᱱ ᱥᱟᱺᱡᱽᱞᱤ ᱵᱤᱴᱤ ᱯᱩᱛᱩᱞ ᱫᱚ ᱢᱤᱫᱴᱟᱹᱝ ᱪᱤᱴᱷᱤ ᱥᱟᱵ ᱠᱟᱛᱮᱭ ᱫᱩᱲᱩᱵ ᱦᱟᱹᱯᱤ ᱟᱠᱟᱱᱟᱭ᱾ ᱠᱩᱞᱤ ᱜᱚᱫ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟᱹᱧ ᱪᱮᱫ ᱪᱤᱴᱷᱤ ᱠᱟᱱᱟ ᱥᱟᱺᱡᱽᱞᱤ? ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱫᱩᱲᱩᱵ ᱛᱷᱤᱨᱮᱱᱟ? ᱢᱮᱛᱟᱫ ᱫᱤᱧᱟᱜ, ᱦᱮᱸ ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮ ᱫᱩᱲᱩᱵ ᱛᱷᱤᱨ ᱟᱠᱟᱱᱟᱹᱧ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱭᱟᱜ ᱱᱚᱶᱟ ᱪᱤᱴᱷᱤ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣ ᱠᱟᱛᱮ᱾ ᱠᱩᱞᱤ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟᱹᱧ ᱚᱠᱚᱭ ᱠᱟᱱᱟᱭ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤ ᱫᱚ, ᱪᱮᱫ ᱮ ᱚᱞ ᱟᱠᱟᱣᱟᱫ ᱢᱮᱭᱟ?
ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱛᱮᱞᱮ ᱫᱚ ᱢᱤᱫ ᱛᱮ ᱩᱥᱟᱜᱮᱨᱟᱢ ᱜᱟᱨᱞᱥ ᱦᱳᱥᱞᱮᱴ ᱨᱮᱞᱮ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱚᱞ ᱟᱠᱟᱣᱟᱹᱫᱤᱧᱟᱜ ᱡᱮ, ᱢᱚᱱ ᱚᱱᱛᱚᱨ ᱨᱮ ᱢᱤᱫᱴᱟᱹᱝ ᱡᱟᱭᱜᱟ ᱴᱷᱤᱠ ᱠᱟᱛᱮ ᱩᱥᱟᱹᱨᱟᱧ ᱵᱟᱰᱟᱭ ᱦᱚᱪᱚᱭ᱾ ᱵᱷᱟᱲᱟ ᱚᱲᱟᱜ ᱛᱟᱹᱱᱤᱡ ᱤᱧ ᱴᱷᱤᱠ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜ ᱠᱷᱟᱱ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱛᱟᱹᱠᱤᱱ ᱦᱮᱡ ᱠᱟᱛᱮ ᱠᱤᱱ ᱛᱟᱸᱦᱮᱱᱟ᱾ ᱚᱠᱚᱭ ᱠᱟᱱᱟᱭ ᱨᱩᱵᱤᱫᱟ ᱫᱚ?
ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮ ᱚᱱᱟ ᱜᱮᱧ ᱦᱩᱫᱤᱥ ᱮᱫᱟ ᱤᱧ ᱦᱚᱸ᱾ ᱨᱩᱵᱤᱫᱟ ᱟᱨ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱼᱭᱟᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱡᱚᱲᱟᱣ ᱫᱚ ᱟᱹᱰᱤ ᱦᱟᱦᱟᱲᱟ᱾ ᱛᱮᱦᱮᱧ ᱩᱱᱠᱤᱱ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱪᱮᱫ ᱤᱧ ᱪᱤᱠᱟᱹ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜᱼᱟ? ᱦᱳᱥᱴᱮᱞ ᱨᱮ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱ ᱨᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱡᱚᱛᱚ ᱠᱟᱛᱷᱟᱭ ᱞᱟᱹᱭᱟᱹᱧ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ, ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟ ᱯᱟᱨᱜᱟᱱᱟ ᱨᱮᱱ ᱥᱟᱫᱷᱮᱨ ᱦᱚᱯᱚᱱ ᱮᱨᱟ, ᱟᱹᱰᱤ ᱠᱟᱹᱴᱤᱡ ᱩᱢᱮᱨ ᱨᱮᱜᱮ ᱟᱡ ᱜᱚᱜᱚ ᱫᱚᱭ ᱴᱩᱣᱟᱹᱨ ᱦᱚᱴᱚ ᱟᱠᱟᱫᱮᱭᱟ᱾ ᱯᱟᱨᱜᱟᱱᱟ ᱫᱚ ᱜᱷᱟᱨᱚᱸᱡᱽ ᱪᱟᱞᱟᱣ ᱢᱩᱥᱠᱤᱞ ᱮ ᱵᱩᱡᱷᱟᱹᱣ ᱠᱮᱫ ᱛᱮ ᱫᱚᱥᱟᱨ ᱫᱷᱟᱣ ᱟᱨᱦᱚᱸ ᱮᱨᱟᱭ ᱧᱟᱢ ᱟᱱᱟ᱾ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱚᱜᱚ ᱛᱤᱨᱮᱭ ᱯᱟᱲᱟᱣᱮᱱᱟ᱾ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱚᱜᱚ ᱫᱚ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱜᱮ ᱫᱟᱜ ᱞᱩ ᱛᱷᱟᱹᱨᱤ ᱜᱟᱥᱟᱣ ᱮᱢᱟᱱ ᱡᱚᱛᱚᱭ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱦᱚᱪᱚᱭᱟ᱾ ᱢᱤᱫ ᱫᱤᱱ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱚᱜᱚ ᱫᱚ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱟᱜ ᱞᱩᱭ ᱠᱳᱞ ᱞᱮᱫᱮᱭᱟ᱾ ᱚᱱᱟ ᱞᱟᱦᱟ ᱨᱮ ᱤᱱᱫᱽᱨᱟᱹ ᱠᱩᱧ ᱠᱷᱚᱱ ᱫᱟᱜ ᱫᱚ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱛᱤᱥ ᱦᱚᱸ ᱵᱟᱭ ᱞᱩ ᱵᱟᱲᱟᱭᱮᱫ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱢᱤᱫ ᱴᱮᱱ ᱦᱚᱯᱚᱱ ᱠᱟᱸᱰᱩᱢ ᱮᱱᱛᱮ ᱠᱩᱧ ᱴᱷᱮᱱ ᱮ ᱥᱮᱱᱮᱱᱟ, ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱠᱩᱧ ᱠᱷᱚᱱ ᱫᱟᱜ ᱵᱟᱭ ᱨᱟᱠᱟᱵ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜ ᱠᱟᱱ ᱛᱮ ᱚᱸᱰᱮ ᱜᱮ ᱛᱤᱸᱜᱩ ᱠᱟᱛᱮ ᱠᱩᱥᱩᱫ ᱠᱩᱥᱩᱫ ᱨᱟ~ᱨᱟᱜ ᱮ ᱮᱦᱚᱵ ᱮᱱᱟ᱾ ᱩᱱ ᱚᱠᱛᱚ ᱩᱱᱠᱩᱨᱮᱱ ᱜᱩᱛᱤ ᱠᱚᱲᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱚᱱᱛᱮᱭ ᱥᱮᱱ ᱯᱟᱨᱚᱢᱚᱜ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱠᱩᱞᱤ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟᱭ ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱨᱟᱜ ᱮᱫᱟ? ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱨᱟᱜ ᱛᱩᱞᱩᱡ ᱮ ᱨᱚᱲ ᱨᱩᱣᱟᱹᱲ ᱠᱮᱫᱟ ᱼ ᱫᱟᱜ ᱵᱟᱹᱧ ᱨᱟᱠᱟᱵ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜ ᱠᱟᱱᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ᱾
ᱜᱩᱛᱤ ᱠᱚᱲᱟ ᱨᱩᱵᱤᱭ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ ᱼ “ᱟᱞᱚᱢ ᱨᱟᱜᱟ ᱫᱮᱱ ᱤᱧᱤᱧ ᱞᱩ ᱟᱢᱟ᱾ ᱟᱨ ᱟᱢ ᱜᱚᱜᱚ ᱫᱟᱜ ᱞᱩᱭ ᱠᱳᱞ ᱠᱟᱢ ᱠᱷᱟᱱ ᱤᱧ ᱦᱚᱦᱚᱣᱟᱹᱧ ᱢᱮ, ᱤᱧ~ᱤᱧ ᱞᱩ ᱨᱟᱠᱟᱵ ᱟᱢᱟ᱾ ” ᱩᱱ ᱦᱤᱞᱚᱜ ᱠᱷᱚᱱ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱭᱟᱜ ᱠᱟᱸᱰᱟ ᱨᱮ ᱫᱟᱜ ᱮ ᱞᱩ ᱯᱮᱨᱮᱡᱟ ᱟᱨ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚᱭ ᱤᱫᱤᱭᱟ᱾ ᱟᱨ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱟᱹᱰᱤ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱟᱲᱟᱝ ᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱥᱟᱶᱛᱮᱭ ᱜᱟᱞᱢᱟᱨᱟᱣᱟ᱾ ᱱᱚᱛᱮᱭ ᱵᱟᱰᱟᱭ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ ᱩᱱᱤ ᱜᱤᱫᱽᱨᱟᱹ ᱥᱚᱸᱜᱮ ᱢᱚᱡᱽ ᱵᱮᱵᱷᱟᱨ ᱞᱮᱠᱟᱱ ᱠᱚᱫᱚ ᱜᱷᱟᱨᱚᱸᱡᱽ ᱨᱮ ᱚᱠᱚᱭ ᱦᱚᱸ ᱵᱟᱠᱚ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱢᱤᱫ ᱵᱚᱪᱷᱚᱨ ᱛᱟᱭᱚᱢ ᱛᱮᱜᱮ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱚᱜᱚᱨᱮᱱ ᱢᱤᱫᱴᱟᱹᱝ ᱠᱚᱲᱟ ᱜᱤᱫᱽᱨᱟᱹᱭ ᱦᱩᱭ ᱮᱱᱟ᱾ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱼᱭᱟᱜ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱫᱚ ᱟᱹᱰᱤ ᱟᱸᱴ ᱵᱟᱹᱲᱛᱤ ᱤᱫᱤᱭᱮᱱᱟ᱾ ᱟᱹᱛᱩ ᱤᱥᱠᱩᱞ ᱨᱮᱭ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣᱜ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ; ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱧᱮᱞᱮᱱᱟ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱠᱚᱨᱮᱱᱟᱜ ᱵᱷᱤᱲ ᱤᱭᱟᱹ ᱛᱮ ᱫᱤᱱᱟᱹᱢ ᱦᱤᱞᱚᱜ ᱤᱥᱠᱩᱞ ᱫᱚ ᱵᱟᱭ ᱪᱟᱞᱟᱣ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜᱼᱟ᱾ ᱵᱚᱪᱷᱚᱨ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱢᱩᱪᱟᱹᱫ ᱵᱤᱱᱤᱰ ᱨᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱵᱟᱭ ᱯᱟᱥ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱫᱟ ᱴᱷᱟᱠᱮᱫ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱮᱱᱟᱭ᱾
ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟ ᱫᱚ ᱱᱚᱶᱟ ᱧᱮᱞ ᱠᱟᱛᱮ ᱟᱹᱰᱤ ᱦᱩᱫᱤᱥ ᱨᱮᱭ ᱯᱟᱲᱟᱣᱮᱱᱟ᱾ ᱪᱤᱠᱟᱹ ᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚᱭ ᱴᱷᱟᱠᱮᱫ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱮᱱᱟ? ᱢᱤᱫ ᱫᱤᱱ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱯᱟᱨᱜᱟᱱᱟᱭ ᱢᱮᱛᱟᱫ ᱮᱭᱟ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱢᱤᱫᱴᱟᱹᱝ ᱵᱳᱰᱤᱝ (ᱦᱳᱥᱴᱮᱞ) ᱛᱟᱱᱟᱜ ᱨᱮ ᱵᱷᱩᱨᱛᱤ ᱠᱟᱭ ᱢᱮ᱾ ᱚᱲᱟᱜ ᱨᱮᱫᱚ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱠᱚ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱵᱷᱤᱲ ᱛᱮ ᱵᱟᱭ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱜ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱟᱨ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱟᱯᱟᱛ ᱫᱚ ᱩᱥᱟᱜᱮᱨᱟᱢ ᱜᱟᱨᱞᱥ ᱦᱳᱥᱴᱮᱞ ᱛᱮ ᱤᱫᱤ ᱮ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱮ ᱜᱚᱴᱟ ᱠᱮᱫᱟ᱾ ᱱᱚᱶᱟ ᱠᱟᱛᱷᱟ ᱵᱟᱰᱟᱭ ᱠᱟᱛᱮ ᱮᱸᱜᱟᱛ ᱫᱚᱭ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ, “ᱵᱚᱦᱚᱜ ᱨᱮᱫᱚ ᱵᱟᱹᱱᱩᱜ ᱛᱟᱭᱟ, ᱠᱷᱚᱨᱚᱡᱽ ᱵᱟᱹᱰ ᱯᱷᱟᱨᱟᱠ ᱛᱮ ᱤᱫᱤ ᱠᱟᱛᱮ ᱫᱚ ᱪᱮᱫ ᱦᱩᱭᱩᱜᱼᱟ᱾ ᱠᱩᱲᱤ ᱜᱤᱫᱽᱨᱟᱹ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣ ᱠᱟᱛᱮ ᱵᱟᱝ ᱪᱮᱫ ᱮᱢ ᱪᱤᱠᱟᱹᱭ?” ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱟᱯᱟᱛ ᱫᱚᱭ ᱵᱟᱰᱟᱭᱟ, ᱠᱩᱲᱤ ᱜᱤᱫᱽᱨᱟᱹ ᱚᱞᱚᱜ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣ ᱪᱮᱫ ᱚᱪᱚ ᱠᱚ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱰᱷᱮᱨ ᱡᱟᱹᱨᱩᱲ ᱢᱮᱱᱟᱜᱼᱟ᱾ ᱮᱱᱛᱮ “ᱩᱱᱠᱩ ᱠᱟᱱ ᱜᱮᱠᱚ ᱛᱟᱭᱚᱢ ᱫᱟᱨᱟᱢ ᱢᱚᱡᱽ ᱜᱷᱟᱨᱚᱸᱡᱽ ᱵᱮᱱᱟᱣ ᱨᱟᱠᱟᱵ ᱠᱚᱫᱚ᱾” ᱟᱨ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱩᱥᱟᱜᱨᱟᱢ ᱜᱟᱨᱞᱥ ᱦᱳᱥᱴᱮᱞ ᱛᱮᱭ ᱤᱫᱤ ᱦᱚᱴᱚ ᱠᱟᱫᱮᱭᱟ᱾
ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱦᱟᱨᱟᱜ ᱠᱟᱱ ᱛᱩᱞᱩᱡ ᱚᱞᱚᱜ ᱯᱟᱲᱦᱟᱣᱜ ᱦᱚᱸ ᱪᱮ ᱡᱚᱝ ᱮ ᱮᱦᱚᱵ ᱠᱮᱫᱟ᱾ ᱴᱟᱠᱟ ᱯᱩᱭᱥᱟᱹ ᱤᱫᱤ ᱦᱚᱴᱚ ᱠᱟᱜ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱟᱨ ᱦᱤᱨᱤ ᱵᱟᱲᱟᱭ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱯᱟᱨᱜᱟᱱᱟ ᱫᱚ ᱨᱩᱵᱤ ᱜᱮᱭ ᱠᱳᱞ ᱟᱭᱟ᱾ ᱪᱷᱩᱴᱤ ᱠᱚᱨᱮ ᱦᱚᱸ ᱨᱩᱵᱤ ᱜᱮᱭ ᱤᱫᱤᱼᱟᱹᱜᱩ ᱮᱭᱟ᱾ ᱚᱱᱟᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱦᱚᱸ ᱟᱠᱚ ᱨᱮᱱ ᱜᱩᱛᱤ ᱨᱩᱵᱤ ᱜᱮ ᱟᱡᱟᱜ ᱡᱟᱹᱨᱩᱲᱚᱜ ᱠᱚᱫᱚ ᱥᱟᱱᱟᱢ ᱮ ᱞᱟᱹᱭ ᱟᱭᱟ᱾
ᱢᱤᱫ ᱫᱚᱢ ᱥᱤᱛᱩᱝ ᱪᱷᱩᱴᱤ ᱨᱮ ᱦᱳᱥᱴᱮᱞ ᱠᱷᱚᱱ ᱦᱤᱡᱩᱜ ᱚᱠᱛᱮ ᱦᱚᱨ ᱨᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱨᱩᱵᱤ ᱮ ᱠᱩᱞᱤ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟ, “ᱟᱪᱷᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ, ᱟᱞᱮ ᱴᱷᱮᱱ ᱟᱹᱰᱤ ᱟᱭᱢᱟ ᱫᱤᱱᱮᱢ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱠᱮᱫᱟ ᱟᱨ ᱵᱟᱹᱫ ᱠᱚᱦᱚᱸᱢ ᱠᱤᱨᱤᱧ ᱵᱟᱲᱟ ᱠᱮᱫᱟ᱾ ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱟᱫᱚ ᱵᱟᱢ ᱵᱟᱯᱞᱟᱜ ᱠᱟᱱᱟ? ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱱᱚᱶᱟ ᱠᱟᱛᱷᱟ ᱛᱮ ᱠᱚᱲᱟᱢ ᱨᱮ ᱥᱚᱵᱚᱜ ᱠᱮᱫᱮ ᱞᱮᱠᱟᱭ ᱵᱩᱡᱷᱟᱹᱣ ᱠᱮᱫᱟ ᱟᱨᱮ ᱛᱩᱸᱵᱩᱫ ᱦᱟᱹᱯᱤᱭᱮᱱᱟ ᱟᱨ ᱚᱱᱛᱚᱨ ᱨᱮᱱᱟᱜ ᱫᱩᱠ ᱡᱷᱟᱨᱱᱟ ᱫᱚ ᱢᱮᱫ ᱠᱷᱚᱱ ᱵᱚᱦᱮᱞ ᱚᱰᱚᱠ ᱮᱱᱟ᱾ ᱚᱱᱟ ᱧᱮᱞ ᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚᱭ ᱦᱟᱦᱟᱲᱟ ᱮᱱᱟ ᱟᱨ ᱮ ᱵᱚᱛᱚᱨ ᱮᱱᱟ, “ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱟᱪᱷᱟ ᱨᱟᱜ ᱮᱫ ᱠᱟᱱᱟᱭ? ᱠᱩᱞᱤ ᱮᱭᱟ ᱥᱮ ᱵᱟᱝ?” ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱵᱟᱭ ᱡᱤᱣᱤ ᱞᱮᱫᱟ, ᱠᱩᱞᱤ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟ, “ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱨᱟᱜ ᱮᱫᱟ?” ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱡᱟᱦᱟᱸ ᱞᱮᱠᱟᱛᱮ ᱢᱮᱫ ᱫᱟᱜ ᱥᱟᱸᱵᱽᱲᱟᱣ ᱠᱟᱛᱮᱭ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ, “ᱟᱢᱹᱹᱹ” ᱟᱨᱮ ᱛᱷᱤᱨ ᱮᱱᱟ᱾
“ᱤᱧᱹᱹᱹ ᱤᱧ ᱫᱚ ᱪᱮᱫ ᱨᱩᱵᱤᱫᱟ?”
ᱨᱩᱵᱤ ᱨᱚᱲ ᱮ ᱮᱦᱚᱵ ᱮᱱᱟ, “ᱟᱢ ᱫᱚ ᱯᱟᱥᱮᱱ ᱵᱟᱢ ᱫᱤᱥᱟᱹᱭᱟ ᱜᱤᱱᱤ, ᱟᱢ ᱵᱟᱵᱟ ᱛᱤᱱ ᱨᱮ ᱫᱚᱥᱟᱨ ᱫᱷᱟᱣ ᱵᱟᱯᱞᱟ ᱠᱟᱛᱮ ᱟᱢ ᱜᱚᱜᱚᱭ ᱟᱹᱜᱩ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟ, ᱚᱱᱟ ᱛᱟᱭᱚᱢ ᱠᱷᱚᱱ ᱵᱟᱯᱞᱟ ᱠᱟᱛᱮ ᱟᱢ ᱜᱚᱜᱚᱭ ᱟᱹᱜᱩ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟ, ᱚᱱᱟ ᱛᱟᱭᱚᱢ ᱠᱷᱚᱱ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱫᱟᱜ ᱤᱧ ᱞᱩ ᱟᱢ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ ᱟᱨ ᱟᱢᱟᱜ ᱫᱩᱠ ᱧᱮᱞ ᱛᱮ ᱤᱧ ᱜᱮ ᱢᱚᱱᱮ ᱨᱮ ᱫᱩᱠ ᱤᱧ ᱟᱴᱠᱟᱨᱮᱫ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱟᱢ ᱵᱟᱵᱟ ᱫᱚ ᱟᱹᱰᱤ ᱟᱸᱴ ᱮ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱢᱮ ᱤᱱᱟᱹ ᱛᱮ ᱟᱢ ᱡᱮᱢᱚᱱ ᱵᱮᱥ ᱛᱮᱢ ᱦᱟᱨᱟᱜ ᱟᱨ ᱜᱳᱜᱳᱼᱣᱟᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱮᱢ ᱧᱟᱢ, ᱚᱱᱟ ᱤᱭᱟᱹ ᱛᱮᱜᱮ ᱫᱚᱥᱟᱨ ᱟᱢ ᱜᱳᱜᱳᱭ ᱟᱹᱜᱩ ᱞᱮᱫᱮᱭᱟ᱾ ᱟᱢ ᱵᱟᱵᱟᱼᱣᱟᱜ ᱥᱟᱱᱟ ᱵᱟᱝ ᱯᱩᱨᱟᱹᱣ ᱞᱮᱱᱟ, ᱟᱨ ᱟᱢ ᱵᱟᱵᱟ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱠᱚ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱡᱷᱟᱢᱮᱞᱟ ᱨᱮ ᱛᱟᱸᱦᱮᱱ ᱤᱱᱟᱹ ᱛᱮ ᱟᱢ ᱴᱷᱮᱱ ᱫᱚ ᱤᱧ ᱜᱮᱭ ᱠᱳᱞ ᱤᱧᱟ᱾ ᱚᱱᱟ ᱠᱟᱨᱚᱱ ᱛᱮ ᱟᱢ ᱜᱳᱜᱳᱼᱣᱟᱜ ᱟᱹᱰᱤ ᱞᱮᱠᱟᱱ ᱵᱟᱹᱲᱤᱡ ᱨᱚᱲ ᱥᱟᱦᱟᱣ ᱦᱩᱭ ᱟᱠᱟᱫᱤᱧᱟ᱾ ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮ ᱜᱤᱱᱤ ᱤᱧ ᱫᱚ ᱟᱯᱮ ᱨᱮᱱ ᱜᱩᱛᱤ; ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱛᱮᱦᱮᱧ ᱫᱚ ᱱᱚᱶᱟ ᱫᱷᱟᱹᱨᱛᱤ ᱨᱮ ᱮᱠᱷᱮᱱ ᱟᱢ ᱜᱮᱧ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱟᱠᱟᱫ ᱢᱮᱭᱟᱹᱹᱹ ᱤᱧᱟᱜ ᱡᱤᱣᱤ ᱨᱮ ᱥᱩᱠ ᱫᱩᱠ ᱨᱮᱱ ᱜᱚᱲᱚᱼᱭᱤᱡ ᱢᱮᱱᱛᱮ᱾ ᱮᱠᱷᱮᱱ ᱢᱤᱫ ᱫᱷᱟᱣ ᱤᱧ ᱥᱮᱫ ᱵᱮᱥ ᱛᱮ ᱠᱚᱭᱚᱜᱽ ᱢᱮ ᱜᱤᱱᱤ ᱟᱨ ᱧᱮᱞᱤᱧ ᱢᱮ, ᱟᱫᱚᱢ ᱵᱩᱡᱷᱟᱹᱣᱟ ᱟᱢ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱤᱧ ᱫᱚ ᱛᱤᱱᱟᱹᱜ ᱫᱤᱱ ᱠᱷᱚᱱ ᱛᱟᱺᱜᱤ ᱨᱮ ᱢᱤᱱᱟᱹᱧᱟ᱾
ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱢᱚᱱᱮ ᱨᱮᱭ ᱦᱩᱫᱤᱥ ᱠᱮᱫᱟ ᱪᱮᱫ ᱤᱧ ᱧᱮᱞᱟ ᱵᱮᱥᱛᱮ? ᱠᱚᱭᱚᱜ ᱨᱟᱠᱟᱵ ᱠᱮᱫᱟᱭ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱥᱮᱫ ᱟᱨ ᱧᱮᱞ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟᱭ ᱪᱚᱴ ᱠᱷᱚᱱ ᱯᱷᱮᱰ ᱦᱟᱹᱵᱤᱡ᱾ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱵᱚᱦᱚᱜ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱰᱷᱮᱨ ᱩᱵ ᱫᱚ ᱧᱩᱨ ᱟᱠᱟᱱ ᱛᱮ ᱛᱟᱞᱟ ᱵᱚᱦᱚᱜ ᱫᱚ ᱠᱷᱟᱹᱨᱟᱹᱭ ᱞᱮᱠᱟ ᱧᱮᱞᱚᱜ ᱠᱟᱱ ᱟᱨ ᱛᱤᱱᱟᱹᱜ ᱥᱟᱨᱮᱡ ᱢᱮᱱᱟᱜ ᱫᱚ ᱦᱮᱸᱫᱮ ᱟᱨ ᱯᱟᱺᱰᱩ ᱢᱮᱥᱟ᱾ ᱟᱨ ᱢᱮᱫ ᱟᱦᱟ ᱦᱚᱸ ᱞᱟᱦᱟ ᱠᱷᱚᱱ ᱰᱷᱮᱨ ᱯᱷᱮᱨᱟᱣᱹᱹᱹ ᱱᱚᱶᱟ ᱫᱚ ᱪᱮᱫ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱪᱤᱱᱦᱟᱹ? ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟᱼᱣᱟᱜ ᱫᱚ ᱱᱤᱛᱚᱜ ᱩᱢᱮᱨ ᱦᱩᱭᱩᱜ ᱠᱟᱱᱟ?
