SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): 11/22/18

Thursday 22 November 2018

বাঁকুড়া জেলার রাণীবাঁধে কIরIম পুজোয় মাতলেন আদিবাসী ও কুড়মি সম্প্রদায়।

গত বৃহস্পতিবার ২৫ শে অক্টোবর, ২০১৮ বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধে আদিবাসী ও কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন করম পুজোয় মাতলেন। রানিবাঁধের অম্বিকানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চিরকুনকানালি গ্রামে আদিবাসী ও কুড়মি সম্প্রদায়ের এই বিশেষ পরব অনুষ্ঠিত হয়। ওই অনুষ্ঠানে চিরকুনকানালি গ্রাম ছাড়াও পাশাপাশি ভালুকা, বুড়িশোল, বাগডুবি, মৌকানালি সহ বেশকিছু গ্রামের বাসিন্দারা অংশ নেন। এদিন দুপুর ১২টা থেকে আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিশেষ করম নৃত্যের মাধ্যমে এবং পুজো করে শস্যের দেবতা অর্থাৎ লক্ষ্মীর আরাধনা করা হয়।
কুড়মি, সাঁওতাল, লোধা, ভূমিজ সহ বিভিন্ন আদিবাসী জনজাতি ও উপজাতির মানুষজন শস্যের দেবতার আহ্বানে মেতে ওঠেন। তাঁদের কথায়, যাতে কারও ঘরে কখনও খাবারের অভাব না থাকে সেই কারণেই শস্যের উপাসনা করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা তথা বাঁকুড়া জেলা পরিষদের সদস্য চিত্ত মাহাত বলেন, যিশুখ্রিস্টের জন্মের বহু আগে থেকেই এই অনুষ্ঠান আদিবাসী জনজাতিগুলির মধ্যে চলে আসছে। যাতে কোনওদিন খাদ্যের অভাব না হয় সেই জন্যই এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শস্যের দেবতাকে সন্তুষ্ট করা হয়।
বৃহস্পতিবার রানিবাঁধের ওই গ্রামটিতে অনুষ্ঠান ঘিরে সাধারণ মানুষের উন্মাদনা ছিল চোখে পড়ার মতো। পাশাপাশি গ্রামগুলি থেকে কাতারে কাতারে মানুষজন এসে ভিড় জমিয়েছিলেন। সেখানে পুজো শুরুর আগে ধামসা মাদলের তালে তালে বহু আদিবাসী মানুষজন করম নৃত্যে মেতে ওঠেন। অম্বিকানগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান অঞ্জলি বাস্কে বলেন, করম পরব আমাদের দীর্ঘদিনের একটি ঐতিহ্যপূর্ণ অনুষ্ঠান। এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা সংস্কৃতিকে পরম্পরাগত ভাবে ধরে রেখেছি।

আদিবাসীদের জমি দখল করে সর্দার প্যাটেলের মূর্তি নির্মাণের তীব্র প্রতিবাদে গুজরাটের আদিবাসীরা।

গুজরাটে আদিবাসীদের জমি দখল করে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তি স্থাপন নিয়ে আদিবাসীদের তীব্র ক্ষোভের মুখে বিজেপি সরকার, ছিঁড়ে ফেলা হল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোস্টার।
৩১ অক্টোবর, ২০১৮ সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৩ তম জন্মদিন৷ এদিনই গুজরাটের নর্মদা জেলায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় মূর্তি ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’র উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ উপস্থিত থাকবেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানিও৷ প্রথম থেকেই এই মূর্তি নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছেন ওই অঞ্চলের আদিবাসীরা৷ উদ্বোধনের আগে সেই আন্দোলনের তেজ আরও প্রবল করার ইঙ্গিত দিল আদিবাসী সমাজ৷ ছেঁড়া হল প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর সমস্ত পোস্টার৷
