SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): লটা দাঃ (ঘটি জল)

Sunday, 8 March 2020

লটা দাঃ (ঘটি জল)




এক বৃদ্ধ পিতা তার আদরিনী কন্যার বিবাহের পর স্নেহের টানে মেয়ের বাড়ি চলে এসেছেন তার মেয়ে জামাই কি রকম আছে তা দেখতে। অভাব অনটনের সংসারেও মেয়ে বাবাকে পেয়ে অসীম চঞ্চল হয়ে উঠল। সাঁওতাল সমাজে চিরাচরিত প্রথা অনুসারে অতিথি এলে যেমন এক ঘটি জল শুভ অতিথির পায়ের কাছে রেখে দিতে হয় অভ্যর্থনার জন্য। মেয়েও তাই করলেন বাবার সমামন ,আর ভূমি পিষ্ট হয়ে প্রণাম করলো। তারপর মেয়ে বাবা তুমি বিশ্রাম করো বলেই বাইরে বেরিয়ে গেল। পিতা অনুমান করলেন দারিদ্র্যের সংসারে আত্মীয়তার জন্য মেয়ে নিশ্চয়ই কোনো কিছু ধার করতে বেরিয়েছে। ভাবতে ভাবতে বেদনায় কাতর হয়ে উঠলেন তিনি এবং এমন সময় বাইরে কোলাহলে বৃদ্ধ এসে দেখেন সেই পাড়ায় আগুন লেগেছে।আর একটার পর একটা ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। সমস্ত লোক একত্রে হয়েও কুয়ো ঝর্না ডাডির জল দিয়ে নেভাতে পাচ্ছে না সেই আগুন। বৃদ্ধ ভুলে গেলেন মেয়ের দেওয়া ঘটির জলে হাত পা ধুতে ও আচমন করতে - যা অবশ্যই করণীয় অতিথি হিসেবে। কারণ তা আতিথ্য স্বীকারের প্রতীক। তিনি সেই ঘটির জলই দিশাহারা হয়ে আগুনের লেলিহান শিখায় ছিটিয়ে দিলেন।আর বিস্ময়ের সঙ্গে মানুষ দেখল মুহূর্তেই আগুন নির্বাপিত হয়েছে।সমবেত ক্লান্ত জনতা সমস্বরে বলে, আপনি নিশ্চয়ই মন্ত্রপূত বারি ব্যবহার করেছেন। বৃদ্ধ বললেন না এ হল আমার আদরিনী কন্যার হৃদয় উৎসারিত করা ভালোবাসা দেওয়া অতিথি গ্রহণের লটা দাঃ ( ঘটি জল)। অতিথিকে দেবতা মনে করে আমার নির্দ্বিধায় তাকে গ্রহণের জন্য যে পূর্ণ ঘটির জল দিয়ে অভ্যর্থনা করি তা এত বিশুদ্ধ পবিত্র ও শক্তিশালী - আমি তা নিজেই জানতাম না। যাইহোক অতিথি হিসেবে তোমার ঘরে কেউ এলে তাকে লটা দাঃ দিয়ে অভর্থনা করবে। এই লটা দাঃ এর কথা কখনোই ভুলবে না।

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...