ᱟᱡ ᱥᱮᱫ ᱵᱮᱸᱜᱮᱫ ᱦᱟᱹᱯᱤ ᱠᱟᱫ ᱧᱮᱞ ᱛᱮ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚᱭ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ᱾ “ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮ ᱜᱤᱱᱤ ᱦᱟᱲᱟᱢᱚᱜ ᱠᱟᱹᱱᱟᱹᱧ ᱟᱨ ᱯᱩᱥᱴᱟᱹᱣ ᱛᱮᱧ ᱫᱤᱥᱟᱹ ᱮᱫᱟ ᱟᱢ ᱫᱚ ᱱᱤᱛ ᱫᱚ ᱮᱠᱷᱮᱱ ᱜᱮᱞ ᱢᱚᱬᱮ ᱥᱮᱨᱢᱟ ᱮᱢ ᱞᱮᱵᱮᱫ ᱟᱠᱟᱫᱟ᱾” ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱭᱟᱜ ᱢᱮᱫ, ᱢᱮᱫ ᱫᱟᱜ ᱛᱮ ᱯᱮᱨᱮᱡ ᱮᱱᱟ, ᱫᱷᱟᱹᱨᱛᱤ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱱᱚᱠᱥᱟ ᱢᱮᱫ ᱠᱷᱚᱱ ᱫᱟᱱᱟᱝ ᱮᱱᱟ, ᱚᱱᱛᱚᱨ ᱨᱮᱭ ᱧᱮᱞ ᱠᱮᱫᱮᱭᱟ ᱰᱷᱮᱨ ᱫᱤᱱ ᱞᱟᱦᱟ ᱨᱮᱱ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ᱾
ᱵᱟᱹᱭᱼᱵᱟᱹᱭ ᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤᱼᱭᱟᱜ ᱥᱤᱛᱩᱝ ᱪᱷᱩᱴᱤ ᱦᱚᱸ ᱯᱟᱨᱚᱢ ᱪᱟᱞᱟᱜ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱟᱪᱠᱟ ᱜᱮ ᱢᱤᱫ ᱫᱤᱱ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱳᱜᱳ ᱫᱚ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱮ ᱢᱮᱛᱟᱫ ᱫᱮᱭᱟ᱾ “ᱦᱮᱸᱫᱟ ᱵᱤᱴᱤ, ᱠᱤᱪᱨᱤᱡ ᱠᱚ ᱥᱟᱯᱷᱟ ᱵᱟᱲᱟᱠᱟᱜ ᱟᱢ, ᱜᱟᱯᱟ ᱱᱷᱟᱜ ᱟᱢ ᱧᱮᱞ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱯᱮᱲᱟ ᱠᱚ ᱦᱤᱡᱩᱜᱼᱟ᱾” ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱚᱲᱟᱜ ᱛᱮᱭ ᱵᱚᱞᱚ ᱮᱱᱟ ᱟᱨ ᱫᱤᱥᱟᱹ ᱦᱮᱡ ᱟᱫᱮᱭᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱟᱜ ᱠᱟᱛᱷᱟ᱾ ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮᱹᱹᱹ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱟᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲᱹᱹᱹ ᱟᱨ ᱢᱤᱫ ᱥᱮᱫ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟᱼᱣᱟᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱣ᱾ ᱨᱩᱵᱤ ᱥᱟᱶ ᱮ ᱵᱟᱯᱞᱟ ᱞᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟ ᱵᱮ ᱦᱤᱥᱟᱹᱵᱽ ᱫᱩᱠ ᱮ ᱧᱟᱢᱟ ᱟᱨ ᱥᱟᱱᱟᱢ ᱢᱟᱹᱱ ᱢᱚᱨᱡᱟᱫᱟ ᱪᱟᱵᱟᱜ ᱛᱟᱭᱟ᱾ ᱵᱟᱝᱹᱹᱹ ᱵᱟᱝ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟᱼᱣᱟᱜ ᱠᱟᱛᱷᱟ ᱛᱮᱜᱮᱭ ᱥᱮᱱᱚᱜᱼᱟ᱾ ᱠᱤᱪᱨᱤᱡ ᱠᱚ ᱥᱚᱵᱚᱫ ᱥᱟᱯᱷᱟ ᱵᱟᱲᱟ ᱠᱟᱛᱮ ᱟᱡ ᱦᱚᱸᱭ ᱰᱟᱹᱵᱽᱨᱟᱹ ᱥᱟᱯᱷᱟ ᱮᱱᱟᱭ᱾ ᱟᱡ ᱜᱚᱴᱟ ᱫᱤᱱ ᱵᱩᱜᱤ ᱛᱮᱭ ᱠᱟᱹᱢᱤ ᱵᱟᱲᱟ ᱠᱮᱫᱟ᱾ ᱚᱱᱟ ᱧᱮᱞ ᱛᱮ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟ ᱫᱚ ᱟᱹᱰᱤ ᱟᱸᱴ ᱮ ᱠᱩᱥᱤ ᱮᱱᱟ᱾
ᱟᱹᱭᱩᱵ ᱵᱮᱲᱟ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱠᱟᱸᱰᱟ ᱥᱟᱵ ᱠᱟᱛᱮ ᱩᱥᱟᱹᱨᱟ ᱛᱮᱭ ᱪᱟᱞᱟᱣ ᱮᱱᱟ ᱠᱩᱧ ᱫᱟᱜ ᱞᱩ᱾ ᱠᱩᱧ ᱴᱷᱮᱱ ᱠᱟᱸᱰᱟ ᱫᱚᱦᱚ ᱠᱟᱛᱮ ᱵᱟᱹᱞᱴᱤ ᱨᱮ ᱵᱟᱵᱮᱨ ᱛᱚᱛᱚᱞ ᱮ ᱫᱷᱩᱨᱟᱹᱣ ᱮᱱᱟ᱾ ᱪᱮᱠᱟ ᱪᱚᱭ ᱫᱤᱥᱟᱹ ᱜᱚᱫ ᱠᱮᱫᱟᱭ ᱟᱡ ᱠᱟᱹᱴᱤᱡ ᱮ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱ ᱨᱮ ᱫᱤᱱᱟᱹᱢ ᱜᱮ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱫᱟᱜ ᱮ ᱞᱩ ᱟᱭ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱫᱤᱥᱟᱹ ᱠᱮᱫᱟᱭ ᱟᱡ ᱵᱟᱵᱟᱭ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱟᱫᱮ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱨᱮᱦᱚᱸ ᱚᱠᱛᱮ ᱵᱮᱜᱚᱨ ᱛᱮ ᱢᱤᱫ ᱛᱟᱞᱟᱣ ᱫᱚ ᱵᱟᱭ ᱧᱮᱞ ᱫᱟᱲᱮᱭᱟᱭ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ ᱟᱨ ᱠᱟᱹᱠᱤ ᱜᱳᱜᱳᱼᱣᱟᱜ ᱥᱟᱱᱛᱟᱣ᱾ ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ, ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱵᱟᱹᱞᱴᱤ ᱟᱲᱟᱜ ᱜᱤᱰᱤ ᱠᱟᱛᱮ ᱨᱟ~ᱨᱟᱜ ᱮ ᱫᱷᱩᱨᱟᱹᱣ ᱮᱱᱟ᱾
“ᱜᱤᱱᱤ ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱨᱟᱜ ᱮᱫᱟ? ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱟᱜ ᱟᱲᱟᱝ ᱟᱸᱡᱚᱢ ᱛᱮ ᱟᱪᱠᱟ ᱜᱮ ᱨᱟᱜ ᱮ ᱥᱟᱹᱨᱫᱤ ᱠᱮᱫᱟ᱾ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱚ ᱵᱟᱹᱞᱴᱤ ᱥᱟᱵ ᱠᱟᱛᱮ ᱠᱟᱸᱰᱟ ᱫᱚᱭ ᱞᱩ ᱯᱮᱨᱮᱡ ᱠᱮᱫ ᱛᱟᱭᱟ, ᱚᱱᱟ ᱧᱮᱞ ᱛᱮ ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱮ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ, ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱯᱮᱨᱮᱡ ᱠᱮᱫᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ; ᱦᱚᱲ ᱫᱚ ᱪᱮᱫ ᱠᱚ ᱦᱩᱫᱤᱥᱟ?”
“ᱡᱟᱦᱟᱸᱱᱟᱜ ᱜᱮᱠᱚ ᱦᱩᱫᱤᱥ ᱩᱱᱟᱹᱜ ᱫᱤᱱᱤᱧ ᱞᱩ ᱟᱢ ᱠᱟᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ, ᱛᱮᱦᱮᱧ ᱢᱤᱫ ᱫᱤᱱ ᱞᱩ ᱠᱟᱛᱮ ᱫᱚ ᱪᱤᱠᱟᱹᱜ?” ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱟᱢ ᱫᱚ ᱪᱮᱫᱟᱜ ᱮᱢ ᱨᱟᱜ ᱮᱫᱟ ᱢᱟᱥᱮ ᱞᱟᱹᱭᱟᱹᱧ ᱢᱮ᱾”
ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱮ ᱢᱮᱱ ᱠᱮᱫᱟ, “ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱮᱠᱷᱮᱱ ᱠᱟᱸᱰᱟ ᱫᱚ ᱫᱟᱜ ᱛᱮ ᱵᱟᱢ ᱯᱮᱨᱮᱡ ᱮᱫ ᱛᱤᱧ ᱛᱟᱸᱦᱮᱱᱟ, ᱢᱮᱱᱠᱷᱟᱱ ᱱᱤᱛ ᱤᱧ ᱵᱩᱡᱷᱟᱹᱣ ᱮᱫᱟ ᱤᱧ ᱵᱮᱜᱚᱨ ᱵᱟᱰᱟᱭ ᱛᱮᱜᱮ ᱵᱟᱵᱟ ᱟᱨ ᱜᱳᱜᱳ ᱯᱷᱟᱨᱟᱠ ᱠᱤᱱ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱ ᱨᱮᱦᱚᱸ ᱟᱢ ᱫᱚ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱤᱧ ᱥᱩᱨ ᱨᱮ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱛᱮ ᱟᱢᱟᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱛᱮ ᱤᱧᱟᱜ ᱠᱷᱟᱹᱞᱤ ᱚᱱᱛᱚᱨ ᱮᱢ ᱫᱩᱞ ᱯᱮᱨᱮᱡ ᱟᱠᱟᱫᱟ᱾ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱤᱧᱟᱜ ᱥᱩᱠ ᱫᱩᱠ ᱵᱟᱰᱟᱭ ᱞᱟᱹᱜᱤᱫ ᱛᱤᱱᱟᱹᱜ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱟᱲᱟᱝ ᱛᱮᱢ ᱠᱩᱞᱤᱭᱤᱧ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱᱟ ᱨᱩᱵᱤ ᱫᱟ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱨᱮᱭᱟᱜ ᱩᱢᱮᱨ ᱫᱚ ᱵᱟᱹᱱᱩᱜᱼᱟ᱾ ᱱᱤᱛ ᱱᱚᱶᱟ ᱫᱟᱜ ᱞᱩ ᱜᱷᱟᱴ ᱨᱮ ᱠᱩᱧ ᱥᱟᱹᱠᱷᱤ ᱫᱚᱦᱚ ᱠᱟᱛᱮᱧ ᱢᱮᱛᱟᱢ ᱠᱟᱱᱟ᱾ ᱥᱩᱠ ᱫᱩᱠ ᱨᱮ ᱡᱟᱣ ᱜᱮ ᱤᱧ ᱫᱚ ᱟᱢ ᱨᱮᱱ ᱜᱮᱧ ᱛᱟᱦᱮᱸᱱᱟ᱾”
“ᱦᱮᱸᱫᱟ, ᱥᱟᱺᱡᱽᱞᱤ, ᱥᱚᱦᱟᱜᱤᱱᱤ ᱫᱚ ᱪᱮᱠᱟᱛᱮ ᱩᱱᱤ ᱦᱟᱲᱟᱢ ᱫᱚᱭ ᱠᱩᱥᱤᱭᱟᱭ ᱠᱟᱱᱟ?” ᱚᱱᱟᱜᱮᱧ ᱦᱩᱫᱤᱥ ᱮᱫᱟ᱾ ᱱᱚᱶᱟ ᱠᱟᱛᱷᱟ ᱢᱮᱛᱟᱫ ᱮ ᱛᱟᱦᱮᱸ ᱠᱟᱱ ᱨᱮᱭ ᱢᱮᱛᱟᱫ ᱫᱤᱧᱟ “ᱟᱯᱮ ᱫᱚ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱵᱟᱯᱮ ᱵᱟᱰᱟᱭᱟ᱾ ᱚᱱᱟᱛᱮ ᱥᱚᱢᱟᱡᱽ ᱨᱮᱱ ᱟᱨ ᱟᱯᱮ ᱟᱲᱮ ᱯᱟᱥᱮ ᱨᱮᱱ ᱫᱩᱞᱟᱹᱲ ᱫᱚ ᱪᱮᱫᱽ ᱯᱮ᱾” ᱥᱟᱹᱨᱤ ᱜᱮ ᱟᱹᱰᱤ ᱦᱟᱦᱟᱲᱟ᱾

