SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): 07/23/18

Monday 23 July 2018

সাঁওতালদের জন্য বাবাসাহেব আম্বেদকর যা করেছেন

santal-hul
“যে জাতি তার ইতিহাস জানে না, সে জাতির উন্নতি হয় না।”
                                              – বাবাসাহেব আম্বেদকর
১৮৫৫ সালে সাঁওতাল বিদ্রোহ হয়। ইংরেজ সরকার বিদ্রোহের কারণ তদন্ত করে। তদন্তে জানতে পারে ব্রাহ্মন, জোতদার, জমিদারেরা সাঁওতালদের লূঠ করে, ঠকায়, অত্যাচার করে। তখন ইংরেজ সরকার নিয়ম করে দেয়, আদিবাসী নয় এমন কোন মানুষ সাঁওতাল – আদিবাসি এলাকায় প্রবেশ করতে পারবেনা। সাঁওতালরা ভারত স্বাধীন হবার আগেই ১৮৫৫ সালে স্বাধীন হয়ে গিয়েছিল (CNT Act & SPT Act)। 1945 সালে UNO গঠিত হয়। আদিবাসীদের জন্য জওহর লাল নেহেরু ( কংগ্রেস সরকার) কে প্রতিনিধি দিতে বলা হয়। জওহর লাল নেহেরু আদিবাসী নয় এমন একজনকে পাঠায় ছিলেন তিনি বলেন ভারতে আদিবাসী নেই। এরপর বাবাসাহেব আম্বেদকরকে সংবিধান লেখার দায়ীত্ব দেওয়া হয়। বাবাসাহেব দেখলেন কংগ্রেস সরকার আগেই ঘোষনা করে দিয়েছিলেন ভারতে আদিবাসী নেই। এমন অবস্থায় বাবাসাহেব আদিবাসীদের IDENTIFICATION এর জন্য আদিবাসীদের ST বলে উল্লেখ করলেন। CNT Act & SPT Act তো ছিলই, তারসাথে Article 244 Add করলেন। CNT Act & SPT Act সাঁওতাল শুধু নিজের জায়গাকেই দেখাশোনা করতে পারবে আর Article 244 এ সাঁওতাল অন্যকেও শাসন করতে পারবে। এছাড়াও আদিবাসী তাদের সংখ্যানুপাতে সরকারি কাজে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবে।
এই তথ্য প্রতিটা সাঁওতাল আদিবাসীদের জানা দরকার। শুধু facebook এ নয়, Field work এও এটা প্রচার করতে হবে। ST Segrication রোধ করতে হবে। UNO এর নিয়ম অনুযায়ী বিদেশীদের শাসক হবার অধিকার নেই। বিদেশী প্রজা হয়ে থাকতে হবে নতুবা যেখান থেকে তারা এসেছে সেখানে ফেরত চলে যেতে হবে। সাঁওতালদের হিন্দু বলে গালি দেওয়া বন্ধ করতে হবে। সাঁওতাল জাতি প্রকৃতির উপাসক। ব্রাহ্মনরা সাঁওতালদের মূর্তি পুজাতে উৎসাহী করছে। ফলে যে সাঁওতালরা কর্মে বিশ্বাসী, তাদের সেটা নষ্ট হয়ে প্রার্থনাতে বিশ্বাসী হচ্ছে। সাঁওতালরা জানেনা যে তাদের এত সম্পদ আছে, তাদের সম্পত্তি যদি আজ বিক্রি করা হয়, তাহলে প্রতিটা জীবিত সাঁওতাল ব্যক্তি ১০০১ কোটি টাকা করে পাবে। তা সত্ত্বেও সাঁওতালরা আজ গরিব কিন্তু ভিখারী নয়। এর প্রধান কারন সাঁওতালদের MLA, MP চামচা গিরি করছে। তারা সাঁওতালদের ক্ষতি করে বিদেশীদের তোষামোদ করছে।

