SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): March 2020

Sunday 8 March 2020

লটা দাঃ (ঘটি জল)




এক বৃদ্ধ পিতা তার আদরিনী কন্যার বিবাহের পর স্নেহের টানে মেয়ের বাড়ি চলে এসেছেন তার মেয়ে জামাই কি রকম আছে তা দেখতে। অভাব অনটনের সংসারেও মেয়ে বাবাকে পেয়ে অসীম চঞ্চল হয়ে উঠল। সাঁওতাল সমাজে চিরাচরিত প্রথা অনুসারে অতিথি এলে যেমন এক ঘটি জল শুভ অতিথির পায়ের কাছে রেখে দিতে হয় অভ্যর্থনার জন্য। মেয়েও তাই করলেন বাবার সমামন ,আর ভূমি পিষ্ট হয়ে প্রণাম করলো। তারপর মেয়ে বাবা তুমি বিশ্রাম করো বলেই বাইরে বেরিয়ে গেল। পিতা অনুমান করলেন দারিদ্র্যের সংসারে আত্মীয়তার জন্য মেয়ে নিশ্চয়ই কোনো কিছু ধার করতে বেরিয়েছে। ভাবতে ভাবতে বেদনায় কাতর হয়ে উঠলেন তিনি এবং এমন সময় বাইরে কোলাহলে বৃদ্ধ এসে দেখেন সেই পাড়ায় আগুন লেগেছে।আর একটার পর একটা ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত লোক একত্রে হয়েও কুয়ো ঝর্না ডাডির জল দিয়ে নেভাতে পাচ্ছে না সেই আগুন। বৃদ্ধ ভুলে গেলেন মেয়ের দেওয়া ঘটির জলে হাত পা ধুতে ও আচমন করতে - যা অবশ্যই করণীয় অতিথি হিসেবে। কারণ তা আতিথ্য স্বীকারের প্রতীক। তিনি সেই ঘটির জলই দিশাহারা হয়ে আগুনের লেলিহান শিখায় ছিটিয়ে দিলেন।আর বিস্ময়ের সঙ্গে মানুষ দেখল মুহূর্তেই আগুন নির্বাপিত হয়েছে।সমবেত ক্লান্ত জনতা সমস্বরে বলে, আপনি নিশ্চয়ই মন্ত্রপূত বারি ব্যবহার করেছেন। বৃদ্ধ বললেন না এ হল আমার আদরিনী কন্যার হৃদয় উৎসারিত করা ভালোবাসা দেওয়া অতিথি গ্রহণের লটা দাঃ ( ঘটি জল)। অতিথিকে দেবতা মনে করে আমার নির্দ্বিধায় তাকে গ্রহণের জন্য যে পূর্ণ ঘটির জল দিয়ে অভ্যর্থনা করি তা এত বিশুদ্ধ পবিত্র ও শক্তিশালী - আমি তা নিজেই জানতাম না। যাইহোক অতিথি হিসেবে তোমার ঘরে কেউ এলে তাকে লটা দাঃ দিয়ে অভর্থনা করবে। এই লটা দাঃ এর কথা কখনোই ভুলবে না।

সাঁওতাল সাহিত্যের নক্ষত্র সারদাপ্রসাদ কিস্কু

তিনি ‘টটকো মলং’, তিনি ‘পাতাং সুরাই’, তিনিই সাঁওতাল সাহিত্যের অন্যতম উজ্জ্বল ‘ইপিল’। সাঁওতাল ভাষার স্বতন্ত্র লিপি তাঁর আঙুলের ছোঁয়ায় অমর হয়েছে। কবির জন্মদিনে তাঁকে স্মরণ করলেন নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায়