दाक् लु घाट रे (Dah Lu Ghat Re SANTAIL STORIES )

Dah Lu Ghat Re

एन हिलोक् बेला जाँहान का़मी बाङ ताहें कान ते नाम तेको सेद् दाणा बाड़ा इञ सेन लेना। सेन कातेञ ञेल केदेया नामारेन साँ़जली बिटी पुतूल दो मिद्टा़ङ चिठी साब् कातेय दुड़ूब् हा़पी आकानाय। कुली गोद् केदेया़ञ चेद् चिठी काना साँ़जली? चेदाक् एम दुड़ूब् थिर एना? मेताद् दि़ञाय, हें सा़री गे दुड़ूब् थिर आकाना़ञ सोहागिनीयाक् नोवा चिठी पाड़हाव काते। कुली केदेया़ञ ओकोय कानाय सोहागिनी दो, चेद् ए ओल आकावाद् मेया?
सोहागिनी तेले दो मिद् ते उसाग्राम गर्ल्स हॉस्टेल रेले ताहें काना। ओल आकावा़दिञाय जे, मोन ओनतोर रे मिद्टा़ङ जायगा ठिक काते उसा़राञ बाडाय होचोय। भाड़ा ओड़ाक् जा़निज् इञ ठिक दाड़ेयाक् खान रूबी दा तिकिन हेज् काते किन ताँहेना। ओकाय कानाय रूबी दा दो?
सा़री गे ओना गेञ हुदिस एदा इञ हों। रूबी दा आर सोहागिनी-याक् दुला़ड़ रेयाक् जोड़ाव दो आ़डि हाहाड़ा। तेहेञ उनकिन ला़गिद् चेद् इञ चिका़ दाड़ेयाक्-आ? हॉस्टेल रे ताहें कान रे सोहागिनी जाव गे जोतो काथाय ला़या़ञ कान ताहें काना, सोहागिनी दो आज् बाबा पारगाना रेन साधेर होपोन एरा, आ़डि का़टिज् उमेर रेगे आज् गोगो दोय टुवा़र होटो आकादेया। पारगाना दो घारोंज चालाव मुसकिल ए बुझा़व केद् ते दोसार धाव आरहों एराय ञाम आना। सोहागिनी दो का़की गोगो तिरेय पाड़ावेना। का़की गोगो दो सोहागिनी गे दाक् लु था़री गासाव एमान जोतोय का़मी होचोया। मिद् दिन का़की गोगो दो सोहागिनी दाक् लु ए कुल लेदेया। ओना लाहा रे इंदरा़ कुञ खोन दाक् दो सोहागिनी तिस हों बाय लु बाड़ायेद् ताहें काना। मिद् टेन होपोन का़ँडुम एनते कुञ ठेन ए सेनेना, मेनखान कुञ खोन दाक् बाय राकाब् दाड़ेयाक् कान ते ओंडे के तिंगु काते कुसुद्-कुसुद् रा-राक् ए एहोब् एना। उन ओक्तो उनकु रेन गुती कोड़ा रूबी दो ओनतेय सेन पारोमोक् कान ताहें काना। कुली केदेयाय चेदाक् एम राक् एदा? सोहागिनी दो राक् तुलूज् ए रोड़ रूवा़ड़ केदा – दाक् बा़ञ राकाब् दाड़ेयाक् काना रूबी दा।
गुति कोड़ा रूबी-ए मेन केदा – ‘‘आलोम रागा देन इञीञ लु आमा। आर आम गोगो दाक् लुय कुल काम खान इञ होहोवा़ञ मे, इञीञ लु राकाब् आमा।’’ उन हिलोक् खोन जाव गे रूबी दो सोहागिनी-याक् काँडा रे दाक् ए लु पेरेजा आर सोहागिनी दोय इदिया। आर रूबी दो आ़डि दुला़ड़ आड़ाङ ते सोहागिनी साँव तेय गालमारावा। नोतेय बाडाय कान ताहें काना उनि गिदरा़ सोंगे मोज बेभार लेकान कोदो घारोंज रे ओकोय हों बाको ताहें काना। मिद् बोछोर तायोम तेगे का़की गोगो रेन मिद्टा़ङ कोड़ा गिदरा़य हुय एना। सोहागिनी-याक् का़मी दो आ़डि आँट बा़ड़ती इदियेना। आ़तु स्कूल रेय पाड़हावक् कान ताहें काना; मेनखान ञेल एना का़मी कोरेनाक् भीड़ इया़ ते दिना़म हिलोक् स्कूल दो बाय चालाव दाड़ेयाक्-आ। बोछोर रेयाक् मुचा़द् बिनिड रे सोहागिनी दो बाय पास दाड़ेयाद्-आ, ठाकेद् ताहें एनाय।
सोहागिनी आज् बाबा दो नोवा ञेल काते आ़डि हुदिस रेय पाड़ावेना। चिका़ ते सोहागिनी दोय ठाकेद् ताहें एना? मिद् दिन रूबी दो पारगाना ए मेताद् एया ‘‘सोहागिनी दो मिद्टा़ङ बोर्डिंग (हॉस्टेल) तानाक् रे भुरती काय मे। ओड़ाक् रेदो का़मी को रेयाक् भीड़ ते बाय पाड़हाव दाड़ेयाक् काना।’’ आर सोहागिनी आपात दो उसाग्राम गर्ल्स हॉस्टेल ते इदि ए ला़गिद् ए गोटा केदा। नोवा काथा बाडाय काते एँगात दोय मेन केदा, ‘‘बोहोक् रेदो बा़नुक् ताया, खोरोज बा़ड फाराक ते इदि काते दो चेद् हुयूक्-आ। कुड़ी गिदरा़ पाड़हाव काते बाङ चेद् एम चिका़य?’’ मेनखान सोहागिनी आपात दोय बाडाया, कुड़ी गिदरा़ ओलोक् पाड़हाव चेद् ओचो को रेयाक् ढेर जा़रूड़ मेनाक्-आ। एनते, उनकु कान गेको तायोम दाराम मोज घारोंज बेनाव राकाब् कोदो। आर सोहागिनी दो उसाग्राम गर्ल्स हॉस्टेल तेय इदि होटो कादेया।
सोहागिनी दो हाराक् कान तुलूज् ओलोक् पाड़हावक् हों चे जोङ ए एहोब् केदा। टाका पुयसा़ इदि होटो काक् ला़गिद् आर हिरी बाड़ाय ला़गिद् पारगाना दो रूबी गेय कोल आया। छुटी कोरे हों रूबी गेय इदि-आ़गु एया। ओनाते सोहागिनी हों आको रेन गुति रूबी गे आजाक् जा़रूड़ोक् कोदो सानाम ए ला़य आया।
मिद् दोम सितुङ छुटी रे हॉस्टेल खोन हिजुक् ओक्तो होर रे सोहागिनी दो रूबी ए कुली केदेया, ‘‘आछा रूबी दा, आले ठेन आ़डि आयमा दिनेम का़मी केदा आर बा़द् कोहोंम किरिञ बाड़ा केदा। चेदाक् आदो बाम बापलाक् काना?’’ रूबी दो नोवा काथा ते कोड़ाम रे सोबोक् केदे लेकाय बुझा़व केदा आरे तुँबुद् हा़पियेना आर ओनतोर रेनाक् दुक झारना दो मेद् खोन बोहेल ओडोक एना। ओना ञेल ते सोहागिनी दोय हाहाड़ा एना आर ए बोतोर एना, ‘‘रूबी दा आछा राक् एद् कानाय? कुली एया से बाङ?’’ सोहागिनी बाय जिवी लेदा, कुली केदेयाय, ‘‘रूबी दा चेदाक् एम राक् एदा?’’ रूबी दा जाहाँ लेकाते मेद् दाक् साँबड़ाव कातेय मेन केदा, ‘‘आम…’’ आरे थिर एना।
‘‘इञ… इञ दो चेद् रूबी दा?’’
रूबी रोड़ ए एहोब् एना, आम दो पासेन बाम दिसा़या गिनी, आम बाबा तिन रे दोसार धाव बापला काते आम गोगोय आ़गु केदेया, ओना तायोम खोन बापला काते आम गोगोय आ़गु केदेया, ओना तायोम खोन जाव गे दाक् इञ लु आम कान ताहें काना आर आमाक् दुक ञेल ते इञ गे मोने रे दुक इञ आटकारेद् ताहें काना। आम बाबा दो आ़डि आँट ए दुला़ड़ मे इना़ ते आम जेमोन बेस तेम हाराक् आर गोगोवाक् दुला़ड़-एम ञाम, ओना इया़ तेगे दोसार आम गोगोय आ़गु लेदेया। आम बाबावाक् साना बाङ पुरा़व लेना, आर आम बाबा जाव गे का़मी को रेयाक् झामेला रे ताँहेन इना़ ते आम ठेन दो इञ गेय कुल इञा। ओना कारोन ते आम गोगोवाक् आ़डि लेकान बा़ड़िज् रोड़ साहाव हुय आकादिञा। सा़री गे गिनी इञ दो आपे रेन गुती; मेनखान तेहेञ दो नोवा धा़रती रे एखेन आम गेञ दुला़ड़ आकाद् मेया… इञाक् जिवी रे सुक दुक रेन गोड़ोयिज् मेनते। एखेन मिद् धाव इञ सेद् बेस ते कोयोग मे गिनी आर ञेलिञ मे, आदोम बुझा़वा आम ला़गिद् इञ दो तिना़क् दिन खोन ता़ँगी रे मिना़ञा।
सोहागिनी दो मोने रेय हुदिस केदा चेद् इञ ञेला बेस ते? कोयोक् राकाब् केदाय रूबी दा सेद् आर ञेल केदेयाय चोट खोन फेट हा़बिज्। रूबी दो बोहोक् रेयाक् ढेर उब् दो ञुर आकान ते ताला बोहोक् दो खा़रा़य लेका ञेलोक् कान आर तिना़क् सारेज् मेनाक् दो हेंदे आर पा़ँडु मेसा आर मेद् आहा हों लाहा खोन ढेर फेराव… नोवा दो चेद् रेयाक् चिनहा़? रूबी दा-वाक् दो नितोक् उमेर हुयुक् काना?
आज् सेद् बेंगेद् हा़पी काद् ञेल ते रूबी दोय मेन केदा। ‘‘सा़री गे गिनी हाड़ामोक् का़ना़ञ आर पुसटा़व तेञ दिसा़ एदा आम दो नित दो एखेन गेल मोणे सेरमा एम लेबेद् आकादा।’’ सोहागिनीयाक् मेद्, मेद् दाक् ते पेरेज् एना, धा़रती रेयाक् नोकसा मेद् खोन दानाङ एना, ओनतोर रेय ञेल केदेया ढेर दिन लाहा रेन रूबी दा।
बा़य-बा़य ते सोहागिनीयाक् सितुङ छुटी हों पारोम चालाक् काना। आचका गे मिद् दिन का़की गोगो दो सोहागिनी ए मेताद् देया। ‘‘हेंदा बिटी, किचरिज् को साफा बाड़ा काक् आम, गापा न्हाक् आम ञेल ला़गिद् पेड़ा को हिजुक्-आ।’’ सोहागिनी दो ओड़ाक् तेय बोलो एना आर दिसा़ हेज् आदेया रूबी दा आक् काथा। सा़री गे… रूबी दा हाक् दुला़ड़… आर मिद् सेद् आज् बाबा-वाक् दुला़ड़। रूबी साँव ए बापला लेनखान आज् बाबा बे हिसा़ब दुक ए ञामा आर सानाम मा़न मोरयादा चाबाक् ताया। बाङ… बाङ आज् बाबावाक् काथा तेगेय सेनोक्-आ। किचरिज् को सोबोद् साफा बाड़ा काते आज् होंय डा़बरा़ साफा एनाय। आज् गोटा दिन बुगी तेय का़मी बाड़ा केदा। ओना ञेल ते आज् बाबा दो आ़डि आँट ए कुसी एना।
आ़युब् बेड़ा सोहागिनी दो काँडा साब् काते उसा़रा तेय चालाव एना कुञ दाक् लु। कुञ ठेन काँडा दोहो काते बा़लटी रे बाबेर तोतोल ए धुरा़व एना। चेका चोय दिसा़ गोद् केदाय आज् का़टिज् ए ताहें कान रे दिना़म गे रूबी दा दाक् ए लु आय कान ताहें काना। दिसा़ केदाय आज् बाबाय दुला़ड़ आदे कान ताहें रेहों ओक्ते बेगोर ते मिद् तालाव दो बाय ञेल दाड़ेयाय कान ताहें काना आर का़की गोगोवाक् सानताव। मेनखान रूबी दा, सोहागिनी दो बालटी आड़ाक् गिडी काते रा-राक् ए धुरा़व एना।
गिनी चेदाक् एम राक् एदा? रूबी दा आक् आड़ाङ आँजोम ते आचका गे राक् ए सा़रदी केदा। रूबी दो बालटी साब् काते काँडा दोय लु पेरेज् केद् ताया, ओना ञेल ते सोहागिनी ए मेन केदा, चेदाक् एम पेरेज् केदा रूबी दा; होड़ दो चेद् को हुदिसा?’’
‘‘जाँहानाक् गेको हुदिस उना़क् दिनिञ लु आम कान ताहें काना, तेहेञ मिद् दिन लु काते चिका़क्?’’ मेनखान आम दो चेदाक् एम राक् एदा मासे ला़या़ञ मे।’’
सोहागिनी ए मेन केदा, ‘‘रूबी दा एखेन काँडा दो दाक् ते बाम पेरेज् एद् तिन ताँहेना, मेनखान नित इञ बुझा़व एदा इञ बेगोर बाडाय तेगे बाबा आर गोगो फाराक किन ताहें कान रेहों आम दो जाव गे इञ सुर रे ताहें काते आमाक् दुला़ड़ ते इञाक् खा़ली ओनतोर एम दुल पेरेज् आकादा। जाव गे इञाक् सुक दुक बाडाय ला़गिद् तिना़क् दुला़ड़ आड़ाङ तेम कुलीयिञ ताहें काना रूबी दा, दुला़ड़ रेयाक् उमेर दो बा़नुक्-आ। नित नोवा दाक् लु घाट रे कुञ सा़खी दोहो कातेञ मेताम काना। सुक दुक रे जाव गे इञ दो आम रेन गेञ ताँहेना।’’
‘‘हेंदा, सा़ँजली, सोहागिनी दो चेकाते उनि हाड़ाम दोय कुसीयाय काना?’’ ओनागेञ हुदिस एदा। नोवा काथा मेताद् ए ताहें कान रेय मेताद् दिञा ‘‘आपे दो दुला़ड़ बापे बाडाया। ओनाते सोमाज रेन आर आपे आड़े पासे रेन दुला़ड़ चेद पे।’’ सा़री गे आ़डि हाहाड़ा।