সাঁওতালি ভাষা আন্দোলনে পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু

guru-gomke
ওড়িশা রাজ্যের ময়ূরভঞ্জ জেলার ডাহারডি (ডান্ডবস) গ্রামে ১৯০৫সালের ৫ই মে বৈশাখী পূর্ণমা বা বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে রঘুনাথ মুরমু জন্মগ্রহণ করেন। সেদিন ছিল বৃহস্পতিবার। বাবা নন্দলাল  (সিদ নামেও ডিকা হত) এবং মা সলমা (সুমি নামেও ডাকি হত)। নন্দলাল মুরমুর দুই মেয়ে- বাহা ও সনা। রঘুনাথ হলেন তৃতীয় সন্তান। চতুর্থ পুত্রের নাম দুবরাজ। সাঁওতাল সমাজের রীতি মেনেই নন্দলাল তাঁর তৃতীয় সন্তানের নামকরণ তার ঠাকুরদার নামেই রাখেন অর্থাত্ তৃতীয় সন্তানের নাম রাখা হয় ‘চুনু’। ছোটো বেলায় চুনুর অসুখ বিসুখ লেগেই থাকত। নাজেহাল পিতা একদিন এক ওঝা ডেকে এনে ঝাড়ফুঁক করান। সেই ওঝার পরামর্শ অনুযায়ী ‘চুনু’ নামের পরিবর্তন ঘটিয়ে রাখা হয় রঘু বা রঘুনাথ। জানা যায়, ‘রঘু’ কোন এক ওঝার নাম।
রঘুনাথের বয়স যখন সাত বছর তখন তাকে পাশের গ্রাম গাম্ভারিয়া ইউ. পি. স্কুলে ভর্তি করা হয়। শিশু রঘুনাথ ওড়িয়া ভাষা বুঝতে পারতেন না তবু তাঁকে ওড়িয়া ভাষাতেই পড়াশোনা আরাম্ভ করতে হয়।
গাম্ভারিয়া স্কুলের পর বহড়দা এম. ই. স্কুলে তাঁকে তৃতীয় শ্রেণীতে ভর্তি করা হয়। মেধাবী রঘুনাথ ১৯২২সালে এম. ই. পাশ করেন এবং বারিপাদা হাইস্কুল অফ্ ময়ূরভঞ্জ  (বর্তমানে এম. কে. সি. হাইস্কুল)-এ ভর্তি হন। এখান থেকেই ম্যাট্রিক পাশ করেন ১৯২৪সালে (মতান্তরে ১৯২৮সালে)। ১৯৩১-৩২সালে বারিপাদা পাওয়ার হাউস থেকে Apprenticeship করেন। তারপর, ময়ূরভঞ্জের দেওয়ান ডঃ পি. কে. সেন-এর উদ্দ্যোগে রঘুনাথ কোলকাতা, শ্রীরামপুর, গোসাবা থেকে Industrial Training লাভ করেন। পড়াশোনায় তাঁকে ইতি টানতে হয় কেন না দারিদ্র্যতার জন্য তিনি আর লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারেন নি।
রঘুনাথ মুরমুর কর্মজীবন শুরু হয় ১৯৩০-৩১সালে লোকগণনার অস্থায়ী কর্মী হিসাবে। এখানে কিছুদিন কাজ করার পর বারিপাদার পূর্ণ-চন্দ্র ইণ্ডাসট্রিয়াল ইনস্টিটিউটে Instructor হিসাবে কাজ করেন। ১৯৩৩সালে রঘুনাথ মুরমু বড়মতাড়িয়া মডেল ইউ. পি. স্কুলে ইনডাসট্রিয়াল শিক্ষক হিসাবে যোগ দেন। কিছুদিন পরেই এখানকার প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিযুক্ত হন। ১৯৪৬সালে রায়রংপুর হাইস্কুলে Promotion দিয়ে তাঁকে পাঠানো হয়। ১৯৪৬সালেরই ফেব্রুয়ারি মাসের ছয় তারিখ তিনি স্বেচ্ছায় চাকরী থেকে ইস্তফা দেন। ছোটবেলায় রঘুনাথ যখন স্কুলে পড়তেন তখন উড়িয়া ভাষায় পড়াশোনা