SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): 01/16/19

Wednesday 16 January 2019

অনেক অধিকার মেয়েদের জন্য সংবিধানে লিখে গেছেন বাবাসাহেব আম্বেদকর




To Show The video click below link

http://festyy.com/wVDcqL

১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হলে ডঃ আম্বেদকর আইনমন্ত্রী নিযুক্ত হন। মেয়েদের অধিকার দেওয়ার জন্য তিনি সংসদে একটি বিল এনেছিলেন, সেটি হল- ''হিন্দু কোড বিল''। কিন্তু উচ্চবর্ণের সদস্যদের বিরোধিতার জন্য এই বিল পাশ হয়নি। এর প্রতিবাদে তিনি মন্ত্রীসভা থেকে পদত্যাগ করেন (11 অক্টোবর, 1951)।
এই বিলে যা যা ছিল তার কয়েকটি হলো-.
🔹(1) বাল্যবিবাহ রদ :- নারীশিক্ষার স্বার্থে মেয়েদের বিয়ের বয়স সর্বনিম্ন ষোলো বছর করা।
🔹(2) বহুবিবাহ প্রথার বিলোপ :- কোনো কারণ ছাড়া ইচ্ছামতো এক স্ত্রী থাকতে দ্বিতীয়বার বিয়ে করা যাবে না।
🔹(3) বিবাহবিচ্ছেদ আইন :- স্বামী বিনা কারণে ইচ্ছামতো স্ত্রীকে ত্যাগ করতে পারবে না। আবার স্ত্রীও অত্যাচারী বা ব্যভিচারী স্বামীকে পরিত্যাগ করতে পারবে।
🔹(4) মেয়েদের পিতার সম্পত্তিতে অধিকার :- ডঃ আম্বেদকর ছেলেদের মতো মেয়েদেরও পিতৃসম্পত্তিতে সমান অধিকারের ব্যবস্থা করেন এই বিলে।
🔹(5) বিধবা নারীর সম্পত্তি ও দত্তক নেবার অধিকার :-মৃত স্বামীর সম্পত্তিতে স্ত্রীর অধিকার দেওয়া হয় এই বিলে এবং ইচ্ছামতো দত্তকও নিতে পারবে।
ডঃ আম্বেদকরের এই চিন্তাধারার মধ্যে সব নারীদের মুক্তির বার্তা আছে। কিন্তু হিন্দুত্ববাদী পত্রপত্রিকায় এই বিলের বিরূপ সমালোচনায় বাবাসাহেব আম্বেদকরকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করা হয়। আম্বেদকরের বিরুদ্ধে গোঁড়া হিন্দুরা ভীষণ ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। অগত্যা প্রধানমন্ত্রী নেহরুর নির্দেশেই বিলটিকে প্রত্যাহার করা হয়।
🔴পরবর্তীকালে সংবিধান লেখার সময় মেয়েদের জন্য তিনি সাংবিধানিকভাবে এইসব আইন লিপিবদ্ধ করে গেছেন। তার মধ্যে কয়েকটি হলো -
🔹(আর্টিকেল 14) -সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সুযোগের সমান অধিকার
🔹(আর্টিকেল 15) - লিঙ্গ বৈষম্যের উপর নিষেধাজ্ঞা।
🔹(আর্টিকেল 15(iii))- নারীদের উপর ভেদভাবের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া ।
🔹(আর্টিকেল 39) - জীবিকা নির্বাহের সমান অধিকার এবং সমান কজের সমান বেতন।
🔹(আর্টিকেল 14)- কাজের জায়গায় মানবিক পরিবেশ এবং মাতৃত্বকালীন ছুটি।
🔹আর্টিকেল 24 iii(D) , iii(T) , iii(R) - পঞ্চায়েত রাজ ব্যবস্থায় মহিলাদের জন্য আসন সংরক্ষণ ।
এছাড়া আরও অনেক অধিকার মেয়েদের জন্য সংবিধানে লিখে গেছেন বাবাসাহেব আম্বেদকর। আজ মেয়েরা সেসব অধিকার ভোগ করছে। কিন্তু তারা জানে না তাদের এই অধিকার দানের মূল দাতা বাবাসাহেব আম্বেদকর l

বাজাল সরেন মুক্তি সংগ্রামের প্রতীক

মলিন্দ হাঁসদা। বাঁকুড়া। পব।

কার হুকুমে বাজাল কার কথাতে
রুপু সিং তাম্বলিকে কেটে দিলে?
সিদু'র হুকুমে মা গো কানু'র কথাতে
রুপু সিং তাম্বলিকে কেটে দিলাম।

হাতেতে শিকল বাজাল পায়েতে বেড়ি
তুমি যাচ্ছ বাজাল সিউড়ি থানাতে।
হাতে তিরয়ো মাগো পায়ে নুপুর 
আমি যাচ্ছি মাগো সিউড়ি মেলা দেখতে।
সাঁওতালি ভাষার মূল গান---- তকয় হুকুম তে বাজাল তকয় বলেতে------ ভাবানুবাদ। উপরের গানটি বহুল প্রচারিত, প্রচলিত। এই গান আজও সাঁওতাল সমাজ সংস্কৃতিতে প্রবাহমান।

