SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): জৈব চাষে তাক লাগিয়ে কৃষিরত্ন গ্রাম্যবধূ কিরিন হাঁসদা।

Tuesday 27 March 2018

জৈব চাষে তাক লাগিয়ে কৃষিরত্ন গ্রাম্যবধূ কিরিন হাঁসদা।

জৈব চাষে তাক লাগিয়ে কৃষিরত্ন গ্রাম্যবধূ কিরিন হাঁসদা।


রাসায়নিক সারের বিষবর্জিত সব্জি পাওয়ার জন্য হাপিত্যেশের অন্ত নেই শহুরে জনতার৷ এরকম একটা সময় যেন মুশকিল আসানের মুখ হয়ে সামনে এলেন কিরিন হাঁসদা৷ পুরুলিয়া জেলার রঘুনাথপুর ১ নম্বর ব্লকের সিজা গ্রামের অশিক্ষিত এই গৃহবধূ জৈব প্রযুক্তির ফসল উৎপাদনে সাফল্যের জন্য এ বার কৃষিরত্ন পুরস্কার পেয়েছেন৷ কোনও রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ছাড়াই গ্রামের ৪০ জন মহিলাকে নিয়ে তিনি নানা ধরনের সব্জি চাষ করছেন৷ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিচ্ছে কৃষি দফতর। রঘুনাথপুর ১ নম্বর ব্লকের কৃষি আধিকারিক কৃষ্ণেন্দু হাইত বলেন, ‘কৃষি দফতরের ‘আত্মা’ প্রকল্পে প্রতিটি ব্লকে অন্তত একটি গ্রামকে জৈব প্রযুক্তির চাষের মাধ্যমে আদর্শ গ্রাম গড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল দুবছর আগে৷ সেই লক্ষ্যে আমরা যখন সিজা গ্রামে আসি, তখন দেখতে পাই, গ্রামের একটুকরো জমিতে খুব ভালো হলুদ চাষ করেছেন কেউ৷ খোঁজ নিতে কিরিনের কথা জানতে পারি৷ বাড়ির জৈব সার দিয়ে হলুদ লাগিয়েছিলেন কিরিন৷ বুঝতে পারি জৈব প্রযুক্তির শিক্ষা থাকলে মহিলা আরও বেশি ফসল উৎপাদন করতে পারবেন৷ এর পরই কিরিনের নেতৃত্বে ৪০ জন মহিলাকে নিয়ে শুরু হয় আদর্শ গ্রাম গড়ার কাজ৷’ কৃষি দফতরের এই আদর্শ গ্রাম প্রকল্পে জৈব প্রযুক্তিতে চাষে উৎসাহ দেওয়া হয়৷ এখানে কৃষিই মানুষের অন্যতম জীবিকায় পরিণত হয়৷ কিরিনের নেতৃত্বে সিজা গ্রামে হয়েছে উচ্চ ফলনশীল পেঁপে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, টম্যাটো, মাশরুম৷ এখন গোটা গ্রাম জুড়ে চলছে গ্রীষ্মকালীন আনাজ চাষ৷ কিরিন বলেন, ‘বাবুদের সঙ্গে কথা বলে বুঝতে পারি, ওঁদের কথা শুনলে লাভ হবে৷ তাই প্রথমে গ্রামের ২০ জন মহিলা মিলে গড়ে তুলি মাদার টেরিজা স্বনির্ভর কৃষক দল৷ পরে জয় ভারত নামে আরও একটি দল গড়া হয়৷’ প্রাথমিক স্কুলের গণ্ডি না পেরনো কিরিনের ঘরে রয়েছে তাঁর দুই স্কুলপড়ুয়া মেয়ে ও স্বামী হরিপদ হাঁসদা৷ হরিপদ বলেন, ‘স্ত্রীর আগ্রহ দেখে আমি আর বাধা দিইনি৷ বাঁকুড়ার ছাতনায় গিয়ে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসে ওঁরা৷ গোটা গ্রাম ওঁর থেকে শিখছে৷’ মালতী সোরেন, পানমণি সোরেনরা বলেন, ‘আমাদের গ্রামে আগে কোনও ফসলই রাসায়নিক সার ছাড়া চাষ হত না৷ মানুষের ধারণা ছিল, সার ও কীটনাশক না দিলে ফসল হয় না৷ এখন জৈব সার ও ভেষজ ওষুধ দিয়ে আগের চেয়ে বেশি ফসল পাচ্ছি৷ কিরিনের নেতৃত্বেই এই সাফল্য৷’ কিরিন বলেন, ‘যে কেউ আমাদের চাষের কাজ দেখতে পারেন৷ পরামর্শ নিতে পারেন৷ রাসায়নিকের ফসল নয়, জৈব প্রযুক্তির ফসলে বাজার ছেয়ে যাক, এটাই চাই৷

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...