Wednesday 25 July 2018

সান্তাড়ী জি.কে (Santali G.K)


১।সান্তাড় কওয়াঃ পারিস দ তিনাঃ গটাং আ ?
উঃ ১২ গটাং।
২। সান্তাড় ভাষা দ অকা ভাষা গোষ্ঠী রেনাঃ ভাষা কানা ?
উঃ ইন্ডিজেনাস ভাষা গোষ্ঠী রেনাঃ ভাষা কানা।
৩। সান্তাড়ী লিপি রেনাঃ ঞুতুম দ চেৎ ?
উঃ অল চিকি।
৪। অল গুরু দ অকয় ব মেতায়া ?
উঃ পন্ডিৎ রঘুনাথ মুর্মু ।
৫। অল চিকি দ অকয়ে আবিষ্কার আকাৎ আ ?
উঃ অল গুরু পন্ডিত রঘুনথ মুর্মু।
৬। অলচিকি দ তিনাঃ গটাং আ ?
উঃ ৩৫ গটাং আ।
৭। কবি গুরু দ অকয় ব মেতাঃআ ?
উঃ সাধু রামচাঁদ মুর্মু ।
৮। জাহের রেদ চেৎ দারে বুটা রে ব বঙ্গায়া ।
উঃ সারজম দারে বুটারে ।
৯। সান্তাড়ী তে মাহা দ তিনাঃ আ ?
উঃ ৭ গটাৎ আ।
১০। সান্তাড়ী তে পোয়ল চাঁদো রেয়াঃ ঞুতুম দ চেৎ?
উঃ মাঘ।
১১।গট সিম দ অকা পরব রে ব বঙ্গা কওয়া ?
উঃ সহরার।
১২। আযোদিয়া বুরু দ দিসুওয়া তিস ক সেঁদরায়া ?
উঃ বাইশাখ কুনামী রে।
১৩। আতুরেন মুড়ুৎ দ অকয় ব মেতায়া ?
উঃ মাঝি বাবা।
১৪। আতুরে নায়কে বাবা আঃ কামি দ চেৎ?
উঃ আতুরেন বঙ্গাবুরু ক সেওয়া।
১৫। আব দিশম রেনাঃ ঞুতুম দ চেৎ?
উঃ ভারত দিশম।
১৬। ভারত দিশম দ তিস ফুরগাল আকানা ?
উঃ ১৯৪৭ সাল রেনাঃ ১৫ই আগষ্ট ।
১৭। ফুরগাল তায়ম পনত ক গঠন রুওয়াড় রেনাঃ মূল ভিত্তি দ চেৎ কানা ?
উঃ ভাষা।
১৮। সান্তাড়ী ভাষা দ তিস ভারত সংবিধান রে সেলেৎ আকানা?
উঃ ২০০৩ সাল রেনাঃ ২২ ডিসেম্বর।
১৯। পারসী হূলগারিয়া দ অকয় ব মেতায়া?
উঃ সালখান মুর্মু ।
২০। ASECA রেনাঃ পুরা ঞুতুম দ চেৎ?
উঃ Adibasi Social Educational & Cultural Association.
২১।C.N.T.ACT রেনাঃ পুরা ঞুতুম দ চেৎ?
উঃ Chatanagpur Tanancy Act.
২২। S.P.T Act রেনাঃ পুরা ঞুতুম দ চেৎ?
উঃ  Santal Pargana Tanancy Act.
২৩। সিধু-কান্হু হূল দ তিস এতহব লেনা?
উঃ ১৮৫৫ সাল রেনাঃ ৩০শা জুন।
২৪। দিশম মাঝি দ অকয় ব মেতায়া?
উঃ নিত্যানন্দ হেমব্রম।
২৫।'বিদু - চাঁদান ' পতব দ অকয় আঃ অল পতব কানা?
উঃ রঘুনাথ মুর্মু আঃ।
২৬। পন্ডিত রঘুনথ মুর্মু আঃ জানাম আতু দ অকারে?
উঃ ওড়িশা পনত, ময়ূরভঞ্জ জেলারেনাঃ ডাহারডি আতুরে।
২৭। বীরসা মুন্ডা দ তিস এ জানাম লেনা?
উঃ ১৮৭৫ সাল রেনাঃ ১৫ই নভেম্বর।
২৮। বীরসা মুন্ডা আঃ জানাম আতু দ চেৎ?
উঃ উলিহাতু।