    সারদাপ্রসাদ। ছবি: লেখক

সাঁওতালি অতি প্রাচীন ভাষা। দীর্ঘ জীবন ধরে মূলত মৌখিক সাহিত্যই এই ভাষাকে ধরে রেখেছে। এর সঙ্গে সংরক্ষিত হয়েছে সাঁওতালদের জাতি গোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও পুরাণতত্ত্ব। এই আদিম আদিবাসীদের বৌদ্ধিক সংস্কৃতি ও প্রাত্যহিক যাপন আর্য সভ্যতার নিকট তেমন ঋণী নয়। কৃষি ও শিল্পে ওঁদের নিজস্ব রীতি প্রাচীন ও বহমান। তাঁদের ইতিহাস, প্রাক আর্যযুগের ইতিহাস। তাঁদের ভাষাও তাঁদেরই মতো প্রাচীন।
সাঁওতালি সাহিত্য আদিযুগের শ্রুতি সাহিত্য। সুপ্রাচীন এই লোকসাহিত্যের কাল নির্ধারণ কার্যত অসম্ভব। ইতিহাসের মধ্যযুগেও এই শ্রুতি সাহিত্যই সাঁওতালদের সংস্কৃতির মাধ্যম ছিল। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতে আসার প্রায় সঙ্গে সঙ্গে ভারতে মিশনারিদের আগমন হয়। উদ্দেশ্য, খ্রিস্টান ধর্মের প্রচার। বাংলা, বিহার, ওড়িশার সাঁওতাল অধ্যুষিত এলাকায় আদিবাসীদের ধর্মান্তরের কর্মসূচি উনবিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগ থেকেই শুরু হয়ে যায়। সাঁওতাল ভাষার সম্পদ অন্বেষণ তন্নিষ্ঠ হয়। মিশনারিরা ভাষাটির চর্চা, যত্ন ও উন্নয়নে সচেষ্ট হন। মিশনারিদের অবদান—এ ভাষার লিখিত রূপ। রোমান লিপিতে সাঁওতাল ভাষার প্রথম মুদ্রণ এই সময়েই। এ ভাষাও সাহিত্যের ‘মধ্যযুগ’ সূচনা করে। আধুনিক কাল সেদিনের। মিশনারি প্রভাবমুক্ত হওয়া বিংশ শতাব্দীর তিরিশ দশকে। সাধু রামচাঁদ মুর্মু, পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু, মঙ্গলচন্দ্র সরেন প্রমুখ সে দশকের প্রতিনিধি। 

