SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): সরকারী চাকরিতে এসসি/এসটি (SC/ST) দের পদোন্নতিতে সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে।

Tuesday 28 August 2018

সরকারী চাকরিতে এসসি/এসটি (SC/ST) দের পদোন্নতিতে সংরক্ষণ নিয়ে প্রশ্ন সুপ্রিম কোর্টে।



গত শুক্রবার ২৪ ই আগস্ট ২০১৮ সংরক্ষণ সংক্রান্ত এক মামলায় প্রশ্ন উঠল যে তফশিলি জাতি-উপজাতিরা কি আজীবনই পিছিয়ে থাকবেন? সরকারি চাকরিতে নিয়োগের সময় ‘কোটা’ কি যথেষ্ট নয়, যে জীবনভর পদোন্নতিতেও ‘কোটা’ দিয়ে যেতে হবে?
সরকারী চাকরির পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে ‘ক্রিমি লেয়ার’ অর্থাৎ অবস্থাপন্ন তফশিলি জাতি-উপজাতিদের বাদ দেওয়া যায় কি না, তা নিয়েই এ দিন সওয়াল-জবাব চলছিল শীর্ষ আদালতে। পদোন্নতিতে সংরক্ষণের পক্ষে সওয়াল করছিলেন অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা, ইন্দিরা জয়সিং-সহ তাবড় আইনজীবীরা। প্রত্যেকেরই দাবি, বদল আনা হোক ২০০৬ সালে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া নাগরাজ রায়ে, কারণ তা এসসি-এসটিদের পদোন্নতিতে সংরক্ষণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সাত বিচারপতির বৃহত্তর সাংবিধানিক বেঞ্চকে দিয়ে এই রায় পুনর্বিবেচনা করানোর পক্ষে তাঁরা।
সওয়াল চলাকালীনই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ বলেন, ‘পিছিয়ে পড়ার নিরিখেই চাকরিতে ঢোকার সময় সংরক্ষণ দেওয়া হয়। এতে কারও কোনও সমস্যা থাকার কথা নয়। কিন্তু, কোনও দিক বিচার না করে যে ভাবে একই কারণে এসসি-এসটি কর্মীদের পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে, এটা উদ্বেগের।’ এর পর বিচারপতিরা বলেন, ‘ধরুন কোনও ব্যক্তি সংরক্ষণের জোরে আইএএস পরীক্ষায় পাশ করলেন, পরে পদোন্নতিতে সংরক্ষণের জেরে সচিব পর্যায়ে উন্নীত হলেন। ওই ধরনের বর্ষীয়ান আমলার নাতিকেও কি পিছিয়ে পড়া শ্রেণি ধরে নিয়ে আজীবন পদোন্নতিতে সংরক্ষণ দিয়ে যেতে হবে?’
যে নাগরাজ রায় নিয়ে এই মামলা, তার মূল বক্তব্য হল, পিছিয়ে পড়া শ্রেণির অন্তর্ভুক্ত কর্মীদের সংরক্ষণের ভিত্তিতে পদোন্নতি দেওয়া যেতেই পারে কিন্তু কোনও কর্মীকে ‘কোটা’য় ‘প্রোমোশন’ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে তিনটি বিষয় খতিয়ে দেখতে হবে – প্রথমত ওই কর্মী কতটা পিছিয়ে রয়েছেন, দ্বিতীয়ত ওই চাকরিতে এসসি-এসটি কর্মীর অনুপাত কত, তৃতীয়ত এর জেরে প্রশাসনের সার্বিক মান এবং কর্মক্ষমতায় কোনও প্রভাব পড়বে কি না। এই রায় পুনর্বিবেচনার দাবি নিয়ে আদালতে যায় কেন্দ্র। একই দাবি জানায় তফশিলি জাতি-উপজাতিদের সংগঠনও। তাদের বক্তব্য, কেউ কতটা পিছিয়ে তার কোনও সার্টিফিকেট হয় না। এই বক্তব্যকে সমর্থন করে এ দিন অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল শীর্ষ আদালতে বলেন, কোনও জাতি বা উপজাতিকে একবার ‘পিছিয়ে পড়া’ তালিকায় যুক্ত করা হলে এবং রাষ্ট্রপতি তাতে সিলমোহর দিয়ে দিলে, তাঁদের নতুন করে পিছিয়ে পড়ার প্রমাণ দিতে হয় না। পাল্টা সওয়ালে আইনজীবী শান্তি ভূষণ বলেন, ‘সরকার চাইলে শীর্ষস্থানীয় পদগুলির জন্য সরাসরি বিজ্ঞাপন দিয়ে লোক চাইতে পারে, সেক্ষেত্রে সংরক্ষণ দেওয়া হোক। তাতে কোনও অসুবিধা নেই। কিন্তু, শুধুমাত্র সংরক্ষণের নিরিখে শীর্ষপদ বিলি করলে দেশে বিপর্যয় নেমে আসবে।’ শান্তি ভূষণকে সমর্থন করে আইনজীবী রাজীব ধাওয়ান বলেন, ‘সংরক্ষণ থেকে ধনীদের সরিয়ে রাখা আসলে সাম্যপ্রতিষ্ঠারই নামান্তর। বহু শতাব্দী ধরে যাঁরা বঞ্চনার শিকার নিয়োগের ক্ষেত্রে সংরক্ষণের ফলে সেই সব মানুষ উপকৃত হন। কিন্তু, চাকরি পাওয়ার পর যাঁরা পিছিয়ে পড়া পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন, তাঁদের কখনওই পদোন্নতিতে সংরক্ষণ দেওয়া উচিত নয়।’ আইনজীবী ধাওয়ান তাঁর সওয়ালে আরও বলেন, ‘সংরক্ষণকে অমরত্ব দিয়ে দিলে ভবিষ্যতে নানাবিধ সমস্যা তৈরি হতে পারে। যে কারণে ওবিসি-রাও এসসি-এসটির মধ্যে সামিল হতে চাইছেন।’ ধাওয়ানের কথায়, ঠিক ভাবে আলোচনা ছাড়াই লোকসভা পদোন্নতিতে সংরক্ষণের বিষয়টি পাশ করে দিয়েছিল। ফলে এ নিয়ে আপত্তি উঠতেই পারে। আগামী সপ্তাহে ফের এ নিয়ে শুনানি হবে সুপ্রিম কোর্টে।


No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...