SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): 09/01/18

Saturday 1 September 2018

আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে৷

বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে বন্ধুদের সাথে মিলে গণধর্ষণের অভিযোগ আদিবাসী নাবালিকাকে। আদিবাসী নাবালিকাকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুরে৷ খড়গপুর গ্রামীণ থানার অন্তর্গত কয়তা গ্রামের ওই নাবালিকাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিয়ে গিয়ে গ্রামের পাশে একটি পাম্প হাউসে আটকে রাখা হয়েছিল৷ রাজু মান্ডি নামে এক ব্যক্তি নাবালিকাকে সেখানে তিনদিন আটকে রাখে। ৬ বন্ধু মিলে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ৷ ৯ অগস্ট সকালে গ্রামের বাসিন্দারা রাস্তার পাশে অচৈতন্য অবস্থায় ওই নাবালিকাকে পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দিয়ে উদ্ধার করে৷ অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে৷
খড়গপুরের ২ নম্বর ব্লকের কয়তা গ্রামের এক আদিবাসী নাবালিকাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ৬ অগস্ট, ২০১৮ বাড়ি থেকে নিয়ে যায় ওই গ্রামের বাসিন্দা রাজু মান্ডি৷ রাজুর সঙ্গে ওই নাবালিকার পুরনো প্রেমের সম্পর্ক ছিল বলে স্থানীয়রা জানান৷ ৬ তারিখ থেকে মেয়েকে নিখোঁজ দেখে আত্মীয়দের বাড়িতে খোঁজ করছিলেন ওই নাবালিকার মা৷ কোথাও কেউ তাঁর সন্ধান দিতে পারছিলেন না৷ এর পরে ৮ অগস্ট খড়গপুর গ্রামীণ থানাতে একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেছিলেন তিনি৷ পুলিশও খোঁজ শুরু করে৷ এরই মাঝে ৯ অগস্ট গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে রাস্তার পাশে ওই নাবালিকাকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা৷ গ্রামবাসীদের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে৷ সেখানে পুলিশের কাছে ওই নাবালিকা সমস্ত কিছু খুলে বলে৷
ওই নাবালিকা পুলিশকে জানায়পুরনো প্রেমের সম্পর্ক থেকেই রাজু মান্ডি তাঁকে বিয়ে করবে বলে ডেকেছিল৷ সেই মতো ৬ অগস্ট রাজুর সঙ্গে বেরিয়ে পড়েছিল বাড়ি থেকে৷ রাজু সন্ধার সময়‌ে গ্রামের পাশে একটি পাম্প হাউসে তাঁকে নিয়ে ওঠে৷ সেখানে রাতে তাঁকে ধর্ষণ করে৷ পরে আরও ৫ বন্ধু মিলে তাকে গণধর্ষণ করে বলে অভিযোগ৷ সেদিন থেকেই তিন দিন ধরে ওই পাম্প হাউসে তাকে আটকে রেখে গণধর্ষণ চালায় ৬ জন আদিবাসী যুবক৷ পরে ওই নাবালিকার পরিস্থিতি খারাপ মনে হওয়াতে রাস্তার পাশে ফেলে পালায় তারা৷ ওই নাবালিকার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার রাজু মান্ডি-সহ চর যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ বাকি দুজন অভিযুক্ত ফেরার৷

বীরভূম জেলার আবাসিক স্কুলে শিক্ষার নামে আদিবাসী নাবালক ছাত্রদের বেদম মারধরের অভিযোগ, প্রতিবাদ স্থানীয় বাসিন্দাদের।