কবি সারদাপ্রসাদ কিস্কু সাঁওতালি ভাষায় পদ্য লিখতেন। জন্ম দাঁড়িকাডোবা, পুরুলিয়ার বান্দোয়ান সন্নিহিত গ্রাম। ১৯২৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি। পিতা চরণ কিস্কু। মা ধনমণি। কবির বেড়ে ওঠা প্রান্তিকতা ও দারিদ্রের পটভূমিতে। অনুশীলনে সততা ও দৃঢ় সংকল্প। জেরোবারি গ্রামে নিম্ন প্রাথমিক, বড়গড়িয়া গ্রামে উচ্চ প্রাথমিক, রানিবাঁধ মিডল স্কুল (এখানেই মেরিট স্কলারশিপ প্রাপ্তি) ও খাতড়া হাইস্কুলে ছাত্রজীবন। ১৯৪৮ এ প্রথম বিভাগে ম্যাট্রিক পাশ। রামানন্দ কলেজে (বিষ্ণুপুর) ভর্তি হয়েছিলেন আই এ পড়বেন বলে। কিন্তু দারিদ্র অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আটকে যায় উচ্চশিক্ষা।
এর পরে জীবনযাপন এবং জীবিকার জন্য তিন মাসের ‘হিন্দি শিক্ষন’। প্রশিক্ষণ নেন বান্দোয়ানে ১৯৫০ সালে। তার পরে সুযোগ পেলেন জামতোড়িয়া সিনিয়র বেসিক স্কুলে শিক্ষকতার। ১৯৬২ সালে বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা, পরাজয় এবং চাকরি হারানো। পুনরায় চাকরি জীবন শুরু বড়দিহি প্রাথমিক স্কুলে। একেবারে ১৯৮৯ সালে অবসর গ্রহণ পর্যন্ত তিনি সেখানেই কর্মরত ছিলেন। রাষ্ট্রপতির পুরস্কার প্রাপ্তি ১৯৭৩ সালে।
জীবন তাঁর মসৃণ ছিল না। বন্ধুর পথে সাহিত্যই তাঁর সখা। তিনি আদ্যন্ত কবি  ও কথা সাহিত্যিক। পদ্য রচনার হাতেখড়ি ছাত্রজীবনে। অনুপ্রেরণায় কবি সাধু রামচাঁদ মুর্মুর ‘সৌরি ধরম সেরেঞ পুঁথি’। ছন্দমিলে সারদাপ্রসাদের আসক্তি বরাবরের। প্রথম লেখা প্রকাশ ‘হড় সম্বাদ’ পত্রিকায়। ‘টটকো মলং’ (অর্থ, উঁচু কপালধারী) ছদ্মনামে লিখতেন গল্প। ‘তেতরে’ পত্রিকায় লিখতেন ‘পাতাং সুরাই’ (অর্থ, পাতার পোকা) ছদ্মনামে। স্বঘোষণায় সাধু রামচাঁদ তাঁর গুরু। রামচাঁদ ছিলেন প্রতিবাদী কবি। সাঁওতালদের ‘সারি ধরম’ (শাশ্বত ধর্ম) জাগরণের কবি। ‘দেবন তিঙ্গুন আদিবাসী বীর’  তাঁর জাগানিয়া গান সাঁওতাল মানসে যেন জাতীয় মন্ত্র। মাতৃভাষাই যে শিক্ষার বাহন, সেটা তিনি বুঝতেন। তাই ১৯২৩ সালে তৈরি করেছিলেন সাঁওতাল ভাষার স্বতন্ত্র লিপি। ‘মঁজ দাঁদের আঁক’। এ লিপিতেই তাঁর অধিকাংশ রচনা। ‘অলচিকি’ অপেক্ষা এই লিপি প্রাচীনতর। তিনি কবি ও দার্শনিক, শিল্পী ও সংস্কারক। সারদাপ্রসাদের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ভুরকৌ ইপিল’ (১৯৫৩)। সাঁওতাল ভাষায় ‘ইপিল’ কথার অর্থ ‘নক্ষত্র’। ‘ভুরকৌ ইপিল’ অর্থাৎ, শুকতারা। এই বইয়ে গানও লিপিবদ্ধ হয়েছে। 
ক্রমান্বয়ে ‘কুহূবউ’ (অর্থ, কোকিল), ‘গাম গঁদার’ (অর্থ, মধুর বাণী) (১৯৬৭), ‘লাহা হররে’ (অর্থ, এগিয়ে চলার পথে) (১৯৮৫) গান ও কবিতা সংকলনগুলো প্রকাশিত হয়। এগুলো প্রধান। আরও আছে। সমালোচকদের মতে, তাঁর কবিতার তিনটি ধারা। অন্তর্মুখিতা, কল্পনাশ্রয় ও ‘মিস্টিক ভাবনা’ নিয়ে প্রথম ধারা। দ্বিতীয় ধারায় প্রকৃতি পর্যায়। অন্তিম ধারায় জীবন ঘনিষ্ঠতা। আদিবাসী জীবনের যন্ত্রণা, শোক, আশা এবং আকাঙ্ক্ষা। তিনি পঞ্চাশের দশকের কবি। সবে ভারত স্বাধীন হয়েছে। স্বদেশি আন্দোলন দেখেছেন কাছ থেকে। তাই সাহিত্যে যতটা নিবেদিত, ততটাই নিবেদিত সমাজচেতনা ও সামাজিক সংস্কারে। এই দশকেই বিহার, বাংলা ও ওড়িশার সাঁওতালি সাহিত্যের নবজাগরণ। নারায়ণ সরেন, ডমন সাহু ‘সমীর’, আদিত্য মিত্র ‘সান্থালি’ প্রমুখ কবি পুনর্প্রতিষ্ঠিত।
তিনি কথা সাহিত্যিকও বটে। ‘সলম লটম’ (অর্থ, তালগোল)  প্রকাশিত হয় ১৯৮৮ সালে গল্প সংকলনরুপে। ‘জুডৌসি অণল মালা’   (অর্থ, মনোরম প্রবন্ধ সংগ্রহ) (১৯৯৪) একমাত্র প্রবন্ধ সংকলন। গানে-কবিতায়-গল্পে দেশ ও সমাজের কথা বলেছেন। সাহিত্যে সাঁওতালি যাপন শেষকথা নয়, শেষকথা মানবতা। ইতিহাস বোধে, সাহিত্য বোধে, সংস্কৃতি বোধে দেশ ও কালের ঊর্ধ্বে অবস্থান করেন। তিনি মানুষের কবি। তিনি নক্ষত্র। তিনি ইপিল।
সাঁওতাল বিদ্রোহ, খেরোয়ালি আন্দোলন, ছোটনাগপুর উন্নতি সমাজ, আদিবাসী মহাসভা প্রভৃতির ইতিহাস তাঁর জানা। তিনি জানতেন অস্ট্রো-এশিয়াটিক গোষ্ঠীর মধ্যে সাঁওতাল সম্প্রদায়ই সংখ্যাগরিষ্ঠ। সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানসিক সুসংবদ্ধতার মাপকাঠিতে তারাই শীর্ষে। তবু বহমান সমাজে কখনও কখনও কুসংস্কার আসে। তাই সমাজ সংস্কারক তিনি ডাইনি-বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। বিরুদ্ধতা এসেছে ফলশ্রুতিতে। জীবনে বিপন্নতা ও ঝুঁকি এসেছে। অটল সারদাপ্রসাদ জানতেন সততা ছাড়া কবির আশ্রয় নেই। ১৯৯৬ সালের ১৮ মার্চ কবির জীবনাবসান ঘটে। রেখে যান সাহিত্যকীর্তি, পাঠক ও পরবর্তী প্রজন্মের অনুপ্রেরণা।
লেখক সিধো-কানহো-বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসচিব

সাঁওতাল দের পরিচয়

Image may contain: text

রাষ্ট্রপতির হাত থেকে নারী শক্তি সন্মান ২০১৯ পেলেন শ্রীমতি চামি মুর্মু|



আজ ০৮ ই মার্চ, ২০২০, আন্তর্জাতিক নারী দিবসে দিল্লীতে রাষ্ট্রপতি ভবনে মাননীয় রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ ‘নারী শক্তি সন্মান, ২০১৯’ তুলে দিলেন শ্রীমতি চামি মুর্মুর হাতে| জঙ্গল রক্ষায় উল্লেখ্যযোগ্য অবদানের জন্য ঝাড়খণ্ড রাজ্য নিবাসী ৪৭ বছর বয়সী শ্রীমতি চামি মুর্মু পরিচিত ‘লেডি টারজান’ হিসেবে| 
নিজের গ্রাম ও সংলগ্ন এলাকায় গত ২৪ বছরে প্রায় ২৫ লক্ষ গাছ লাগিয়েছেন শ্রীমতি চামি মুর্মু| নিজের এই কর্মকাণ্ডে ৩০০০ মহিলার এক সবুজ বাহিনী তৈরী করেছেন| নকশাল প্রভাবিত এলাকা হওয়া সত্বেও জঙ্গলে ভয়ডরহীন ভাবে ঘুরে বেড়ান শ্রীমতি চামি মুর্মু ও তাঁর বাহিনীর সদস্যরা| এলাকার জঙ্গল মাফিয়াদের ত্রাস শ্রীমতি চামি মুর্মু ও তাঁর বাহিনীর সদস্যরা| 
এর আগেও ১৯৯৬ সালে কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রক থেকে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনি বৃক্ষ মিত্র পুরস্কার পেয়েছেন শ্রীমতি চামি মুর্মু|
অভিনন্দন জানাই আপনাকে শ্রীমতি চামি মুর্মু| আপনার এই সন্মানে সমস্ত আদিবাসী সমাজই সন্মানিত বোধ করছে| 

Smt Chami Murmu 'Lady Tarzan' of Jharkhand


President Kovind presented the Nari Shakti Puraskar to Smt Chami Murmu. She is known as the 'Lady Tarzan' of Jharkhand for her determination to protect the forests, local wildlife and improve the livelihood of locals.