বাজাল সরেন।ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন প্রচার হীন
বীর সৈনিক। বর্তমান ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলার সুন্দর পাহাড়ি ঢোকার মুখে বারি বাস স্ট্যান্ড গ্রামে বাড়ি । সাঁওতাল বিদ্রোহের আগে। যে সময় সিধু কানু অত্যাচার, শোষণ থেকে মুক্তি পেতে জনমত তৈরী করতে,হুলের প্রস্তুতি নিতে বিভিন্ন জায়গায় সভা করছেন।সেই সমস্ত সভায় যোগদান করে বাজাল মুক্তির আশা, স্বাদ অনুভব করেন।
সেই সমস্ত অনুপ্রেরণা থেকেই এলাকার সুদখোর, রক্ত শোষক,নারীবাজ ,অত্যাচারী রুপু সিং তাম্বলি মহাজনকে
তরোয়ালের আঘাতে শরীর থেকে মাথা সরিয়ে দিয়ে ছিল। আর হ্যাঁ, বাজাল বাঁশি বাজাতে পারতেন। পরে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে, তাঁকে সিউড়ি জেলে নিয়ে যাওয়ার সময়ের এই গান।বাজাল সরেনকে অমর করে রেখেছে। 
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন সাঁওতালদের মধ্যে যারা দেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, বাজাল সোরেনের নাম অবশ্যই প্রথম সারিতে স্থান পাবে। সাঁওতাল হুলের ইতিহাস কিছু লেখা ,কিছু জানা যায়। কিন্তু বাজাল সরেন কে নিয়ে কিছু লিখতে অপমান বোধ করেন সেই সময় কার লেখককূল।ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন সাঁওতালদের অবদান উল্লেখ করার মতো। কিন্তু ইংরেজ
দের পা চাটা দেশি বিদেশি ঐতিহাসিক রা সাঁওতাল বিদ্রোহীদের সঠিক ইতিহাস লিখতে কুণ্ঠা বোধ করেছেন।অপমান বোধ করেছেন। আর এই জন্যই বাজাল সোরেনের মতো কত যে বীর বান্টা ইতিহাসের আড়ালে চলে গেছেন, তার ইতিহাস যদি পুনঃরুদ্ধার হয় 
তাহলে বদলে যেতে পারে দেশের ইতিহাস। আর এই জন্যই বীরভূমের সিউড়ি 'র আব্দারপুর আদিবাসী সু সার গাঁওতা সাঁওতাল দের ইতিহাস সন্ধানে নেমে পড়েছেন।
2019 সালের 19 শে জানুয়ারি। শনিবার। দুপুর বার টা।আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে বাজাল সরেন কে নিয়ে এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে।।বাজাল সরেন কে পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় "স্মরণিকা " প্রকাশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেমিনারে উপস্থিত থাকবেন - তেতরে পত্রিকার সম্পাদক-মহাদেব হাঁসদা, সিলি পত্রিকার সম্পাদক-কলেন্দ্র নাথ মান্ডী, প্রখ্যাত সাঁওতালি সাহিত্যক-সারদা প্রসাদ কিস্কু, সার সাগুন পত্রিকার সম্পাদক-মলিন্দ হাঁসদা, বাংলা দেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতশিল্পী -স্টিফান টুডু, গড্ডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপিকা-হোলিকা মারান্ডি, উমুল পত্রিকার সম্পাদক-অধ্যাপক ড.বিনয় সরেন, লেখক ড.জলধর কর্মকার, সাইথিয়ার জয়েন্ট বিডিও- বংশীবদন মুরমু, যাদবপুর কেপিপি'র সুপারেন্টেডেন্ট-রমেশ কিস্কু, সমাজ সেবী- ডা:সুরজিৎ সিং হাঁসদা, সমাজ সেবক ডা:শিব শঙ্কর সরেন, সমাজ সেবী-বড় বাস্কে, বাকজুলু পত্রিকার সম্পাদক- শিবু সরেন। বিশিষ্ট লেখক-গোকুল হাঁসদা, বিখ্যাত সাহিত্যক-লক্ষী নারায়ন হাঁসদা, ঝাড়খণ্ডের খ্যাত নামা লেখক-জনজন্তু সরেন।এবং বিভিন্ন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্রছাত্রী।
আয়োজন থাকছে-"বীর বান্টা বাজাল মেলা-2019" 
তাতে মিলবে সাঁওতালি ফুড প্লাজা। বিকাল থেকে পাতা ও লাগড়ে নৃত্য প্রতিযোগিতা। বসবে সাঁওতালি বই পত্রের দোকান পাট। মেলায় পাওয়া যাবে খাঁডি শাড়ি,লুঙ্গি পাঞ্চি, সান্তালি ড্রেস, তির ধনুক, টাঙ্গি, তরোয়াল,, মাদল টামাক, তিরয়ো বানাম, রেগড়া, লিপুর, ঝুনকা পাইন দোকান। 
আয়োজন কমিটির সম্পাদক চন্দ্র মোহন মুরমু জানিয়েছেন-মেলায় মিলবে -বাজু, বাংকি, হাঁসলি, তাগা, মালা ,সুলক, মারাঃ পিঞ্চার, তারা পানকানা,ফিরি দোকান তার সঙ্গে সাঁওতালদের সংসারে ব্যবহৃত সমস্ত সামগ্রী। 
মেলা কমিটির সভাপতি- বড় টুডু এক বার্তায় জানান-সারারাত ব্যাপী থাকছে অর্কেস্ট্রা অনুষ্ঠান। সঙ্গীত পরিবেশন করবেন - প্রখ্যাত, বিখ্যাত, নামী দামি সঙ্গীতশিল্পী- কল্পনা হাঁসদা, রথীন কিস্কু, স্টিফান টুডু, কেরানী হেমব্রম, সাগুন কুইলি-ডিগির সরেন। 

বাজাল সরেন শুধু শহীদ নন। বাজাল যে জাদুকরী তিরয়ো বাদক। বহু বছর পর। বাজালে আবির্ভাব আবার আব্দারপুর ময়দানে। তাঁর উপস্থিতি অনুভব করতে কাতারে কাতারে, হাজারে হাজারে সাঁওতাল মানুষজন হাজির হবেন বলে অনুমান করা হচ্ছে। 

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...