SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): 09/27/18

Thursday 27 September 2018

জিতুর রক্তে রাঙা সাঁওতাল-রাজের গড় আদিনা মসজিদ

Image may contain: outdoor
জিতুর রক্তে রাঙা সাঁওতাল-রাজের গড় আদিনা মসজিদ
চন্দ্রশেখর
সিধো-কানু-র বিদ্রোহ ‘দামিনে কোহ’-র অনেক পরে মালদার বুকে জ্বলে উঠেছিল সাঁওতাল বিদ্রোহের আগুন। সেই অগ্নিশিখার নাম জিতু সাঁওতাল। জিতুর কাহিনী বাঙলার সামাজিক-রাজনৈতিক জীবনের এক অনন্য উপাখ্যান। না, বাঙলার কোনও ক্লাসের ইতিহাস বইতে জিতু সাঁওতালের নাম নেই, কলকাতায় কোনও চক নেই। অথচ, জিতুর কাহিনী জানলে মানুষের অধিকারের সংগ্রামকে দমন করতে ধনিক শ্রেণি আর প্রশাসন কিভাবে হাত মেলায়, কিভাবে ধর্মীয় শক্তি প্রতিবাদী আন্দোলনকে দমন করতে ধর্মকে ব্যবহার করে আর পরে চোখ পালটায়, তা স্পষ্ট হবে।
এসব কথা এখন বলে রাখি, কারণ আমরা তো মালদা গিয়ে হজরত পাণ্ডুয়ায় আদিনা মসজিদ দেখতে যাব। এত কথা কি তখন বলার সময় হবে?
মালদহের হবিবপুরের মঙ্গলপুরায় কীর্তনের আসর বসেছে। কোচাকাদর গ্রামে কীর্তনে শিবের গান চলছে। তাঁর ঢঙ – গম্ভীরা। এই গ্রামেই বাড়ি বীরেন হেমব্রমের। আদি বাড়ি বিহারের দুমকায়। হবিবপুর থেকে কয়েক ক্রোশ দূরেই দুমকার সোহোরপুরা। চাষবাসের সুবিধার জন্য বীরেন তাঁর স্ত্রী তেলে মুর্মুকে নিয়ে চড়াই-উতরাই ভেঙে বনবাদার ডিঙিয়ে এসেছিল এই কোচাকাদর গ্রামে। দুমকা থেকে মালদায় আসা প্রথম আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অংশ তাঁরা। তাঁর ছেলে জিতু বেশ ডাগরডোগর। লড়িয়ে ছেলে। বাবা-মায়ের খুব আনন্দ, ছেলের দেবদ্বিজে ভক্তি দেখে। নিজেরা তো বোঙ্গাকে, পিলচু বুড়ি আর পিলচু হারামকে দেবতা মেনেছেন। জিতু মানে শিবজীকে। সত্যম শিবম নামে একটা ধর্মসঙ্ঘে আছে সে। সেখানে বাবাজীরা আছেন। তাঁরা কীর্তন শেখান। পুজোআচ্চা হয়, প্রসাদ দেয় হিন্দু বাবুদের আর আদিবাসীদের সবাইকে। এলাকায় অনেক মুসলমান আছেন, তাদের দেয় না।
মালদা ছিল তুর্কি আমল থেকে মুসলমান সুলতান-নবাবদের অধীনে। ফলে এখানকার বড় বড় জমিদারদের বেশির ভাগই ছিল মুসলমান। স্থানীয় জমিদারদের, কি হিন্দু বা মুসলমান, অত্যাচার ছিল খুব বেশি। তাদের বিরুদ্ধে সাধারণ বাঙালি হিন্দুদের মাথা তোলার সাহস ছিল না। তাঁর উপর ধর্ম তাদের ‘কপালের ফের’, ‘পূর্ব জন্মের পাপের ফল’ ইত্যাদি ট্যাবলেটে প্রতিরোধের ইচ্ছাটাকেই দমন করে রেখেছিল। নীল চাষীদের উপর ইংরেজের দমননীতি দেখে আরও দমে গিয়েছিল তাদের মন। কিন্তু, আদিবাসীদের মনে ‘দামিনে কোহ’, সিধু-কানু, বিরষার স্মৃতি, শরীরে তাদের রক্ত। জিতু তাদের মধ্যে সবচেয়ে সাহসী প্রতিবাদী। জিতু তাদের ‘সাঁওতাল রাজ’-এর স্বপ্ন দেখায়। লড়ার কথা বলে। আর, হিন্দু মহাসভার ধর্মগুরুরা জিতুকে কীর্তন করার কথা বলে, শিবের কথা বলে, সঙ্গে মুসলমানদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য উসকে দেয়।