করা তাঁর পক্ষে খুবই কষ্টকর হয়েছিল। মাতৃভাষায় কেন পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না সেকথা তাঁর মনে প্রশ্ন জাগায়। তিনি জানতে পারেন, নিজের মাতৃভাষায় লিপি নেই বলে মাতৃভাষায় পড়ার সুযোগ পাচ্ছেন না। তারপর থেকেই সাঁওতালি ভাষার জন্য লিপি উদ্ভাবনের কথা তাঁর মাথায় আসে। আসলে, সাধুরাম চাঁদ মুরমুর মতোই রঘুনাথ মুরমুও বুঝেছিলেন যে, সাহিত্যের বিকাশ ব্যতীত জাতির বিকাশ অসম্ভব এবং সাহিত্যের বিকাশে নিজস্ব লিপি একান্তভাবেই প্রয়োজন। তাই মামা সাওনা মুরমুর সঙ্গে বহু আলোচনার পর, অসম্ভব পরিশ্রম করে সাঁওতালি ভাষার ১৯২৫সালে লিপির সৃষ্টি করেন। নাম দেন-‘অলচিকি’।
১৯৩৮সালে অলচিকি প্রসারের জন্য কাঠের ছাপা মেশিন তৈরি করেন। ১৯৩৯সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বারিপাদার এক সভায় রঘুনাথ ছাপা মেশিন ও অলচিকি-কে জনসমক্ষে আনেন। মহারাজ তা দেখেন এবং খুশি হন। তারপরই প্রকৃতপক্ষে ‘অলচিকি’ প্রচারের কাজ শুরু হয়। জামশেদপুরের খেরওয়াল জারপা সমিতির সহযোগিতা লাভ করেন। তারপর কোলকাতার স্বদেশি টাইপ ফাউন্ড্রিতে গিয়ে রঘুনাথ ‘অলচিকি’-র টাইপ তৈরি করান। মুনিরাম বাসকের উদ্যোগে ‘চাঁদান প্রেস’-এর স্থাপন হয়। অলচিকি লিপিতে মুদ্রণের কাজ ত্বরান্বিত হয়। অলচিকি প্রচারের জন্য পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু ১৯৬০সালে ‘আদিবাসী সোশিও এডুকেশনাল এন্ড কালচারাল এসোশয়েশন’ (ASECA) বা আদিবাসী সমাজ-শিক্ষণ ও সাংস্কৃতিক সংগঠন তৈরি করেন। ওড়িশা, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও আসামে এই সংগঠন ছড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি গড়ে উঠে All India (Adibasi) Santal Council । অলচিকি প্রচারের আন্দোলন ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে।
সাঁওতাল জাতির যথার্থ শিক্ষা বিস্তারে অলচিকি লিপির উদ্ভাবনেই থেমে থাকেননি পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু। শিশুরা জাতির ভবিষ্যত্, তাদের সম্পর্কে দরদি মন নিয়ে এবং বিশেষ শিক্ষাভাবনা ও কল্পনার মিলনে লিখেছেন সচিত্র শিশু পাঠ্য বই ‘অল চেমেদ’। স্বদেশি ফিউন্ড্রির নিজস্ব কাঠের হরফে প্রথমে ছাপার কাজ শুরু। কাঠের ব্লক তৈরি করেছেন নিজে। ব্লকে নিজেই খোদাই করেছেন পরিচিত জীবজন্তু বা প্রাকৃতিক দৃশ্যের শিল্পরূপ। ইত্যাদি বিষয় আশ্চর্য সুন্দর শিল্পময়তায় কাঠের ব্লকে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। (পরবর্তিকালে যথারীতি ধাতু নির্মিত ব্লক ব্যবহৃত)। ‘অল উপরুম’ বইটিও শিশুপাঠ্য। একগুচ্ছ চিরন্তন সত্যকথা বা প্রাকৃতিক নিয়ম লিখেছেন শিশু মনস্তত্ত্বের উপযোগী করেই। ‘পারশি পহা’- য় অলচিকি লিপির প্রাথমিক রূপ এবং ‘পারশি অপাত্’ বইয়ে অলচিকি লিপির অঙ্কুরোদগম। জাতির উন্নতিতে স্বাস্থ্যই সম্পদ-এই সমাজহিতকর ভাবনা তাঁর ‘দাড়েগে ধন’ নাটকে সুন্দরভাবে চিত্রিত । অলচিকি লিপিতে লেখা ধারাপাত, যোগ-বিয়োগ, গুণ-ভাগ, ইত্যাদি শিশুপাঠ্য গণিত শিক্ষা ‘এলখা’ বইয়ে বিধৃত। ‘পারশি ইতুন’ তাঁর লেখা ইংরেজি শিক্ষার বই। বারিপাদার কালকাপুরে, ১৯৭৫সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারি অবধি তিনি নিজে এই বই থেকে ছাত্রদের শিক্ষা দেন। সাঁওতালি শিক্ষার জন্য সহজ ব্যাকারণ বই ‘রণড়’ লিখেছেন। বইটিতে তিনি বলেছেন-সাঁওতালি ভাষার সঙ্গে সংস্কৃতি ভাষার মিলের কিছু কথা। সামাজিক জীবনে সাঁওতালদের জন্ম-মৃত্যু-বিবাহ বিষয়ক নীতি বিধানের কথা লিখেছেন ‘বাঁখেড়’ বইয়ে । সমগ্র সাঁওতাল জাতির আত্মজিজ্ঞাসা ও প্রেরণামূলক অগ্রগতির ভাবনা ‘রাঃ আদড়’ বইয়ে চিত্রিত করেছেন । তাঁর উপদেশ মূলক গানের বই ‘লাকচার’। তাঁর ‘হিতাল’ গ্রন্থ তিনখণ্ডে মহাকাব্যধর্মী । পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রতিভার যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন তার পরিপেক্ষিতে তিনি বহু সম্মানে ভূষিত হয়েছেন ।
পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু কেবলমাত্র ‘অলচিকি’ লিপির স্রষ্টাই ছিলেন তা নয়, পাশাপাশি কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার  (যাত্রাপালা রচয়িতা) এবং বিদগ্ধ দার্শনিকও ছিলেন । তাঁর আদর্শে সাঁওতাল জনমানসে আলোড়নের সৃষ্টি হয়। স্বাধীনোত্তর ভারতে যখন ভাষা ভিত্তিক রাজ্য পুনর্গঠন শুরু হয় তখন পন্ডিত রঘুনাথ মুরমু-রই আদর্শে দীক্ষিত সুনারাম সরেনের নেতৃত্বে সাঁওতালরা ঐক্যবদ্ধ হন। ভাষা ভিত্তিক রাজ্যের দাবি তাঁরাও করেন অর্থাত্ সাঁওতালি ভাষার ভিত্তিতে সাঁওতালদের জন্য পৃথক রাজ্য । কিন্তু অদৃষ্টের চরম পরিহাস, স্বাধীন ভারতের সরকার ময়ূরভঞ্জের গুডুরিয়ায় ১৯৪৮সালে নিরস্ত্র সাঁওতালদের জমায়েতে নির্বাচারে গুলি চালায়। জালিয়ানওয়ালাবাগের হত্যাকাণ্ডকে স্মরণ করিয়ে দেয়। পন্ডিত রঘুনাথ মুরমুই যে সাঁওতালদের তাত্ত্বিক নেতা, তা সরকার বুঝতে পেরে তাঁকে গ্রেপ্তারের পরোয়ানা জারি করে। তিনি আত্মগোপন করেন ফলে তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। এ হেন এক বিরল ব্যক্তিত্ব ১৯৮২সালের ১লা ফেব্রুয়ারি তাঁর কর্মযজ্ঞ অসমাপ্ত রেখে পরলোকগমন করেন।

