SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): করোনা মোকাবিলায় যুগান্তকারী আবিষ্কার গবেষক বিপন টুডুু ও তার দলের|

Wednesday 10 June 2020

করোনা মোকাবিলায় যুগান্তকারী আবিষ্কার গবেষক বিপন টুডুু ও তার দলের|

বিশ্বজুড়ে ক্রমশ বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। করোনা ভাইরাস থাবা বসিয়েছে পুরুলিয়াতেও। COVID-19 প্রতিরোধের উপায় খুঁজতে কার্যত কালঘাম ছুটছে চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের। তখনই করোনা নিয়ন্ত্রণে যুগান্তকারী উদ্ভাবন পুরুলিয়ার বিজ্ঞানীদের। স্থির তড়িৎকে ব্যবহার করে মারণ ভাইরাস মোকাবিলায় বিশ্বকে নতুন দিশা দেখাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
কী এই স্থির তড়িৎ? বিজ্ঞানীরা বলছেন শীতকালে চিরুণি দিয়ে চুল আঁচড়ানোর পর চিরুণিকে কাগজের টুকরোর সামনে ধরলে, দেখা যায় চিরুণি আকর্ষণ করছে কাগজের টুকরোকে। এই ঘটনা আসলে স্থির তড়িতের কারসাজি। বিজ্ঞানীরা এই Electrostatics এর ধর্মকে কাজে লাগিয়ে বানিয়েছেন একটি তিন পর্দার স্মার্ট মাস্ক। প্রথম দুটি Triboelectric পদার্থ দিয়ে তৈরি এবং একেবারে বাইরে রয়েছে একটি স্মার্ট ফিল্টার। মাস্ক ব্যবহারকারীর শ্বাস-প্রশ্বাস, কথাবার্তা ও ঠোঁটের নড়াচড়ার কারণে উৎপন্ন হবে স্থির তড়িৎ এবং তা জমা থাকবে মাস্কে। ফলে মাস্ককে ঘিরে সৃষ্টি হবে একটি তড়িৎ ক্ষেত্র। এর ফলে যখনই কোনো অবাঞ্ছিত ড্রপলেট ভাইরাস মানুষের কাছাকাছি এসে পৌঁছবে, তখনই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়বে সে।
এই অভিনব মাস্কটি প্রখ্যাত বিজ্ঞানী তথা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের Instrumentation and Electronics Engineering বিভাগের প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান ড. বিপন টুডুর মস্তিষ্কপ্রসূত।
বিপন বাবুর বাড়ি পুরুলিয়া জেলার কাশিপুর থানার সোনাথলি অঞ্চলের পাবড়া গ্রামে। বিজ্ঞান চর্চায় অসামান্য কৃতিত্বের জন্য গত বছরই পুরুলিয়ার সিধো কানহো বিরষা বিশ্ববিদ্যালয় DSc সম্মানে ভূষিত করে জেলার এই ভূমিপুত্রকে। নপাড়া স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র বিপন বাবু জানালেন, তাঁদের নির্মিত মাস্ক বিশ্ব অতিমারী নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম। তিনি আরও বলেন, মাস্কের মডেল ইতিমধ্যে জমা পড়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কাইভে। শীঘ্রই শুরু হবে এর বাণিজ্যিক উৎপাদন।
এই গবেষক দলের অন্যতম সদস্য হলেন কাশিপুর থানার সোনাথলি গ্রাম পঞ্চায়েতের কালাপাথর গ্রামের বাসিন্দা ড. নিত্যানন্দ দাস। পুরুলিয়ার JK কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. দাস জানালেন, সাধারণ মানুষ সুলভে যাতে এটি সংগ্রহ করতে পারেন, তাই মাস্ক নির্মাণে মাথায় রাখা হয়েছে সেই দিকটিও। বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদিত একটি স্মার্ট মাস্কের দাম পড়বে প্রায় একশো টাকা।
এই মাস্কে লাগবে না কোন বাহ্যিক পাওয়ার সাপ্লাই। তাই সাধারণ মানুষ একবার হাতে পেলেই, তা ব্যবহার করতে পারবেন বহুদিন। স্মার্ট মাস্কটির বিশেষত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে জানালেন এই গবেষণার সঙ্গে যুক্ত জেলার আরেক বিজ্ঞানী, কাশিপুর থানার বড়রা অঞ্চলের চাপড়ি গ্রামের বাসিন্দা, পাঞ্জাবের মোহালির Institute of Nano Science and Technology এর অধ্যাপক ড. দীপঙ্কর মন্ডল। সাত সদস্যের গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের Instrumentation and Electronics Engineering বিভাগের গবেষক ড. রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, বর্ণালি ঘটক, সঞ্জয় ব্যানার্জি ও শেখ বাবর আলি।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধের যখন বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর দিশেহারা অবস্থা, তখন পুরুলিয়ার মতো পিছিয়ে পড়া জেলার গবেষকদের এমন চমকপ্রদ সাফল্য সাড়া ফেলে দিয়েছে দেশের বিজ্ঞানী মহলে। এখন ভূমিপুত্রদের গৌরবে গর্বিত গোটা জেলা। সেই সঙ্গে আরো একবার প্রমাণ হলো যে সংরক্ষণের কারণে কোনোদিনেই মেধা নিম্নগামী হয়না| যারা অপপ্রচার করে যে সংরকষণের কারণে দেশ পিছিয়ে পড়ছে তাদের মুখে আর একবার ঝামা ঘষে দিলেন আদিবাসী সাঁওতাল জাতির বিপন টুডু|
(সংবাদ সূত্র – পলাশ মুখার্জীর মুখবই দেওয়াল থেকে)

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...