জিতু বোঝে, মুসলমান মানে জমিদার। সে স্মরণ করায় ‘চায় চম্পা’-র কথা। আদিবাসীদের ইতিহাস বলে, সিন্ধু সভ্যতায় গোটা ভারত ভূখণ্ডটাই ছিল ‘চায় চম্পা’ আর তাঁর পশ্চিমে ছিল গান্ধার (কান্দাহার)। সে গ্রামবাসীদের বলে ‘সাঁওতাল রাজ’ স্থাপন হলে চাষীকে ফসলের দু' ভাগ জমিদারকে দিয়ে না খেয়ে মরতে হবে না। সাঁওতাল সরকারকে মাত্র এক ধামা ধান দিতে হবে কর হিসাবে। আর সাঁওতালরা সবাই হবেন স্বাধীন। স্বাধীনতার স্বপ্ন উজ্জীবিত করে সাঁওতালদের।
১৯২৪ সাল। তাঁর আগেই চম্পারণের কৃষক আন্দোলন করেছেন। গান্ধীজী তখন ব্রিটিশের বিরুদ্ধে সত্যাগ্রহ আর অসহযোগ আন্দোলন করে চলেছেন। জিতুর কাছে ‘গান্ধিবাবা’-র (মনে পড়ে ঢোঁড়াই-এর গানহী বাবা) রাজ মানে সেখানে ‘সাহুকার, জোতদার, জমিদার’ থাকবে না। সব জমি হবে চাষীর নিজের। সাহুকার মানে যারা গরিব চাষীদের ঋণের ফাঁদে ফেলে জমি লুঠে নেয়। গান্ধী কে, তা না জানলেও জিতু নাম নেয় 'গান্ধী সেনাপতি'। ‘গান্ধী’ মানে তাদের কাছে ইংরেজ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।
একদিকে জমিদারদের উপর রাগ, অন্যদিকে ব্রিটিশের বিরুদ্ধে গান্ধীজীর সংগ্রাম আর পিছনে হিন্দু মহাসভার ধর্মীয় উসকানি – জিতু ঝাঁপ দিল ‘সাঁওতাল রাজ’ প্রতিষ্ঠার জন্য। তীর-ধনুক, টাঙ্গি, বল্লম, তলোয়ার নিয়ে সাঁওতালরা রাজ প্রতিষ্ঠা করতে গেল। না, কাউকে হত্যা করার দিকে নয়, তাঁরা নামল মাঠে, জমিদারের ক্ষেতের ফসল কেটে তুলতে লাগলো। জিতুর বিশ্বাস, এভাবেই সাঁওতাল রাজ প্রতিষ্ঠা হবে। গান্ধীরাজ আসবে।
ফসল লুঠতে এলে বাধাও এল। সেই সংঘর্ষে আদিবাসীদের তীরে একজন নিহত হল। পুলিশ জিতুকে গ্রেফতার করল। ছাড়াও পেল। এর পর থেকে বার বারই জিতুকে নানা অজুহাতে কারাগারে পাঠানোর খেলা শুরু হল জমিদার আর ইংরেজ প্রশাসনের ষড়যন্ত্রে। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে হিন্দু মহাসভার লোকেরা মুসলমানদের বিরুদ্ধে জিতুর মগজ ধোলাই করতে শুরু করলো। সাঁওতালদের হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তর, আদিবাসীদের প্রিয় গরু-শুয়োরের মাংস না খাওয়া আর মূর্তি পুজোর জন্য চাপ দিতে থাকলো। শিক্ষা আর কূট বুদ্ধির অভাবে থাকা জিতু ভাবতেও পারেনি এভাবে তাঁকে সাম্প্রদায়িক দ্বন্দ্বের চোরা টানে ফেলে দেওয়া হবে।