Monday 23 July 2018

সাঁওতালদের জন্য বাবাসাহেব আম্বেদকর যা করেছেন

santal-hul
“যে জাতি তার ইতিহাস জানে না, সে জাতির উন্নতি হয় না।”
                                              – বাবাসাহেব আম্বেদকর
১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়। ইংরেজ সরকার বিদ্রোহের কারণ তদন্ত করে। তদন্তে জানতে পারে ব্রাহ্মন, জোতদার, জমিদারেরা সাঁওতালদের লূঠ করে, ঠকায়, অত্যাচার করে। তখন ইংরেজ সরকার নিয়ম করে দেয়, আদিবাসী নয় এমন কোন মানুষ সাঁওতাল – আদিবাসি এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেনা। সাঁওতালরা ভারত স্বাধীন হবার আগেই ১৮৫৫ সালে স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল (CNT Act & SPT Act)। 1945 সালে UNO গঠিত হয়। আদিবাসীদের জন্য জওহর লাল নেহেরু ( কংগ্রেস সরকার) কে প্রতিনিধি দিতে বলা হয়। জওহর লাল নেহেরু আদিবাসী নয় এমন একজনকে পাঠায় ছিলেন তিনি বলেন ভারতে আদিবাসী নেই। এরপর বাবাসাহেব আম্বেদকরকে সংবিধান লেখার দায়ীত্ব দেওয়া হয়। বাবাসাহেব দেখলেন কংগ্রেস সরকার আগেই ঘোষনা করে দিয়েছিলেন ভারতে আদিবাসী নেই। এমন অবস্থায় বাবাসাহেব আদিবাসীদের IDENTIFICATION এর জন্য আদিবাসীদের ST বলে উল্লেখ করলেন। CNT Act & SPT Act তো ছিলই, তারসাথে Article 244 Add করলেন। CNT Act & SPT Act সাঁওতাল শুধু নিজের জায়গাকেই দেখাশোনা করতে পারবে আর Article 244 এ সাঁওতাল অন্যকেও শাসন করতে পারবে। এছাড়াও আদিবাসী তাদের সংখ্যানুপাতে সরকারি কাজে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।
এই তথ্য প্রতিটা সাঁওতাল আদিবাসীদের জানা দরকার। শুধু facebook এ নয়, Field work এও এটা প্রচার করতে হবে। ST Segrication রোধ করতে হবে। UNO এর নিয়ম অনুযায়ী বিদেশীদের শাসক হবার অধিকার নেই। বিদেশী প্রজা হয়ে থাকতে হবে নতুবা যেখান থেকে তারা এসেছে সেখানে ফেরত চলে যেতে হবে। সাঁওতালদের হিন্দু বলে গালি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সাঁওতাল জাতি প্রকৃতির উপাসক। ব্রাহ্মনরা সাঁওতালদের মূর্তি পুজাতে উৎসাহী করছে। ফলে যে সাঁওতালরা কর্মে বিশ্বাসী, তাদের সেটা নষ্ট হয়ে প্রার্থনাতে বিশ্বাসী হচ্ছে। সাঁওতালরা জানেনা যে তাদের এত সম্পদ আছে, তাদের সম্পত্তি যদি আজ বিক্রি করা হয়, তাহলে প্রতিটা জীবিত সাঁওতাল ব্যক্তি ১০০১ কোটি টাকা করে পাবে। তা সত্ত্বেও সাঁওতালরা আজ গরিব কিন্তু ভিখারী নয়। এর প্রধান কারন সাঁওতালদের MLA, MP চামচা গিরি করছে। তারা সাঁওতালদের ক্ষতি করে বিদেশীদের তোষামোদ করছে।

সাঁওতালি ভাষা আন্দোলনে পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু

guru-gomke
ওড়িশা রাজ্যের ময়ূরভঞ্জ জেলার ডাহারডি (ডান্ডবস) গ্রামে ১৯০৫সালের ৫ই মে বৈশাখী পূর্ণমা বা বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে রঘুনাথ মুরমু জন্মগ্রহণ করেন। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। বাবা নন্দলাল  (সিদ নামেও ডিকা হত) এবং মা সলমা (সুমি নামেও ডাকি হত)। নন্দলাল মুরমুর দুই মেয়ে- বাহা ও সনা। রঘুনাথ হলেন তৃতীয় সন্তান। চতুর্থ পুত্রের নাম দুবরাজ। সাঁওতাল সমাজের রীতি মেনেই নন্দলাল তাঁর তৃতীয় সন্তানের নামকরণ তার ঠাকুরদার নামেই রাখেন অর্থাত্ তৃতীয় সন্তানের নাম রাখা হয় ‘চুনু’। ছোটো বেলায় চুনুর অসুখ বিসুখ লেগেই থাকত। নাজেহাল পিতা একদিন এক ওঝা ডেকে এনে ঝাড়ফুঁক করান। সেই ওঝার পরামর্শ অনুযায়ী ‘চুনু’ নামের পরিবর্তন ঘটিয়ে রাখা হয় রঘু বা রঘুনাথ। জানা যায়, ‘রঘু’ কোন এক ওঝার নাম।
রঘুনাথের বয়স যখন সাত বছর তখন তাকে পাশের গ্রাম গাম্ভারিয়া ইউ. পি. স্কুলে ভর্তি করা হয়। শিশু রঘুনাথ ওড়িয়া ভাষা বুঝতে পারতেন না তবু তাঁকে ওড়িয়া ভাষাতেই পড়াশোনা আরাম্ভ করতে হয়।
গাম্ভারিয়া স্কুলের পর বহড়দা এম. ই. স্কুলে তাঁকে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। মেধাবী রঘুনাথ ১৯২২সালে এম. ই. পাশ করেন এবং বারিপাদা হাইস্কুল অফ্ ময়ূরভঞ্জ  (বর্তমানে এম. কে. সি. হাইস্কুল)-এ ভর্তি হন। এখান থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করেন ১৯২৪সালে (মতান্তরে ১৯২৮সালে)। ১৯৩১-৩২সালে বারিপাদা পাওয়ার হাউস থেকে Apprenticeship করেন। তারপর, ময়ূরভঞ্জের দেওয়ান ডঃ পি. কে. সেন-এর উদ্দ্যোগে রঘুনাথ কোলকাতা, শ্রীরামপুর, গোসাবা থেকে Industrial Training লাভ করেন। পড়াশোনায় তাঁকে ইতি টানতে হয় কেন না দারিদ্র্যতার জন্য তিনি আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন নি।
রঘুনাথ মুরমুর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৩০-৩১সালে লোকগণনার অস্থায়ী কর্মী হিসাবে। এখানে কিছুদিন কাজ করার পর বারিপাদার পূর্ণ-চন্দ্র ইণ্ডাসট্রিয়াল ইনস্টিটিউটে Instructor হিসাবে কাজ করেন। ১৯৩৩সালে রঘুনাথ মুরমু বড়মতাড়িয়া মডেল ইউ. পি. স্কুলে ইনডাসট্রিয়াল শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। কিছুদিন পরেই এখানকার প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৬সালে রায়রংপুর হাইস্কুলে Promotion দিয়ে তাঁকে পাঠানো হয়। ১৯৪৬সালেরই ফেব্রুয়ারি মাসের ছয় তারিখ তিনি স্বেচ্ছায় চাকরী থেকে ইস্তফা দেন। ছোটবেলায় রঘুনাথ যখন স্কুলে পড়তেন তখন উড়িয়া ভাষায় পড়াশোনা করা তাঁর পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়েছিল। মাতৃভাষায় কেন পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না সেকথা তাঁর মনে প্রশ্ন জাগায়। তিনি জানতে পারেন, নিজের মাতৃভাষায় লিপি নেই বলে মাতৃভাষায় পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। তারপর থেকেই সাঁওতালি ভাষার জন্য লিপি উদ্ভাবনের কথা তাঁর মাথায় আসে। আসলে, সাধুরাম চাঁদ মুরমুর মতোই রঘুনাথ মুরমুও বুঝেছিলেন যে, সাহিত্যের বিকাশ ব্যতীত জাতির বিকাশ অসম্ভব এবং সাহিত্যের বিকাশে নিজস্ব লিপি একান্তভাবেই প্রয়োজন। তাই মামা সাওনা মুরমুর সঙ্গে বহু আলোচনার পর, অসম্ভব পরিশ্রম করে সাঁওতালি ভাষার ১৯২৫সালে লিপির সৃষ্টি করেন। নাম দেন-‘অলচিকি’।
১৯৩৮সালে অলচিকি প্রসারের জন্য কাঠের ছাপা মেশিন তৈরি করেন। ১৯৩৯সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বারিপাদার এক সভায় রঘুনাথ ছাপা মেশিন ও অলচিকি-কে জনসমক্ষে আনেন। মহারাজ তা দেখেন এবং খুশি হন। তারপরই প্রকৃতপক্ষে ‘অলচিকি’ প্রচারের কাজ শুরু হয়। জামশেদপুরের খেরওয়াল জারপা সমিতির সহযোগিতা লাভ করেন। তারপর কোলকাতার স্বদেশি টাইপ ফাউন্ড্রিতে গিয়ে রঘুনাথ ‘অলচিকি’-র টাইপ তৈরি করান। মুনিরাম বাসকের উদ্যোগে ‘চাঁদান প্রেস’-এর স্থাপন হয়। অলচিকি লিপিতে মুদ্রণের কাজ ত্বরান্বিত হয়। অলচিকি প্রচারের জন্য পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু ১৯৬০সালে ‘আদিবাসী সোশিও এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল এসোশয়েশন’ (ASECA) বা আদিবাসী সমাজ-শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তৈরি করেন। ওড়িশা, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে এই সংগঠন ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি গড়ে উঠে All India (Adibasi) Santal Council । অলচিকি প্রচারের আন্দোলন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
সাঁওতাল জাতির যথার্থ শিক্ষা বিস্তারে অলচিকি লিপির উদ্ভাবনেই থেমে থাকেননি পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু। শিশুরা জাতির ভবিষ্যত্, তাদের সম্পর্কে দরদি মন নিয়ে এবং বিশেষ শিক্ষাভাবনা ও কল্পনার মিলনে লিখেছেন সচিত্র শিশু পাঠ্য বই ‘অল চেমেদ’। স্বদেশি ফিউন্ড্রির নিজস্ব কাঠের হরফে প্রথমে ছাপার কাজ শুরু। কাঠের ব্লক তৈরি করেছেন নিজে। ব্লকে নিজেই খোদাই করেছেন পরিচিত জীবজন্তু বা প্রাকৃতিক দৃশ্যের শিল্পরূপ। ইত্যাদি বিষয় আশ্চর্য সুন্দর শিল্পময়তায় কাঠের ব্লকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। (পরবর্তিকালে যথারীতি ধাতু নির্মিত ব্লক ব্যবহৃত)। ‘অল উপরুম’ বইটিও শিশুপাঠ্য। একগুচ্ছ চিরন্তন সত্যকথা বা প্রাকৃতিক নিয়ম লিখেছেন শিশু মনস্তত্ত্বের উপযোগী করেই। ‘পারশি পহা’- য় অলচিকি লিপির প্রাথমিক রূপ এবং ‘পারশি অপাত্’ বইয়ে অলচিকি লিপির অঙ্কুরোদগম। জাতির উন্নতিতে স্বাস্থ্যই সম্পদ-এই সমাজহিতকর ভাবনা তাঁর ‘দাড়েগে ধন’ নাটকে সুন্দরভাবে চিত্রিত । অলচিকি লিপিতে লেখা ধারাপাত, যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগ, ইত্যাদি শিশুপাঠ্য গণিত শিক্ষা ‘এলখা’ বইয়ে বিধৃত। ‘পারশি ইতুন’ তাঁর লেখা ইংরেজি শিক্ষার বই। বারিপাদার কালকাপুরে, ১৯৭৫সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি অবধি তিনি নিজে এই বই থেকে ছাত্রদের শিক্ষা দেন। সাঁওতালি শিক্ষার জন্য সহজ ব্যাকারণ বই ‘রণড়’ লিখেছেন। বইটিতে তিনি বলেছেন-সাঁওতালি ভাষার সঙ্গে সংস্কৃতি ভাষার মিলের কিছু কথা। সামাজিক জীবনে সাঁওতালদের জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ বিষয়ক নীতি বিধানের কথা লিখেছেন ‘বাঁখেড়’ বইয়ে । সমগ্র সাঁওতাল জাতির আত্মজিজ্ঞাসা ও প্রেরণামূলক অগ্রগতির ভাবনা ‘রাঃ আদড়’ বইয়ে চিত্রিত করেছেন । তাঁর উপদেশ মূলক গানের বই ‘লাকচার’। তাঁর ‘হিতাল’ গ্রন্থ তিনখণ্ডে মহাকাব্যধর্মী । পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিভার যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তার পরিপেক্ষিতে তিনি বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন ।
পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু কেবলমাত্র ‘অলচিকি’ লিপির স্রষ্টাই ছিলেন তা নয়, পাশাপাশি কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার  (যাত্রাপালা রচয়িতা) এবং বিদগ্ধ দার্শনিকও ছিলেন । তাঁর আদর্শে সাঁওতাল জনমানসে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। স্বাধীনোত্তর ভারতে যখন ভাষা ভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন শুরু হয় তখন পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু-রই আদর্শে দীক্ষিত সুনারাম সরেনের নেতৃত্বে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধ হন। ভাষা ভিত্তিক রাজ্যের দাবি তাঁরাও করেন অর্থাত্ সাঁওতালি ভাষার ভিত্তিতে সাঁওতালদের জন্য পৃথক রাজ্য । কিন্তু অদৃষ্টের চরম পরিহাস, স্বাধীন ভারতের সরকার ময়ূরভঞ্জের গুডুরিয়ায় ১৯৪৮সালে নিরস্ত্র সাঁওতালদের জমায়েতে নির্বাচারে গুলি চালায়। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করিয়ে দেয়। পন্ডিত রঘুনাথ মুরমুই যে সাঁওতালদের তাত্ত্বিক নেতা, তা সরকার বুঝতে পেরে তাঁকে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি করে। তিনি আত্মগোপন করেন ফলে তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। এ হেন এক বিরল ব্যক্তিত্ব ১৯৮২সালের ১লা ফেব্রুয়ারি তাঁর কর্মযজ্ঞ অসমাপ্ত রেখে পরলোকগমন করেন।