সান্তাড়ী মিডিয়ামতে পৌয়লো HS 2020 বিনিড ক এম এদা 15 গটাং বাবু-মাই তাকো হিড়বাঁধ হাই স্কুল খন

সান্তাড়ী মিডিয়ামতে পৌয়লো HS 2020 বিনিড ক এম এদা 15 গটাং বাবু-মাই তাকো হিড়বাঁধ হাই স্কুল খন।নাপায়তে বিনিড এম লাগিদ আশিস থুম।তিহিঞ ঞেল ঞেল তেগে 2012-2020 অকা লেকা চং পারম গৎ এনা।সান্তাড়ীতে অলঃ পাড়হাও চাচৌ লাগিদ যাঁহায় গগ-বাবা, মাচেৎ-মাচেতানী,মাঝি বাবা ক, আডি গান গাতে গাঁওতা ক গড়ো লেনা সানাম কগে গুন মানাও জঁহার।।

Image may contain: 6 people, people standing
Image may contain: 6 people, people standing

সাঁওতালি ভাষা অলচিকি লিপিতে ভর্তি ও ক্লাস চলছে। ভর্তির শেষ তারিখ ১৫ ই মার্চ

সাঁওতালি ভাষা অলচিকি লিপি তে সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্সে পঠন পাঠনের জন্য ভর্তি চিলতেছে। সাঁওতালি শিক্ষা বোর্ড আসেকা(দিল্লি সাহিত্য একাডেমী এমপ্লয়মেন্ট প্রাপ্ত) থেকে উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীদের সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। ইতিমধ্যে ভর্তি ও ক্লাস শূরু হয়েছে। অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী দ্বারা এখানে পড়ানো হয়। আসেকা সাঁওতালি শিক্ষা বোর্ডের অধীন মেদিনীপুর সদর ব্রাঞ্চে এই ভর্তি প্রক্রিয়া চলছে। আগামী ১৫ মার্চ ভর্তির শেষ তারিখ। ভর্তি হওয়ার জন্য সমস্ত স্তরের ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে আবেদন পত্র আহবান করা হচ্ছে।

সীমিত সংখ্যক আসন সংরক্ষন করা হয়েছে। আবেদনের ভিত্তিতে ছাত্রছাত্রীদের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানা যায় সংস্থা পক্ষ থেকে। এখানে সাঁওতালি ভাষা অলচিকি লিপিতে প্রাথমিক থেকে সুষ্ঠু সহকারে পড়ানো হয়। সার্টিফিকেট ও ডিপ্লোমা কোর্সের জন্য এখানে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে। কোর্সের শেষে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সাঁওতালি ভাষা অলচিকি লিপিতে মেদিনীপুর সদর ব্রাঞ্চ থেকে ভর্তি ও পঠন পাঠনের জন্য, আরও বিস্তারিত জানার জন্য নিচে দেওয়া সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। সংস্থা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য মোবাইল নম্বর হল- 6294405083/ 90646 34904

5 ই মার্চ গনবিবাহর দিনে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মহাশয়ার বক্তব্য শুনে এক অজানা বিপদের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম।

প্রথমে গনবিবাহ ব্যাপার টা খুব ক্যাজুয়েল মনে করেছিলাম। ভেবেছিলাম এই রকম ছিঁটে ফোঁটা দু একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে কি এমন ক্ষতি হয় !
যেরকম দু এক জন আদিবাসী ছেলেমেয়ে, অ-আদিবাসীদের সংগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়, এটা নিয়ে খুব একটা ভাবি না। এই প্রতিযোগিতার জীবন যাত্রায় সবাই এর সংগে সবাই এর মেলামেশা হতে বাধ্য হচ্ছি।
সুতরাং দু একটা দূর্ঘটনা হবেই,এটা আটকানো সম্ভব নয় । সমস্ত সম্প্রদায়ের মধ্যে এইরকম বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে , আদিবাসী সম্প্রদায় বা বাদ থাকবে কেন।