কিভাবে তখন আদিবাসীদের প্রতারণা হতো, তাঁর নমুনা পাওয়া যায়। কেউ দশ কি বারো টাকা ধার নিয়েছিল মহাজনের থেকে, ফেরাতে পারেনি। তাঁর জমি চলে গেছে জমিদারদের দখলে। মহাজনের থেকে এক মুঠো নুন নিয়েছিল। সেই নুনের ঋণ শত মুঠোতেও মেটেনি, জমিটা গ্রাস করেছে মহাজন। এমন সম্যে ১৯৩১-এ অক্টোবরে কোতোয়ালির জমিদাররা দাবি করলো, ফসলের তিন-ভাগের দু' ভাগ জমিদারকে দিতে হবে। সাঁওতালরা জিতুর নেতৃত্বে তা দিতে অস্বীকার করলো। এই নিয়ে জমিদারের লেঠেলদের সঙ্গে জিতুর সাঁওতালদের সংঘর্ষ হল। পুলিশ এল, কিন্তু পুলিশ অদ্ভূতভাবে জমিদারদেরই পক্ষ নিল। জমি আর পুঁজির পাশেই থাকল পুলিশ, আজও যেমন থাকে, সর্বহারা মাটির সন্তানেরা বঞ্চিতই রইল।
আরও এক বছর কাটল। ১৯৩২-এর ডিসেম্বরে জিতুর নেতৃত্বে সাঁওতালরা আবার বিদ্রোহ করেন। ততদিনে চট্টগ্রামে সূর্য সেনের নেতৃত্বে যুব বিদ্রোহে ইংরেজের শিরদাঁড়া দিয়ে ঠাণ্ডা স্রোত নেমে গেছে। লণ্ডনে গোল টেবিল বৈঠকে গান্ধীজীকে ডেকে বৈঠক করেছে ইংরেজ। ভারতে একের পর এক বিপ্লবী কাজকর্ম মানুষকে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনে উৎসাহ জোগাচ্ছে। আদিবাসীরা তাদের সরকার প্রতিষ্ঠা করবেন বলে মালদা শহরে কিছু দূরে আদিনা মসজিদ দখল নেয়। এই মসজিদ ১৩৬৪ থেকে ১৩৭৪-এর মধ্যে প্রতিষ্ঠিত হলেও বহুদিন ধরেই এখানে আর নামাজ পড়া হয় না। জিতুর প্রতিনিধি হিসাবে দিনাজপুরের বংশীহারির রাম ওরফে সাউনা এসে আদিনা দখল করে। রাজ প্রতিষ্ঠা করে। গড় তৈরি হয়। জিতু সাঁওতালের নেতৃত্বে বিদ্রোহে জমিদাররা কোণঠাসা হয়ে যায়।
প্রায় ৬০০ সাঁওতাল যোদ্ধা ১৯৩২-এর ১৩ ডিসেম্বর দখল নেয় আদিনার। দখল মুক্ত করতে আসে পুলিশ। সাওতালদের গ্রেফতারের চেষ্টা হলে শুরু হয় যুদ্ধ। একদিকে তীর-তলোয়ার-বল্লম; অন্যদিকে গুলি। পাঁচ জন সাঁওতাল নিহত হয়। তীরের ঘায়ে একজন আর জিতুর তলোয়ারের ঘায়েও আরেকজন কনস্টেবলের মৃত্যু হয়। জেলাশাসক, পুলিশের সুপার থেকে শুরু করে বিরাট বাহিনী ঘিরে ফেলে আদিনা। তাঁরা প্রথমে বোঝানোর চেষ্টা করে জিতুদের। ব্যর্থ হয়ে ঘুষ দেওয়ার চেষ্টা হয় জিতুকে। তাতেও ব্যর্থ হয় পুলিশ। জিতুরা জানিয়ে দেয়, ব্যক্তিগত লাভের জন্য এই বিদ্রোহ নয়। সাঁওতালদের জমি ফেরত দিলে তবেই বিদ্রোহ তুলে নেওয়া হবে। এই সম্যে কেউ ভয়ে চাষের মাঠেও যেত না। মাঠে পা রাখলেই উড়ে আসতো তীর।