মহাপ্রাণ যোগেন্দ্র নাথ মণ্ডল।

যোগেন্দ্র নাথ মণ্ডল। বাবা সাহেব আম্বেদকরকে ভারতীয় সংবিধান সভায় নির্বাচিত করে পাঠানোর অন্যতম কারিগর ও তৎকালীন সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় দলিত নেতা ও Scheduled Caste Federation এর অন্যতম নেতা।

ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের ডেপুটেশন।













বাঁকুড়া জেলার খয়রাকানালী পোল্ট্রি ফার্মে সুপারভাইজার কর্তৃক আদিবাসী তরুনীর শ্লীলতাহানি ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের (Bharat Jakat Majhi Pargana Mahal - BJMPM) এর নেতৃত্বে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা থানায় গণ ডেপুটেশন ২০শে জুলাই ২০১৮।

৯ ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।



২১ শে জুলাই, ২০১৮ তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫ তম শহীদ স্মরণ দিবসে কলকাতার ধর্মতলা সমাবেশ থেকে ৯ ই আগস্ট, ২০১৮ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আগে গত বুধবার ১১ ই জুলাই, ২০১৮ উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভা থেকেও ৯ ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন। এ বার তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সরকারী বেসরকারি উদ্যোগে বিপুল উৎসাহে ৩০ শে জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ ‘হুল’ দিবস পালন করা হয়েছিল সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে।
৯ ই আগস্ট আদিবাসী দিবস কি ?
রাষ্ট্রসঙ্ঘের খাতায় ৯ অগস্ট দিনটি ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অব ওয়ার্ল্ড ইন্ডিজেনাস পিপল’ হিসেবে স্বীকৃত। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা তথা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই দিনটি ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস’ হিসেবে ১৯৯৪ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে।
সংযুক্ত রাষ্ট্র সংঘ (United Nations Organizations – UNO) আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ১৯৯৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী জনগোষ্ঠী বর্ষ’ ঘোষণা করে। ১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রতিবছর ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ‘আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী জনগোষ্ঠী দশক’ ঘোষণা করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের উদ্বেগের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র ২০০৭’ অনুসারে আদিবাসীদের ৪৬টি অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে। আদিবাসী এলাকার খনিজ, বন ও প্রাকৃতিক সম্পদ আদিবাসীদের অনুমতি ছাড়া সরকার ব্যবহার করতে পারবে না।
প্রতিবছর এ দিন সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়। বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় ৩৭ কোটি আদিবাসী জনগণ দিবসটি পালন করছে। ভারতে প্রায় ১০.৪ কোটি আদিবাসী বসবাস করেন যা ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৬ %। পশ্চিমবাংলায় প্রায় ৬০ লক্ষ আদিবাসীর বাস যা পশ্চিমবাংলার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ %। মূলধারার জনগোষ্ঠীর থেকে আদিবাসীদের পৃথক জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস আছে। পশ্চিমবাংলায় মোট ৪০ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদান করার জন্য।
পশ্চিমবঙ্গে তালিকাভুক্ত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ গোষ্ঠীগুলি – ১) ASUR, ২) KORWA, ৩) BAIGA, ৪) LEPCHA, ৫) BEDIA, BEDIYA, ৬) LODHA, KHERIA, KHARIA, ৭) BHUMIJ, ৮) LOHARA, LOHRA, ৯) BHUTIA, SHERPA, TOTO, DUKPA, KAGATAY, TIBETAN, YOLMO, ১০) MAGH, ১১) BIRHOR, ১২) MAHALI, ১৩) BIRJIA, ১৪) MAHLI, ১৫) CHAKMA, ১৬) MAL PAHARIYA, ১৭) CHERO, ১৮) MECH, ১৯) CHIK BARAIK, ২০) MRU, ২১) GARO, ২২) MUNDA, ২৩) GOND, ২৪) NAGESIA, ২৫) GORAIT, ২৬) ORAON, ২৭) HAJANG, ২৮) PARHAIYA, ২৯) HO, ৩০) RABHA, ৩১) KARMALI, ৩২) SANTAL, ৩৩) KHARWAR, ৩৪) SAURIA PAHARIA, ৩৫) KHOND, ৩৬) SAVAR, ৩৭) KISAN, ৩৮) LIMBU, ৩৯) KORA, ৪০) TAMANG।
পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২ টি আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত – ঝাড়গ্রাম ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসন দুটি। পশ্চিমবাংলার মোট ২৯৪ টি বিধানসভার আসনের মধ্যে ১৬ টি বিধানসভা আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত – ১) Kumargram, ২) Kalchini, ৩) Madarihat, ৪) Mal, ৫) Nagrakata, ৬) Phansidewa, ৭) Tapan, ৮) Habibpur, ৯) Sandeshkhali, ১০) Nayagram, ১১) Keshiary, ১২) Binpur, ১৩) Bandwan, ১৪) Manbazar, ১৫) Ranibandh, ১৬) Raipur। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে শিক্ষা, চাকরি ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৬% আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি সরকারী প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের অগ্রাধিকার দেবার কথা সরকারী গাইডলাইনে পরিষ্কার ভাবে বলা থাকে। এত সুযোগ সুবিধা ও সুরক্ষা কবচ থাকা সত্ত্বেও আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের যথাযথ উন্নয়ন হচ্ছে না। সরকারী পরিকল্পনা ও বঞ্চিত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ মানুষদের মধ্যে বিশাল ফারাক থেকে যাচ্ছে।
কিন্তু প্রথমবারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদাধিকারী ব্যক্তি ৯ ই আগস্ট আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দেওয়ায় আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের মধ্যে আশার আলো জাগছে। এইবার সম্ববত আদিবাসীদের সমস্যার প্রতি সরকারী দৃষ্টি যত্নবান হবে।

জাল ST Certificate এর বিরুদ্ধে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়ার ডেপুটেশন।


জাল ST Certificate এর বিরুদ্ধে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়ার ডেপুটেশন।
জাল ST Certificate প্রদান ও জালিয়াতিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ‘নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়া’ এর নেতৃত্বে আদিবাসীরা প্রতিবাদপত্র ও ডেপুটেশন দেবেন। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির তালিকায় অনেক অ-আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এইভাবে অ-আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় আসল আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আদিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষা করতেই এই ডেপুটেশন বলে জানান উদ্যোগতারা।

Friday 13 July 2018

গোপিবল্লভপুরে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের উদ্যোগে আদিবাসী সমাবেশ।


গত রবিবার ৮ ই জুলাই, ২০১৮ ঝাড়গ্রাম জেলার গোপিবল্লভপুরে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের উদ্যোগে এক বিরাট আদিবাসী সমাবেশ হয়। সমাবেশে বেলাকাটিয়া মুলুক ও বিলাত মুলুক এর আদিবাসীরা উপস্থিত ছিলেন। এই সমাবেশে সাঁওতালী মাধ্যমে ২০১৮ তে উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এই সমাবেশে উপস্থিতি ছিলেন ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের সুপ্রিমো তথা দিশম পারগানা নিত্যানন্দ হেম্ব্রম, পূর্ব মেদিনীপুর-পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম জেলা পারগানা রবিন টুডু মহাশয়, পূর্ব মেদিনীপুর-পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম জেলা গডেত রাইসেন হাঁসদা মহাশয়, পূর্ব মেদিনীপুর-পশ্চিম মেদিনীপুর-ঝাড়গ্রাম জেলা পরামর্শদাতা ডাঃ শিবশঙ্কর সরেন মহাশয়, ওড়িশ্যার ভঞ্জ মুলুক পারগানা মাগাদ চপয়া ও জেলার অন্যন্য মাঝি, পারগানা ও সম্মানীয় অথিতি বৃন্দ।
এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা তাদের বক্তব্যে আদিবাসী সমাজের শিক্ষা, সংস্কৃতি, ভাষা, জমি, বাসস্থান ইত্যাদি নানা সমস্যায় বিষয়ে আলোচনা করেন। বর্তমানে কিভাবে আদিবাসীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে আদিবাসি সমাজের ঐক্য ভেঙ্গে দেওয়ার প্রানপন চেষ্টা চলছে তা নিয়ে বক্তব্য পেশ করেন প্রায় সকল বক্তারা, সেইসঙ্গে জানান যে এই চেষ্টা সফল হবে না। তারা দাবি করেন যে মুঘল শাসন, ইংরেজ শাসন আদিবাসীদের ঐক্য ভেঙ্গে দিতে পারেনি। তারা দাবি জানান –
১। সাঁওতালী মাধ্যমের স্কুলের সমস্থ পরিকাঠামো অবিলম্বে দিতে হবে।
২। সাঁওতালী মাধ্যমে শিক্ষার ১০-১১ বছর অতিক্রান্ত হলেও স্থায়ী শিক্ষক নিয়োক করা হল না কেন?
৩। পশ্চিমবঙ্গের সমস্থ আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকাকে পঞ্চম তপশিলে অন্তর্ভুক্ত করে সাঁওতালী ভাষা, ধর্ম অ সংস্কৃতির অধিকার কে সুনিশ্চিত করতে হবে।

আদিবাসীদের উন্নয়নের জন্য কমিটি গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।