      কিন্তু গত 5 ই মার্চ গনবিবাহর দিনে মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মহাশয়ার বক্তব্য শুনে এক অজানা বিপদের প্রতিচ্ছবি দেখতে পেলাম।
উনি বলছেন প্রতি জেলায় এই গনবিবাহ অনুষ্ঠিত হবে। এটা শুনেই আমার ধারণা পরিবর্তন হতে থাকে।
     আমার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনে গনবিবাহ বিষয়ে এক সুপ্ত সমর্থন প্রকাশ পেয়েছিল, কিন্তু এখন বুঝতে পারছি এই গনবিবাহ, ভবিষ্যতে এক ভয়ংকর রূপ ধারণ করবে।
 পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী আদিবাসী গনবিবাহ, একটা রাজনৈতিক কর্মসূচির মধ্যে নিয়ে আসতে চলেছে এবং ভবিষ্যতে রাজনৈতিক পালা বদল হলেও যে কোনো দলের কাছে এই কর্মসূচি চলতে থাকবে বলে আমার মনে হয়।
     আদিবাসীদের গনবিবাহ প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের একটা কর্মসূচি হয়ে দাঁড়াবে। সেক্ষেত্রে এর ব্যাপ্তি অনেকটা বিস্তার করবে। আদিবাসীদের নিজস্ব সমাজ ব্যবস্থা সংকট দেখা দেবে, যার উপর নির্ভর করে আজ স্ব-মহিমায় আদিবাসী গোষ্ঠী নিজস্ব পরিচিতি বহন করে দাঁড়িয়ে আছে । যদিও এই সমাজ ব্যবস্থাও অনেক পরিবর্তন পরিমার্জন করার প্রয়োজন আছে। সুতরাং এক্ষুনি এর বিরোধিতা না করলে বিপদ যে ভয়ংকর আকার ধারণ করবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
     এই গনবিবাহ বা যে কোন অন্য ধর্মে ধর্মান্তরিত রোধ করা গ্রামের মাঝি এবং তার দলবলের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। গ্রাম থেকে শুরু হোক আমাদের সেই আন্দোলন, যে আন্দোলনের মাধ্যমে সারা আদিবাসী তথা সাঁওতাল সমাজ আমূল পরিবর্তন করে আধুনিক বিজ্ঞান সম্মত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুলবে , যার মাধ্যমে মানব সমাজে আদিবাসীদের সম্মান আলাদা মাত্রায় যুক্ত হবে ।
         আদিবাসী সমাজ থেকে বহু জিনিস তথাকথিত সভ্য সমাজ ধার নিয়েছে —এটা অনেক সমাজ বিজ্ঞানী রাও মানে। পঞ্চায়েত ব্যবস্থা বা গনতান্ত্রিক কাঠামো, প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকে আদিবাসী সমাজে ছিল এবং এখনও আছে। শিকারের মাংস রান্না করে খাওয়ার আগে উনুন (অগ্নি) এবং কুকুরের ভাগ পর্যন্ত দিতে ভুলে না। এই ধরনের সাম্যবাদ ভাবনা কোনো সমাজে আছে কিনা, আমার জানা নেই। 
       এ ছাড়া আদিবাসী সমাজ মহিলাদের যথেষ্ট সম্মান দেয়। বিয়ের সম্বন্ধের সময়ে, সব সময় বর পক্ষকেই আগে কনে পক্ষের কাছে যেতে হয় এবং কন্যা পন দিয়ে বিবাহ করে নিয়ে আসতে হয়। বর পনের কোন প্রশ্নই নেই। female foeticide বা কন্যা ভ্রুন হত্যা করা হয় না।
    অথবা ঈশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর এর বিধবা বিবাহ প্রথা প্রচলন , আদিবাসীদের কাছ থেকেই শেখা, এটা তো উনি দু একটা জায়গায় স্বীকারও করে নিয়েছেন। 
    এই গুলি সামান্য দু একটা বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করলাম। এরকম বহু exclusive features আদিবাসী সমাজে বিদ্যমান ।
    প্রত্যেক টা গ্রাম এক একটা shelf governing body (মাঝি আরি) আছে। এই body র মাধ্যমে গ্রামের সমস্ত সামাজিক কাজ কর্ম সম্পাদন করা হয়। কত যুগ থেকে এই পঞ্চায়েত ব্যবস্থা আদিবাসী সমাজে আছে, সঠিক করে কেউ বলতে পারবে না।
যা দেখে আজকের আধুনিক গনতান্ত্রিক দেশের গভর্নিংবডি তৈরী হয়েছে বললেও বেশি বলা হয় না। আদিবাসী সমাজের এই shelf governing body এবং তার function নিয়ে এবং বিচার ব্যবস্থা এইসব নিয়ে Adibasi constitution রচনা করলে ভারতবর্ষের সংবিধান থেকে কোনো অংশে কম হবে না। আজ আদিবাসীদের এই সব ব্যবস্থা, অ-আদিবাসীরা জানেনা। হাজার হাজার বছর ধরে পাশাপাশি অবস্থান করছি, কিন্তু দূ:খের বিষয় আজও তাদের কাছে রয়ে গেল আদিবাসী সমাজ অস্পৃশ্য।
     আদিবাসীকে না জানার অনেক গুলি কারন আছে। বিশেষত আদিবাসী রা গরীব বলে এদের জীবন যাত্রা কাউকে আকর্ষণ করে না। আদিবাসীদের মধ্যে প্রচুর খারাপ কাজ ছিল এবং কিছু কিছু এখনোও আছে।
  