এরপরের ঘটনা নানা মতে পল্লবিত। শোনা যায়, পুলিশের গুলিতে মৃত্যু হয় জিতুর। তবে এটা ইংরেজের ভাষ্য। স্থানীয় আদিবাসীদের মতে, পুলিশ আর জিতুদের মধ্যে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দেওয়া হয় কোতোয়ালির জমিদারদের। তাঁরাই ইংরেজের সবচেয়ে আস্থাভাজন সেই সময়ে। কোতোয়ালির তৎকালীন প্রধান জমিদার সমঝোতার প্রস্তাব দেয় জিতুদের। আদিনার ভিতরেই সেই বৈঠক ডাকা হয়। হাতিতে চেপে জমিদার আসেন মেহরাবের পিছনে। বন্দুকধারী পুলিশ তাঁকে ঘিরে রেখেছে। জিতু মাত্র কয়েকজনকে নিয়ে এগিয়ে আসার সময়েই জমিদারের বন্দুক গর্জে ওঠে। জিতু নিহত হন। জিতু সামনে এসে দাঁড়ালে তাকে গুলি করে হত্যা করেন কোতোয়ালির জমিদাররা। গুলি চালিয়ে বন্দুকের মুখে ১৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মসজিদের ভেতরে মিহরাবে যার দাগ আজও গুলির আছে। জিতু হেমব্রমের মৃত্যুর পর আদিবাসীদের আন্দোলন নেতৃত্বের অভাবে আর দানা বাঁধতে পারেনি।
আর, কোতোয়ালির জমিদারদের ইংরেজ সরকার ‘খান চৌধুরী’ জমিদারের উপাধি দেয়। জিতুর মৃত্যুতে আদিবাসীদের বুকে গভীর আঘাত লাগলেও ‘অসভ্য সাঁওতালদের’ বিদ্রোহ দমন করাকে দৃঢ় সমর্থন জানায় হিন্দু মহাসভার স্থানীয় নেতারা, যাদের কারও আছে জমিদারি, কারণ মহাজনী ব্যবসা, কেউ সাহুকার।
জিতুর আন্দোলন কিন্তু পুরোপুরি ব্যর্থ হয়নি। এক অন্য ধরণের আন্দোলন দেখল মানুষ, যে লড়াইয়ে ক্ষমতার চেয়েও বড় ছিল ফসলের উপর অধিকারের প্রশ্ন। জমির প্রশ্ন। কৃষকের হাতে জমির অধিকারের প্রশ্ন। ‘লাঙল যার, জমি তার’- এই সত্যটাই উঠে নেসেছিল। তাঁর প্রমাণ পাওয়া গেল ১৯৩৩-এ। জমিদারদের অত্যাচারে আর কৌশলে আদিবাসী সমাজ মূল স্রোত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বিদ্রোহ করেছে, এটা বলা হল জিতু সাঁওতালের বিদ্রোহ প্রসঙ্গে গড়া ইংরেজের তদন্ত কমিটির প্রধান স্পেশাল অফিসার ক্ষিতিজ চন্দ্র বর্মণের রিপোর্টে। ১৯২৩-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে শুনানী করে তিনি সাঁওতাল ও ওরাওঁদের জমির উপর অধিকার কায়েমের পক্ষে অনেকটাই কাজ করে যান।
আদিনা
মালদা শহর বা ইংলিশ বাজারের থেকে ২০ কিমি দূরে ইতিহাস বিখ্যাত আদিনা মসজিদ। দিল্লীর নবাব ফিরোজ শাহ তুঘলককে পরাজয়ের স্মারক হিসাবে এটি ১৩৬৪ থেকে ১৩৭৪-এর মধ্যে এটি বানান ইলিয়াস বংশের দ্বিতীয় সুলতান সিকান্দর শাহ। সিরিয়ার উমাইয়া মসজিদের আদলে তৈরি উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত মসজিদটির আয়তন ৫২৪ ফুট লম্বা ও ৩২২ ফুট চওড়া। গঠনশৈলী ও বিশালত্বে অনন্য মসজিদটি দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ। ঊনবিংশ ও বিশ শতকে বড় বড় ভূমিকম্পে এর পিলার ও ছাদ ভেঙেছে।