জানা গিয়েছে, প্রায় নব্বই শতাংশ পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়৷ পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয় যে, আবার নতুন করে পোস্টার লাগাতে হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও বিজেপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের৷ বসানো হয়েছে পুলিশি প্রহরা৷ এলাকায় টহল দিচ্ছে বিশাল পুলিশবাহিনী৷ স্থানীয় এক আদিবাসী নেতা জানান, এই ঘটনাই প্রমাণ করে রাজ্যের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের উপর কতটা বিক্ষুব্ধ হয়ে রয়েছে আদিবাসী সমাজ৷ এই মূর্তি নির্মাণের ফলে আদিবাসীদের জীবিকা বিপন্ন হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি৷ এই আদিবাসী নেতার দাবি, ভাদোদরা থেকে একশো কিলোমিটার দূরে প্রাকৃতিক সম্পদে পরিপূর্ণ একটা অঞ্চলে এই সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের এই মূর্তিটি নির্মাণ করেছে বিজেপি সরকার৷ এই ফলে চরম বিপদের মুখে পড়েছে ওই অঞ্চলে বসবাসকারী প্রায় ৭৫ হাজার আদিবাসীর জীবন৷
ওই আদিবাসী নেতার কটাক্ষ, বিশ্বে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রীর পোস্টার রক্ষার্থে পুলিশকে পাহারায় বসতে হয়েছে৷ তিনি জানান, শুরু থেকেই নর্মদা জেলার আদিবাসীরা এই মূর্তি নির্মাণের বিরোধিতা করে আসছিল৷ তবে এবার রাজ্যের সমগ্র আদিবাসী সমাজ ‘স্ট্যাচু অফ ইউনিটি’ প্রকল্পের বিরোধী৷ সূত্রের খবর, ৩১ অক্টোবর, ২০১৮ রাজ্যেজুড়ে বনধ পালনও করতে পারে ছোট-বড় শ’খানেক আদিবাসী সম্প্রদায়৷ রয়েছে উপবাসের পরিকল্পনাও৷ প্রভাব পড়তে পারে ন’টি জেলার ৭৫টি গ্রামে৷ আদিবাসী সমাজের একাংশের দাবি, গুজরাটের মহান সন্তান সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মূর্তির বিরোধিতা করছেন না তাঁরা৷ কিন্তু তাঁদের জীবন ও জীবিকা হাতছাড়া হওয়ায় সরকার বিরোধী ক্ষোভ জমেছে তাঁদের মনে৷
গুজরাটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হোর্ডিং পাহারা দিচ্ছে রাজ্য পুলিশ! পৃথিবীর ইতিহাসে সম্ভবত প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রীর ছবি দেওয়া ব্যানার প্রহরায় মোতায়েন পুলিশকর্মীরা। শুধু তাই নয়, আদিবাসীদের ক্ষোভ থেকে হোর্ডিং বাঁচাতে ছবিতে বিরাট আকারের বিরসা মুন্ডার ছবি দেওয়া হয়েছে। তার নিচে প্রধানমন্ত্রীকে বসানো হয়েছে। হই হুল্লোড় করে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের বিশাল মূর্তি উদ্বোধনের বন্দোবস্ত করলেও স্থানীয় আদিবাসীদের পাশাপাশি কৃষকদের ক্ষোভের মুখেও পড়তে হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর বাহিনীকে।