মহাপ্রাণ যোগেন্দ্র নাথ মণ্ডল।

যোগেন্দ্র নাথ মণ্ডল। বাবা সাহেব আম্বেদকরকে ভারতীয় সংবিধান সভায় নির্বাচিত করে পাঠানোর অন্যতম কারিগর ও তৎকালীন সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় দলিত নেতা ও Scheduled Caste Federation এর অন্যতম নেতা।

ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের ডেপুটেশন।













বাঁকুড়া জেলার খয়রাকানালী পোল্ট্রি ফার্মে সুপারভাইজার কর্তৃক আদিবাসী তরুনীর শ্লীলতাহানি ও যৌন নির্যাতনের প্রতিবাদে ভারত জাকাত মাঝি পারগানা মহলের (Bharat Jakat Majhi Pargana Mahal - BJMPM) এর নেতৃত্বে বাঁকুড়া জেলার ছাতনা থানায় গণ ডেপুটেশন ২০শে জুলাই ২০১৮।

৯ ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।



২১ শে জুলাই, ২০১৮ তৃণমূল কংগ্রেসের ২৫ তম শহীদ স্মরণ দিবসে কলকাতার ধর্মতলা সমাবেশ থেকে ৯ ই আগস্ট, ২০১৮ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই আগে গত বুধবার ১১ ই জুলাই, ২০১৮ উত্তরবঙ্গের উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক সভা থেকেও ৯ ই আগস্ট আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দিয়েছিলেন। এ বার তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো তথা পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে সরকারী বেসরকারি উদ্যোগে বিপুল উৎসাহে ৩০ শে জুন সাঁওতাল বিদ্রোহ ‘হুল’ দিবস পালন করা হয়েছিল সারা পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে।
৯ ই আগস্ট আদিবাসী দিবস কি ?
রাষ্ট্রসঙ্ঘের খাতায় ৯ অগস্ট দিনটি ‘ইন্টারন্যাশনাল ডে অব ওয়ার্ল্ড ইন্ডিজেনাস পিপল’ হিসেবে স্বীকৃত। ভারত, বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা তথা দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই দিনটি ‘আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস’ হিসেবে ১৯৯৪ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে।
সংযুক্ত রাষ্ট্র সংঘ (United Nations Organizations – UNO) আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ১৯৯৩ সালকে ‘আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী জনগোষ্ঠী বর্ষ’ ঘোষণা করে। ১৯৯৪ সালের ২৩ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রতিবছর ৯ আগস্ট বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ১৯৯৫ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ‘আন্তর্জাতিক বিশ্ব আদিবাসী জনগোষ্ঠী দশক’ ঘোষণা করা হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের উদ্বেগের প্রতি দৃষ্টি দেওয়া। ‘আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর অধিকার বিষয়ক জাতিসংঘ ঘোষণাপত্র ২০০৭’ অনুসারে আদিবাসীদের ৪৬টি অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ হয়েছে। আদিবাসী এলাকার খনিজ, বন ও প্রাকৃতিক সম্পদ আদিবাসীদের অনুমতি ছাড়া সরকার ব্যবহার করতে পারবে না।
প্রতিবছর এ দিন সারা বিশ্বে দিবসটি পালিত হয়। বিশ্বের ৭০টি দেশের প্রায় ৩৭ কোটি আদিবাসী জনগণ দিবসটি পালন করছে। ভারতে প্রায় ১০.৪ কোটি আদিবাসী বসবাস করেন যা ভারতের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৮.৬ %। পশ্চিমবাংলায় প্রায় ৬০ লক্ষ আদিবাসীর বাস যা পশ্চিমবাংলার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬ %। মূলধারার জনগোষ্ঠীর থেকে আদিবাসীদের পৃথক জীবন, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও ইতিহাস আছে। পশ্চিমবাংলায় মোট ৪০ টি আদিবাসী জনগোষ্ঠীকে ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদান করার জন্য।