স্থাপত্য শিল্প, কারুকার্য ও বিশালতায় এই মসজিদ অতুলনীয়। এ মসজিদটি সুলতান সিকান্দর শাহ প্রচুর অর্থ খরচ করে বানান। এ মসজিদে সুলতান, তার পারিষদবর্গ ও পাণ্ডুয়ার প্রায় দশ হাজার অধিবাসী একসঙ্গে জুম্মার নামাজ পড়তেন। ভেতরে ৪০০ ফুট লম্বা ও ১৫৫ ফুট চওড়া প্রাঙ্গণ আছে, যেটা পুরু দেয়াল দিয়ে ঘেরা। এতে ২৬০টি থাম ও ৩৮৭টি গম্বুজ আছে। এখানে ৯৮টি খিলান ছিল। অনেকটাই ধ্বংসপ্রাপ্ত এই মসজিদের সংরক্ষণের কাজ করছে ভারতীয় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। নীলচে-ছাই রঙা কষ্টিপাথরে তৈরি 'মিহরাবের অংশটির কারুকাজ সংরক্ষণ করেছে।
দামাস্কাসের বড় মসজিদের ধাঁচে তৈরি এই মসজিদের কিছু উপাদান অমুসলিম শিল্পরীতির। মসজিদটির মাঝে ছাদহীন চত্বরটি ৪২৬.৬ ফুট লম্বা ও ১৪৭.৭ ফুট চওড়া। কলামের ওপর ছাদবিশিষ্ট এ গঠনশৈলীর নাম 'হাইপোস্টাইল'। অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশে এ ধাঁচের একমাত্র মসজিদ এটি। পশ্চিমে নামাজের অংশটিকে দুটি কক্ষে ভাগ করেছে একটি ৭৮ ফুট লম্বা ৩৪ ফুট চওড়া অলিন্দ, যার উচ্চতা ৬৪ ফুট। দক্ষিণ-পূর্বে আর্চবিশিষ্ট তিনটি তোরণ পেরিয়ে মসজিদে ঢুকতে হতো। এখন পূর্ব দিকের প্রবেশ পথটিই আছে। এছাড়া উত্তর-পশ্চিমে তিনটি পথ আছে।
ভিতরে মেঝে থেকে ৮ ফুট উঁচুতে বাদশাহর নামাজের স্থান 'বাদশাহ কি তখত', যার পিছনে পাথরের জালির আড়ালে সুলতান পরিবারের মহিলারা নামাজ পড়তেন। মূল গম্বুজটি রয়েছে কেন্দ্রীয় অলিন্দের শেষে। গম্বুজে খুদিত আছে ইসলামিক ও হিন্দু সংস্কৃতির বহু মোটিফ। বাদশাহ-কি-তখতের অভ্যন্তরের ইংরেজি 'এল' আকৃতির অলিন্দের শেষের দুটি দরজা। তার একটির ভেতরের সিকান্দর শাহর সমাধি। অনেকের মতে, এটি তার আসল সমাধি নয়, বরং শাহের প্রবেশপথ।
(ছবি - ইন্টারনেট থেকে। মাঝের কালো দেওয়ালটি মেহরাব। এতে গুলির চিহ্ন আজও আছে)

সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের জন্য জারি থাকবে সংরক্ষণ


সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের জন্য জারি থাকবে সংরক্ষণ, রায় দিল সুপ্রিম কোর্ট।

সরকারি চাকরিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোনও রকম শর্ত আরোপ করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিল ভারতের সর্বোচ্চ আদালত তথা সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮ এই রায় দিল সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ। একই সঙ্গে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য আরও ক্ষমতাসম্পন্ন সাত সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চে নিয়ে যাওয়ার আর্জিও খারিজ করে দিয়েছে ভারতের শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টি সুপ্রিমো মায়াবতী।
সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে পদোন্নতিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষণ চালু রাখা উচিত কিনা, মামলা ছিল তাই নিয়েই। ২০০৬ সালের একটি মামলার রায়ে ভারতের শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, প্রতিটি পদোন্নতির ক্ষেত্রে তা আদৌ প্রয়োজন কিনা, সেই তথ্য জোগাড় করতে হবে। তার পরই তফশিলি জাতি ও উপজাতি প্রার্থীরা পদোন্নতিতে সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন। এক্ষেত্রে ওই প্রার্থী আদৌ কতটা পিছিয়ে পড়া, সরকারি চাকরিতে সংরক্ষিত পদের কোনও অভাব আছে কিনা, এবং সামগ্রিক প্রশাসনিক দক্ষতার বিষয়গুলি মাথায় রাখার কথা জানিয়েছিল শীর্ষ আদালত। নতুন রায়ে এই তথ্য জোগাড় করার কোনও বাধ্যবাধকতা নেই বলেই জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্র নেতৃত্বধীন পাঁচ সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
২০০৬ সালের রায়ের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে আবেদন জানিয়েছিল কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি। তাদের যুক্তি ছিল সুপ্রিম কোর্টের আগের রায়টি সরকারি চাকরিতে তফশিলি জাতি ও উপজাতি (SC/ST) প্রার্থীদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অহেতুক শর্ত আরোপ করছে। সরকারি চাকরি পেলেও তফশিলি জাতি ও উপজাতি শ্রেণির মানুষেরা সামাজিক সম্মান পাওয়ার দিক থেকে পিছিয়েই থাকেন। তাই পদোন্নতির ক্ষেত্রেও কোনও শর্ত রাখা উচিত নয়। অন্যদিকে সংরক্ষণ বিরোধীদের সওয়াল ছিল, একবার সরকারি চাকরি পেলেই একজন তফশিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের সামাজিক উত্তরণ ঘটে। তাই পদোন্নতিতে আর তাঁর সেই সুবিধে পাওয়ার কথা নয়। যদিও এই যুক্তিকে আমল দেয়নি শীর্ষ আদালত। তাই সরকারি চাকরির পদোন্নতিতে সংরক্ষণ চালু থাকার পথ আরও মসৃণ হলো শীর্ষ আদালতের এই রায়ে।
Image may contain: 2 people
আগামী ১০ ই অক্টোবর, ২০১৮ মালদা জেলায় ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা (Jharkhand Mukti Morcha - JMM) এর কর্মী সভা। উপস্থিত থাকবেন ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার পশ্চিমবাংলা রাজ্য সভাপতি পরেশ মারান্ডি, পশ্চিমবাংলা রাজ্য সম্পাদক বিট্টু মুরমু, ঝাড়খণ্ড রাজ্যের প্রাত্তন খাদ্য প্রতিমন্ত্রী লবিন হেম্ব্রম, দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি লক্ষণ মুরমু, মালদা জেলা সভাপতি সোমনাথ হেম্ব্রম, মালদা জেলা সম্পাদক ইমানুয়েল হেম্ব্রম, সহ কেন্দ্রীয় ও রাজ্য স্তরীয় নেতা কর্মীবৃন্দ

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...