নর্মদা বাঁধের কাছেই দাঁড়িয়ে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের বিশালাকার মূর্তি। ১৮২ মিটার উচ্চতার এই মূর্তি বুধবার ৩১ শে অক্টোবর, ২০১৮ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার আগে ব্যানার, হোর্ডিং, পোস্টারে মুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা রাজ্য। বাদ যায়নি নর্মদা জেলাও। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেই হোর্ডিংয়ে রয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রূপানির ছবিও। সম্প্রতি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী ফলাও করে এর প্রচার করেছেন। উদাহরণ দিয়ে দিয়ে তিনি বোঝাতে চেয়েছেন দুনিয়ার সবথেকে বড় মূর্তি হয়েছে এটিই। ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এমন একটি মূর্তি নির্মাণের যৌক্তিকতা নিয়ে যখন প্রশ্ন উঠছে, তখন প্রধানমন্ত্রী এটিকে বিরাট সাফল্য হিসাবে দেখাতে উঠেপড়ে লেগেছেন।
যদিও ভিটে মাটি হারানো আদিবাসীরা এইসব কথায় ভুলছেন না। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের এই মূর্তি নির্মাণের জন্য আদিবাসীদের কাছ থেকে জমি কেড়ে নেয় রাজ্যের বিজেপি সরকার। মেলেনি পর্যাপ্ত পুনর্বাসনও। কমপক্ষে ৭৫ হাজার আদিবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, হারিয়েছেন জমি। ঘটা করে সেই মূর্তি উদ্বোধনের ব্যবস্থা করা হলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন আদিবাসীরা। জেলাজুড়ে অধিকাংশ হোর্ডিংয়ে কালো কালি লাগিয়েছেন বা ছিঁড়ে ফেলেছেন তাঁরা, অভিযোগ এমনই। এক সর্বভারতীয় ইংরেজি দৈনিকে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, ৯০ শতাংশ পোস্টার-হোর্ডিংই হয় ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে নয়ত কালো কালি লেপে দিয়েছেন ক্ষুব্ধ আদিবাসীরা। সংলগ্ন ২২টি গ্রামের পঞ্চায়েত প্রধানরা একটি চিঠিতে প্রধানমন্ত্রীকে অত্যন্ত কড়া ভাষায় লিখেছেন, ‘এই জঙ্গল, নদী, ঝরনা, জিম এবং কৃষি আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম সমর্থন দিয়ে চলেছে। আমরা এর উপরে ভিত্তি করেই বেঁচে আছি। কিন্তু সবকিছু ধ্বংস করে দেওয়া হলো এবং উৎসব করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। আপনার মনে হচ্ছে না এটা কারোর মৃত্যুতে উৎসব করা হচ্ছে? আমাদের তেমনই মনে হচ্ছে।’ এইরকম একটি এলাকার গ্রামগুলিতে এখনও স্কুল, হাসপাতাল,পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অথচ ৩ হাজার কোটি টাকা খরচ করে অর্থহীন মূর্তি তৈরি করা হলো। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সর্দার প্যাটেল যদি প্রাকৃতিক সম্পদের এই ব্যাপক ধ্বংস এবং আমাদের উপর এই অবিচার দেখতেন, তিনি কান্নায় ভেঙে পড়তেন। আমরা যখন এই সব কথা বলতে গেছি, তখন আমাদের বিরুদ্ধে পুলিশ লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’ চিঠিতে স্পষ্ট করে প্রধানমন্ত্রীকে বলা হয়েছে, আমাদের এখানে আপনি অনাহূত অতিথি। বুধবার বন্‌ধ ডেকেছে ছোট-বড় মিলিয়ে কমপক্ষে ১০০টি আদিবাসী সংগঠন। বনসকণ্ঠ থেকে ডাঙ, ৯টি জেলায় হবে বন্‌ধ। ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’র উন্মোচনের দিনে ডাকা এই বন্‌ধ স্কুল, কলেজ, অফিস বা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, এই প্রকল্পের জেরে ক্ষতিগ্রস্ত ৭২টি গ্রামের কোনও বাড়িতে রান্না হবে না বলেও জানিয়েছেন এই আদিবাসী নেতা। প্রথা অনুযায়ী, আদিবাসীদের গ্রামে কারও মৃত্যু হলে শোক জানিয়ে বন্ধ থাকে রান্না। ক্ষুব্ধ আদিবাসীরা পোস্টার ছিঁড়ে ফেলার পর তড়িঘড়ি ফের নতুন পোস্টার বানিয়ে ফেলেছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। কোনোরকম ঝুঁকি না নিয়ে বিরসা মুন্ডার ছবি দিয়ে এবার বানানো হয়েছে হোর্ডিং। যাতে আর আদিবাসীরা তা নষ্ট করতে না পারেন এবং পাহারায় রয়েছে পুলিশকর্মীরা।
এদিকে, সংখেদায় ১১ বছর আগে ছিল ‘সর্দার সুগার মিল’। চিনি কলেরই বোর্ড সদস্যদের আর্থিক গন্ডগোলের জেরে বন্ধ হয়ে যায় সেটি। সেই সময় থেকে ছোটা উদেপুর, পঞ্চমহল, ভদোদরা এবং নর্মদা — এই চার জেলার ১৫০০ কৃষক নিজেদের বকেয়া পাওনার জন্য দিন গুনছেন। এই সমস্ত কৃষক প্রায় ২ লক্ষ ৬২ হাজার টন আখ বিক্রি করেছিলেন ওই চিনিকলে। ১২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে তাঁদের। বহুবার সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েও মেলেনি অর্থ। এবার তাঁরাও নামছেন প্রতিবাদে। বুধবার, মূর্তি উদ্বোধনের দিন জলে ডুবে আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছেন এই কৃষকরা। ‘এই মূর্তি আমাদের কাছে কিছুই নয়। সরকারের ঔদাসীন্যে কৃষকরা এখনও দুর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ‘১১ বছর ধরে লড়াই করে যাচ্ছি’ ক্ষোভ-হতাশা মিলিয়ে বলেছেন কৌশিক প্যাটেল। তিনি ৩৮৯.৭৩ টন আখ বিক্রি করেছিলেন চিনিকলে। পাবেন ২ লক্ষ ১৮ হাজার টাকা। প্রসঙ্গত, বুধবার পালটা ‘একতা যাত্রা’র আয়োজন করেছে রাজ্যের বিজেপি সরকার।

রাবণবধ বা রাবণপোড়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছে আদিবাসী দলিত সম্প্রদায়।


২০১৭ সালের জুলাই মাস থেকে দক্ষিণ ভারতের কর্নাটকে, তামিলনাড়ুতে, অন্ধ্রপ্রদেশে, মহারাষ্ট্র জুড়ে রাবণবধ বা রাবণপোড়ার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করছে আদিবাসী দলিত বহুজন সংগঠন ‘ভীম দল’। দশেরার অনুষ্ঠান নয়, রাবণবধ বন্ধ হোক, এটাই মূল বক্তব্য। সুপ্রিম কোর্টে আর্জিও জমা পড়ে এই প্রথা বন্ধ করার জন্য। তাতে কারণ হিসেবে বলা হয় আদিবাসী বহুজন সম্প্রদায়ের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করার কথা। অসংখ্য আদিবাসী জনজাতির (মূলত দক্ষিণ ভারত আর মহারাষ্ট্রে) আরাধ্য দেবতা রাবণ। কর্নাটকের বহু মন্দিরে শিবলিঙ্গের পাশাপাশি উপাসনা করা হয় দশানন রাবণমূর্তিকেও। তাই এসসি/এসটি অ্যাক্টের অধীনে দায়ের হয় আর্জি। আর্জি খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানের ২৬ ধারার আড়ালে জানিয়ে দেয় তারা এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। কারণ ২৬ ধারা অনুসারে, কোনও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের স্বাধিকারে হস্তক্ষেপ সংবিধান বহির্ভূত। শবরীমালা রায়ের মতো ব্যতিক্রম সব ক্ষেত্রে ঘটে না, রাবণবধের মামলার ক্ষেত্রেও ঘটেনি।