পশ্চিমবঙ্গে তালিকাভুক্ত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ গোষ্ঠীগুলি – ১) ASUR, ২) KORWA, ৩) BAIGA, ৪) LEPCHA, ৫) BEDIA, BEDIYA, ৬) LODHA, KHERIA, KHARIA, ৭) BHUMIJ, ৮) LOHARA, LOHRA, ৯) BHUTIA, SHERPA, TOTO, DUKPA, KAGATAY, TIBETAN, YOLMO, ১০) MAGH, ১১) BIRHOR, ১২) MAHALI, ১৩) BIRJIA, ১৪) MAHLI, ১৫) CHAKMA, ১৬) MAL PAHARIYA, ১৭) CHERO, ১৮) MECH, ১৯) CHIK BARAIK, ২০) MRU, ২১) GARO, ২২) MUNDA, ২৩) GOND, ২৪) NAGESIA, ২৫) GORAIT, ২৬) ORAON, ২৭) HAJANG, ২৮) PARHAIYA, ২৯) HO, ৩০) RABHA, ৩১) KARMALI, ৩২) SANTAL, ৩৩) KHARWAR, ৩৪) SAURIA PAHARIA, ৩৫) KHOND, ৩৬) SAVAR, ৩৭) KISAN, ৩৮) LIMBU, ৩৯) KORA, ৪০) TAMANG।
পশ্চিমবঙ্গের ৪২ টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২ টি আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত – ঝাড়গ্রাম ও আলিপুরদুয়ার লোকসভা আসন দুটি। পশ্চিমবাংলার মোট ২৯৪ টি বিধানসভার আসনের মধ্যে ১৬ টি বিধানসভা আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত – ১) Kumargram, ২) Kalchini, ৩) Madarihat, ৪) Mal, ৫) Nagrakata, ৬) Phansidewa, ৭) Tapan, ৮) Habibpur, ৯) Sandeshkhali, ১০) Nayagram, ১১) Keshiary, ১২) Binpur, ১৩) Bandwan, ১৪) Manbazar, ১৫) Ranibandh, ১৬) Raipur। ভারতীয় সংবিধান অনুসারে শিক্ষা, চাকরি ও নির্বাচনের ক্ষেত্রে ৬% আসন আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের জন্য সংরক্ষিত। প্রতিটি সরকারী প্রকল্প রুপায়নের ক্ষেত্রে আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের অগ্রাধিকার দেবার কথা সরকারী গাইডলাইনে পরিষ্কার ভাবে বলা থাকে। এত সুযোগ সুবিধা ও সুরক্ষা কবচ থাকা সত্ত্বেও আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের যথাযথ উন্নয়ন হচ্ছে না। সরকারী পরিকল্পনা ও বঞ্চিত আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ মানুষদের মধ্যে বিশাল ফারাক থেকে যাচ্ছে।
কিন্তু প্রথমবারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদাধিকারী ব্যক্তি ৯ ই আগস্ট আদিবাসী দিবস পালনের ডাক দেওয়ায় আদিবাসী জনগোষ্ঠী তথা ‘Schedule Tribe (ST) বা তফশিলি উপজাতি’ দের মধ্যে আশার আলো জাগছে। এইবার সম্ববত আদিবাসীদের সমস্যার প্রতি সরকারী দৃষ্টি যত্নবান হবে।

জাল ST Certificate এর বিরুদ্ধে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়ার ডেপুটেশন।


জাল ST Certificate এর বিরুদ্ধে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়ার ডেপুটেশন।
জাল ST Certificate প্রদান ও জালিয়াতিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবিতে আগামী সোমবার ২৩ শে জুলাই, ২০১৮ বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কাছে আদিবাসী সামাজিক সংগঠন ‘নদীয়া-উত্তর ২৪ পরগণা মাঝি মাডোয়া’ এর নেতৃত্বে আদিবাসীরা প্রতিবাদপত্র ও ডেপুটেশন দেবেন। বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে ভর্তির তালিকায় অনেক অ-আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছেন। এইভাবে অ-আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় আসল আদিবাসীরা Schedule Tribe (ST) হিসেবে সুযোগ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। আদিবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষা করতেই এই ডেপুটেশন বলে জানান উদ্যোগতারা।

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...