ᱥᱮᱫᱟᱭ ᱫᱚ ᱵᱷᱟᱜᱟᱲ ᱠᱷᱚᱱᱟᱜ ᱜᱚᱡ ᱰᱟᱝᱨᱤ ᱡᱤᱞ ᱵᱚᱱ ᱠᱷᱟᱞ ᱟᱜᱩ ᱮᱫ ᱛᱟᱸᱦᱮᱸᱫ ᱾
    এরা অধিকাংশই গরীব বলে সামান্য এক টুকরো কাপড় ছাড়া পরিধানের বিশেষ কোন পোশাক ছিল না। প্রত্যেক এর বাড়িতে গরু ছাগল মুরগি শুয়োরের থাকত বলে ঘরবাড়ি নোংরা ছিল। hygiene সম্বন্ধে কোনো knowledge ছিল না। নিজের সৌখিনতা সম্বন্ধে সচেতন নয়। সুতরাং স্বাভাবিক ভাবেই এরা অ-আদিবাসীদের কাছে ঘৃণার পাত্র। সর্বোপরি যেকোনো অনুষ্ঠানে এরা মাদক দ্রব্য ব্যবহারের জন্যই সব থেকে বেশি সামাজিক ভাবে অবনতি হয়েছে। অনেক ব্যাবস্থা পরিবর্তন হলেও হাঁডিয়া ও মদের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য ভাবে এখনও বিদ্যমান । সামাজিক ভাবে পিছিয়ে থাকা এটা একটা বড় কারণ, এটা অস্বীকার করার কিছু নেই । 
         তবুও আদিবাসী সমাজ নিজের সমস্ত ভালো বৈশিষ্ট্য কে রক্ষা করে মানব সমাজে বেঁচে থাকতে চায়। আজ এই গনবিবাহ এদের সামাজিক পরিচিতি রক্ষায় বাধা দিচ্ছে বলে অনেকেই মনে করছে।
     আদিবাসীদের অলিখিত সংবিধান সময়ের তালে তালে সংশোধন সংযোজন হতে পারছে না। তাছাড়া ভারতীয় সংবিধানের প্রভাবে আস্তে আস্তে এদের সংবিধান গ্রাস করতে বসেছে। ।
     ভারতবর্ষের বর্তমান সামাজিক এবং ধর্মীয় কার্য্যকলাপের প্রতিযোগিতায় আদিবাসীদের সমাজ সংস্কৃতি কঠিন এক বিপদ সংকূলে পতিত। কয়েকটি সামাজিক রীতি নীতি দেখলে তা অনুভব করা যায়।
ধরুন, স্বাদভাত, অন্নপ্রাশন, বরপন, বরযাত্রীদের খাওয়ানোর দায়িত্ব কন্যা পক্ষের - এই সব অনুষ্ঠান, কোনদিন ছিল না। অথচ আজকে প্রায়ই আদিবাসীদের মধ্যে এই সব কর্ম কান্ড উল্লেখযোগ্য ভাবে চোখে পড়ে। এগুলি যে অ-আদিবাসীদের কাছ থেকে শেখা, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। 
      এখানে আর একটা বিষয়ে সামান্য উল্লেখ করতে চাই, সেটা হল — ""আদিবাসীদের বিবাহ অনুষ্ঠানে কন্যা বিদায় এর সময়, পিতৃগৃহ হইতে কি কি যৌতুক এবং উপহার কন্যা কে দেওয়া হইতেছে তাহা লিপিবদ্ধ করিয়া, উভয় পক্ষের মাঝি বাবাদের স্বাক্ষর করিয়া প্রদান করিতেছে। ভাব খানা এইরূপ , দেখ, কত দামী দামী জিনিস দেওয়া হইল।"" আমার বক্তব্য এই, মাঝি বাবারা স্বাক্ষর করবে কেন? আপনি কি দিচ্ছেন, না দিচ্ছেন, ভবিষ্যতে এদের সংসার বিচ্ছেদ হলে এই সব জিনিস ফেরতের ব্যাপারে মাঝি বাবা রা দায়ী থাকবে কেন? নিয়মে যে টুকু প্রচলন আছে, সেই ব্যাপারে অবশ্যই মাঝি বাবা দায়িত্ব নিতে পারে কিন্তু তার অতিরিক্ত জিনিস পত্রের জন্য মাঝি বাবা দের জড়িত করা হচ্ছে কেন? এই দামী দামী যৌতুক বা উপহার বরপনের নামান্তর নয় কি? ভবিষ্যতে এটাই তো" দাবী "তে দাঁড়াবে। এই বিষয়ে একটু সজাগ হওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছি।