রাবণবধ বা রাবণপোড়াকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তেজনাও শুরু হয় বহু দিন আগে। ১৯৯১ সাল নাগাদ, রাম জন্মভূমি বিবাদের কাছাকাছি সময় রাবণবধের বিরোধিতা এবং রাবণ আরাধনাকে কেন্দ্র করে স্থানীয় উত্তেজনা তুঙ্গে ওঠে। স্থান: পারাসওয়ারি, গড়চিরৌলি, অমরাবতী। রাজ্য: মহারাষ্ট্র। শুধু মহারাষ্ট্রে নয়, কর্নাটক, তামিলনাড়ুর বিভিন্ন অঞ্চলেই আদিবাসী গোন্ড উপজাতির বসবাস, যাদের আরাধ্য দেবতা রাবণ। শুধু আরাধ্য দেবতাই নয়, তাদের নামের উপাধিতেও ‘রাবণ’ যুক্ত থাকে। তারা তাদের এই প্রথা নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে বিযুক্ত ছিল, কিছু সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া।
১৯৯১ সাল, রাম-রাজনীতির উন্মেষ ও গোন্ড উপজাতির সঙ্গে সংঘাত। ‘গোন্ডোয়ানা গোন্ড সংস্কৃতি বাঁচাও সমিতি’ (জিজিবিএস) কেন্দ্রের ধর্মীয় সম্মেলন ‘রাবণ বিজয়’-এ (নাগপুরে), সরাসরি আক্রমণ করে আরএসএস। প্রতিবাদে গড়চিরৌলি অঞ্চলের অধিবাসীরা আন্দোলন করে। এমনকি নিজেদের নামে কোথাও ‘রাম’ শব্দাংশের উল্লেখ থাকলে তার পরিবর্তন করে ফেলেন তৎক্ষণাৎ। যেমন মোতি ‘রাম’ কানগালের নাম হয়ে যায় মোতি‘রাবণ’ কানগালে। কানগালে, মণিরাবণ দুগার মতো বহু মানুষ আজও চেষ্টা করছেন গোন্ড সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখার।
পরবর্তী কালে এই অঞ্চলে ধর্মীয় জয় পাওয়ার জন্য আরএসএস শুরু করে অসংখ্য ‘একল বিদ্যালয়’। রাবণ উপাসনার প্রথাকে ত্যাগ করে, রামকে দেবতা রূপে গ্রহণ করতে হবে, এমন বাধ্যতামূলক শিক্ষা দেওয়ার জন্য এই ব্যবস্থা, যেখানে আর্থিক সুবিধা দেওয়ার নামে নিয়ে আসা হয় আদিবাসী গোন্ড উপজাতির কিশোরদের। এখন গড়চিরৌলিতে প্রায় ১৫০টা একল বিদ্যালয় আছে, এবং গোন্ড ‘ঘোটুল’ বিদ্যালয়ের ছাত্রসংখ্যা প্রায় শূন্য। এর বিরুদ্ধে ক্রমাগত আন্দোলন করে চলেছেন অনেকে, যাঁদের মধ্যে অন্যতম বিরা সাথিদার, যাঁকে সাম্প্রতিক কালে দেখা গিয়েছে ২০১৬-র ‘কোর্ট’ চলচ্চিত্রে। প্রায় চব্বিশ বছর ধরে ‘রাবণ উৎসব’ আয়োজন করছেন তিনি। তাঁর ছেলের নামও রাবণ। এই আন্দোলন মূলত অহিংস, নানা অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, কোনও ধ্বংসের পথে যায় না। তাই খবরের কাগজের প্রথম পাতায় এই আন্দোলনের খবর স্থান পায় না।
রাবণ এক প্রতীক। অশুভ শক্তির বিনাশের নয় — প্রতিবাদের, এক বিকল্প শক্তির প্রতীক। যেমন ‘ভীম দল’-এর চন্দ্রশেখর, যেমন মোতিরাবণ কানগালে, যেমনটা বিরা সাথিদার। আরও দলিত উপজাতির মুখ, যাঁরা আর্য আগ্রাসনের সামনে মাথা তুলতে চাইছেন।

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...