২০১১ সালে প্রথম বার পশ্চিমবঙ্গের শাসনক্ষমতা লাভ করার পর মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বার বার ইঙ্গিত দিয়েছেন যে তার সরকারের উন্নয়নের কর্মকাণ্ডে অন্যতম অভিমুখ আদিবাসীরা। আদিবাসীদের উন্নয়নের তদারকি করতে বার বার ছুটে গিয়েছেন জঙ্গলমহল। আদিবাসীদের উন্নয়নে চালু করেছেন অনেক নতুন নতুন সরকারী প্রকল্প। কিন্তু কোথায় যেন তাল কেটেছে। শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের ওপর বিরূপ হয়েছেন আদিবাসীরা। বিভিন্ন ইস্যুতে বার বার রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নামছেন আদিবাসীরা। আদিবাসীদের দেখাদেখি আরও অনেকে শাসক তৃণমূল কংগ্রেস ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হচ্ছেন। তার জেরে গত পঞ্চায়েত ভোটে জঙ্গলমহল এবং উত্তরবঙ্গের আদিবাসী প্রধান এলাকায় আশানুরূপ ফল করতে পারেনি শাসকদল। এর প্রতিক্রিয়ায় দলীয় স্তরে অন্তর্তদন্ত, সাংগঠনিক এবং প্রশাসনিক স্তরে ব্যাপক রদবদলের ধারাবাহিকতায় এ বার আদিবাসী উন্নয়নে বিশেষ কমিটি গড়লেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ব্লক, জেলা এবং রাজ্য – তিন স্তরেই কমিটি তৈরি হবে। এই কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়কে।
আদিবাসীদের ক্ষোভের কারন ও উন্নয়নের পন্থা খুঁজে বের করতে গত ০৬ ই জুলাই, ২০১৮ (শুক্রবার) দুপুরে নবান্নে বিশেষ বৈঠক ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আদিবাসী অধ্যুষিত ১৫০ টি ব্লক থেকে বাছাই করা আদিবাসীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ছিলেন আদিবাসী উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধিরা। হাজির ছিলেন ডিএম এবং এসপি’রা। তবে সরাসরি রাজনীতির লোক বলতে বিধায়ক, সাংসদ এবং পঞ্চায়েতের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের হাতে গোনা কয়েক জনকেই মাত্র ডাকা হয়েছিল। এই বৈঠকেই আদিবাসী এলাকার সামগ্রিক উন্নয়নে ব্লক, জেলা এবং রাজ্যস্তরে আলাদা কমিটি গঠনের কথা ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কমিটির মুখ্য কাজ হবে, আদিবাসী উন্নয়নে প্রশাসন এবং সরকারকে পরামর্শ দেওয়া এবং পঞ্চায়েতের কাজে তদারকি করা।
রাজ্যের প্রতিটি জেলা থেকে দু’জন করে আদিবাসী প্রতিনিধি রাজ্যস্তরে এই কমিটির সদস্য হবেন। তাঁরা সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সুপারিশ করবেন। নব গঠিত কমিটির চেয়ারম্যান ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্য আদিবাসী উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। আদিবাসীদের উন্নয়ন কী ভাবে করা যায়, সেটা খতিয়ে দেখে সরকারকে সব রকম সাহায্য করবে কমিটি। আগামী দিনে জেলা এবং ব্লক স্তর পর্যন্ত কমিটির কাজ ছড়িয়ে দেওয়া হবে।’
২০১১-য় তৃণমূল রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর আদিবাসীদের উন্নয়নে একাধিক কর্মসূচি ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী। রেশনে সস্তার চাল, পাট্টা বিলি, গরিব আদিবাসীদের জন্য পাকা বাড়ি, নতুন রাস্তাঘাট নির্মাণ, বেকার যুবকদের সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়া-সহ একের পর এক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। গঠিত হয়েছে আদিবাসী উন্নয়ন বোর্ড। তার পরেও কেন আবার নতুন করে আদিবাসী উন্নয়ন কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর?
রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সদ্য সমাপ্ত পঞ্চায়েত ভোটে আদিবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া জেলায় ধাক্কা খেয়েছে শাসকদল। তৃণমূলকে হারিয়ে বহু আসনে জয়ী হয়েছেন বিজেপি প্রার্থীরা। বাঁকুড়া, বীরভূম, জলপাইগুড়ি, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলাতেও তৃণমূলের আদিবাসী ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসিয়েছে বিজেপি। আদিবাসীদের সংগঠিত করতে কিছু দিন আগেই পুরুলিয়ায় সভা করে গিয়েছেন বিজেপি’র সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। সব মিলিয়েই আদিবাসীদের মুখ ফেরানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে শাসক শিবিরে। আদিবাসীদের সমর্থন ফিরে পেতে এবং মজবুত করতেই পদক্ষেপ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠকে উপস্থিত আদিবাসী নেতাদের আরএসএস সম্পর্কে সতর্কও করে দিয়েছেন তিনি।
পঞ্চায়েতে তৃণমূলের অপেক্ষাকৃত খারাপ ফলের জন্য দলের স্থানীয় নেতাদের লাগাম ছাড়া দুর্নীতি এবং বেহিসাবি জীবন-যাপনকে দায়ী করেছেন অনেকে। দলীয় তদন্তেও সেটা উঠে এসেছে। তাই দলের নেতাদের দূরে রেখে আদিবাসী অরাজনৈতিক সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের সামনে রেখেই আদিবাসী এলাকার উন্নয়নে ব্রতী হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। জঙ্গলমহলের অনেক পরিচিত রাজনৈতিক নেতাই আমন্ত্রণ পাননি বৈঠকে। ঝাড়গ্রামের তৃণমূল নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী চূড়ামনি মাহাতোকে ডাকা হয়নি। তবে উমা সোরেন, সুকুমার হাঁসদা, শান্তিরাম মাহাতোর মতো তৃণমূলের কয়েক জন আদিবাসী নেতাকে বৈঠকে দেখা গিয়েছে। পঞ্চায়েতের কয়েক জন মাত্র প্রতিনিধি ডাক পেয়েছিলেন। জঙ্গলমহলের বিভিন্ন ব্লক থেকে গড়ে সাত থেকে আট জন প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। এক দিন আগেই বাসে করে তাঁদের কলকাতায় আনা হয়েছিল। বৈঠকের পর জঙ্গলমহলের নেতারা বাড়ি ফিরে গেলেও উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধিরা শহরে সরকারি আতিথেয়তায় রয়েছেন। নতুন কমিটির সদস্যদের ভাতা দেওয়া যায় কিনা, সেই বিষয়টি সরকার বিবেচনা করে দেখবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন।
এই কমিটি আপাতত কাজ করবে জনজাতি অধ্যুষিত ১৫০ ব্লকে। বাসিন্দাদের অভাব-অভিযোগ শোনা, আরও উন্নয়ন প্রকল্প করা, চালু প্রকল্পগুলির সুবিধা তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছচ্ছে কি না, তার দেখভাল, সরকার ও আদিবাসী সমাজের মধ্যে সমন্বয়ের কাজ করবে কমিটি। ‘‘বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের নির্যাস, উন্নয়নের সমবণ্টন হতে হবে,’’ বলেন এক মন্ত্রী।
শাসক-নেতাদের একটি অংশের ধারণা, ভেবেচিন্তেই ওই কমিটিতে পরিচিত তৃণমূল নেতাদের রাখেননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁদের যুক্তি, জঙ্গলমহল, বিশেষত আদিবাসী এলাকার ভোটে ফল যে আশানুরূপ হয়নি, তার জন্য অনেকাংশে দায়ী সেখানকার নেতাদের একাংশের ভাবমূর্তি। তাঁদের আচরণ, জনসংযোগ ঠিকঠাক ছিল না। অনেক ক্ষেত্রে সরকারি প্রকল্পের সুবিধা তৃণমূল স্তরে না-পৌঁছনোয় ক্ষোভ বেড়েছে। একেবারে নতুন মুখ নিয়ে গঠিত কমিটি আদিবাসী সমাজের মুখ ফেরানো অংশের মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারবে বলে আশা করছেন মন্ত্রীদের অনেকেই।
নবান্ন থেকে সব জেলা প্রশাসনকে লিখিত নির্দেশ দিয়েছে, আদিবাসী সমাজের কারও জমি কেনা বা তার চরিত্র বদল করা যাবে না। প্রশাসনের একাংশের অনুমান, আদিবাসী সমাজের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ার অন্যতম কারণ জমির হাতবদল। এ দিনের বৈঠকে উপস্থিত জনজাতি-প্রতিনিধিদের এই বিষয়টি পৃথক ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বৈঠকে প্রায় ৮০০ প্রতিনিধিকে স্মার্টফোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আদিবাসী সমাজে প্রচলিত সব ভাষায় তৈরি একটি অ্যাপ থাকবে তাতে। সরকারি পদক্ষেপ, প্রকল্পের কথা জানা যাবে তার মাধ্যমে। প্রতিনিধিরা সেই অনুযায়ী প্রচার করবেন। তথ্য আদানপ্রদানের জন্য তৈরি হবে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ। গোটা কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণের জন্য অবসরপ্রাপ্ত এক আইপিএস-কে ‘নোডাল অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ করবে রাজ্য।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফেসবুকে জানান, ‘আমাদের সরকার সব সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এই ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অনেক কাজ হয়েছে। আগামী দিনে তা আরও ছড়িয়ে দিতে চাই আমরা।’
বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আদিবাসী সমাজের প্রতিনিধিদের কাছে জানতে চান, দু’টাকা কেজি চাল, জাতিগত শংসাপত্র এবং উন্নয়নের যে সমস্ত কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে, তার সুবিধা তাঁরা পাচ্ছেন কি না। তখন কয়েকজন নানা সমস্যার কথা উল্লেখ করেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, জমির পাট্টা দেওয়া হলেও রেকর্ড নেই। সেই রেকর্ড না থাকায় অসুবিধা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী তা শুনে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা ঩নিতে বলেন। একজন বলেন, জাতিগত বৈষম্য খুবই শুরু হয়েছে। বিভিন্ন পুজো পার্বণে উচ্চবর্ণের লোকেরা আমাদের সামাজিক বয়কট করে। আমরা একঘরে হয়ে যাই। রীতিমতো ফতোয়া দিয়ে বয়কট করা হয়।
তা শুনে অসন্তুষ্ট হন মুখ্যমন্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে তার কড়া নিন্দা করে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদের বলেছেন, এরকম ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় থানায় অভিযোগ করতে হবে। না হলে তাঁকে জানাতে পরামর্শ দিয়েছেন। আদিবাসী সম্প্রদায়ের পক্ষে একজন বলেন, এখনও ডাইনি প্রথা চলছে। এটা বন্ধ করতে পাঠ্যপুস্তকের সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করা হোক। তাহলে সচেতনতা বৃদ্ধি হবে। সেই সঙ্গে অলচিকি হরফের আরও স্কুল এবং কমিউনিটি সেন্টার তৈরির দাবিও জানানো হয়।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী ছেলেমেয়েদের জন্য স্কলারশিপ চালু করা হয়েছে। ২০১১ সালের আগে আদিবাসীদের উন্নয়নে ৩৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। ২০১৮ সালে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮৭৮ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে নতুন দপ্তর তৈরি করা হয়েছে। একইরকমভাবে অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দপ্তরের বাজেট বরাদ্দ বাড়িয়ে করা হয়েছে ৯০৭ কোটি ১০ লক্ষ টাকা। আদিবাসীদের পাশে আছে রাজ্য সরকার।
এদিনের অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী, পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু, শান্তিরাম মাহাত, সৌমেন মহাপাত্র, অনুব্রত মণ্ডল, মুখ্যসচিব মলয় দে, নিরাপত্তা উপদেষ্টা সুরজিৎ করপুরকায়স্থ, ডিজি বীরেন্দ্র, সিপিএমের বহিষ্কৃত সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন। এদিন বাসে করে আদিবাসীদের নিয়ে আসা হয়। তাঁদের খাওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও তা ছিল সামান্য। ব্যয় সঙ্কোচের জন্য মেনুও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...