     আদিবাসীদের সমস্ত সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠান (কয়েক টি পারিবারিক অনুষ্ঠান ছাড়া) গ্রামবাসী সম্মিলিত ভাবে সম্পাদন করে। যেহেতু গ্রামের মানুষ অধিকাংশই অ-শিক্ষিত, তাই অনেক সময় কোনো সমস্যা সম্মুখীন হলে, তা সঠিক ভাবে বিচার বিবেচনা করা হয় না। এই জন্য বর্তমান একটা বড় অংশ এই shelf governing body র উপর ক্ষুব্ধ। 
  পাশাপাশি অন্য ধর্মের মানুষের টাকার প্রলোভন দেখিয়ে অ-শিক্ষিত গরীব মানুষের মনে হাত ছানি দেয়। 
       এই রকম একটা পরিস্থিতি থেকে আদিবাসী সমাজ কে বাঁচাতে গেলে শিক্ষিত যুবক যুবতী, সব অভিমান ভুলে গিয়ে এগিয়ে আসতে হবে। নিজ নিজ গ্রামের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিতে হবে। সবাইকেই ভাবতে হবে —
      শিক্ষার হার কি ভাবে বাড়ানো যায় এবং সমাজে মাদক দ্রব্য কি করে কমানো যায়, এই বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে সমস্ত মাঝি পারগানা লেখক বুদ্ধিজীবী ছাত্র যুব মহিলা দের ভাবতেই হবে, নচেৎ অন্য সমাজের আগ্রাসন থেকে আদিবাসী সমাজ কে বাঁচানো যাবে না।
      পরিশেষে পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী কে অনুরোধ জানাই, আপনি মানুষ দরদী,
আপনি আদিবাসী দরদী,
আপনি বিধবা ভাতা, বৃদ্ধ ভাতা' র মত গরীব আদিবাসী যুবক যুবতীর জন্য গনবিবাহ বন্ধ করে "" বিবাহ ভাতা"" চালু করুন, আমরা আদিবাসী সমাজ পক্ষ থেকে আপনার কাছে চিরকৃতগ্য থাকব।


      জহার সালা:—
               ইঞগে বাপুড়িজ,
          ভঞ্জ ভংকড় বানাম বায়ার,
          ঢাক রুশিকা —"বালকা সান্তাড়"

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...