আদিবাসী শিশুদের শিক্ষা সামাজিক উন্নয়নে কেন্দ্রের পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার একাধিক পরিকল্পনা নিয়েছে। গড়ে তোলা হয়েছে একাধিক বিদ্যালয়। বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে তাদের আর্থিক সাহায্য করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। কিন্তু সেই রকমেই এক বিদ্যালয়েই শারীরিক অত্যাচারের শিকার আদিবাসী শিশুরা। ঘটনাটি বোলপুরের মির্জাপুরের ‘বিবেকানন্দ এডুকেশনাল কালচারাল অ্যান্ড সোশ্যাল ইনস্টিটিউট’ নামের এক বেসরকারি বিদ্যালয়ে। এখানে শিশুদের গরুর গোয়াল পরিষ্কার, বালি সিমেন্ট মাখানোর কাজ করানো হচ্ছে। এমনকী, লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে বাচ্চাদের। পুরো বিষয়টির ভিডিও সামনে আসতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।
অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল শিশুদের মারধরের অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তবে তাঁর বক্তব্য, তিনি স্থানীয় শাসক দলের রাজনীতির শিকার।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৪ সালে ১৩ নভেম্বর মির্জাপুরে ‘বিবেকানন্দ  এডুকেশনাল কালচারাল অ্যান্ড সোশ্যাল ইনস্টিটিউট’ বিদ্যালয়ের উদ্বোধন হয়। বর্তমানে এখানে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত আদিবাসী শিশুদের ইংরেজি মাধ্যামে পড়ানো হয়। ১৯০ জন ছাত্র রয়েছে এবং ২৩ জন স্থায়ী-অস্থায়ী শিক্ষক রয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই আদিবাসী শিশুদের পারিবারিক এবং আর্থিক অসহায়তার সুযোগ নিয়ে বিদ্যালয়ের ভিতর বিভিন্ন ধরনের কাজ করানো হয়।
সম্প্রতি একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, বাচ্চারা গরুর গোয়াল ঘর পরিষ্কারের কাজ করছে। কয়েকটি বাচ্চা বালি-সিমেন্ট মাখাচ্ছে। সব থেকে নির্মম অত্যাচার, ৮-১০ জন বাচ্চাকে পরপর সারি দিয়ে দাঁড় করিয়ে লাঠি দিয়ে পেটানো হচ্ছে। বাচ্চারা অনেকেই চিৎকার করছে। আর এই কাজ করছেন বিদ্যালয়ের সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল।
এদিকে এই বিষয়টি সামনে আসতেই  ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসী আনন্দ গোপাল রক্ষিত বলেন, ‘‘বাচ্চাদের পরিমাণ মতো খাবার দেওয়া হয় না। বিভিন্ন কাজ করানো হয়, না করলেই মার। ছোট ছোট বাচ্চাগুলি প্রাণের ভয়ে চিৎকার করতে পারে না।’’
স্থানীয় আদিবাসী নেতা ভিম কিসকু বলেন, ‘‘বিদ্যালয় যখন তৈরি হয়, তখন শুনেছিলাম অনাথ আদিবাসী বাচ্চাদের পড়ানো হবে। কিন্তু এখন দেখছি বাচ্চাদের মারধর করা হচ্ছে, কাজ করানো হচ্ছে। আমরা দোষীদের শাস্তি চাই।’’
অভিযুক্ত বিদ্যালয়ের সম্পাদক শৈলেন্দ্রনাথ ডিঙ্গল বলেন, ‘‘বাচ্চারা দুষ্টমি করেছিল। তাই তাদের একটু মারধর করা হয়েছে। গোপনে সেই ছবি তোলা হয়েছে। আমি তৃণমূলের দু’টি গোষ্ঠীর রাজনীতির শিকার।’’
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মৎস্য মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ প্রথম থেকে এই বিদ্যলয়কে সাহায্য করেছেন। সম্প্রতি তিনি ৫ বিঘা জমি বিদ্যালয়কে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। তার পর থেকেই এই আশ্রম দখলের চেষ্টা চলছে।
বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোধারা বলেন, পুরো বিষয়টি শুনেছি। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে এবং তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঘটনার ভিডিও লিংক –

ছত্তিসগড়ে মাওবাদী দমনের নামে সাধারণ আদিবাসী খুনের অভিযোগ।

গত ৬ অগস্ট, ২০১৮ কাকভোরে ছত্তিসগড়ের গোম্পদে ১৫ জন মাওবাদীকে গুলি করে খতম করার খবর পাওয়া জায়। জঙ্গলে অভিজান চালিয়ে মাওবাদীদের গুলির লড়াইয়ে খতম করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। খবরটা এ ভাবেই এসেছিল। মাও-সন্ত্রাস দমনে ছত্তিসগড় পুলিশের ‘সাফল্যে’ অভিভূত হয়েছিলেন অনেকেই। কিন্তু, যত সময় যাচ্ছে ততই প্রকট হয়ে পড়ছে এই মাওবাদী দমন-অভিযানের আসল চেহারাটা। আদিবাসী এই গ্রামের দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়ে যাবে সেই সকালে কোন মাওবাদীদের শেষ করেছিল পুলিশ!
পাঁচ ‘মাওবাদী’র তো ১৮ বছর বয়সই হয়নি। আরেক ‘মাওবাদী’র বয়স আরও কম, ১২! ছত্তিসগড় পুলিশের দাবি অনুযায়ী, এরাই জড়ো হয়েছিলেন রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করতে। গ্রামবাসীদের দাবি, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধ ষড়যন্ত্র নয়, ওই রাতে চাষের জমির কাছে খাটিয়া বিছিয়ে একসঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলেন তাঁরা। ভোরে ওই ঘুমন্ত আদিবাসী মানুষগুলোর উপরই নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করা হয়েছিল। সংসারের একমাত্র রোজগেরে খুঁটি, তাঁর ১৭ বছরের ছেলেকে হারানোর শোক এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেননি মুচাকি লাকমা। সেই সকালের কথা জিজ্ঞাসা করতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। গ্রামের অন্য এক বাসিন্দা জানান, ঘটনার পর একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গ্রামে এসেছিল। মানবাধিকার কর্মী থেকে সমাজকর্মী, অনেকেই ছিলেন ওই দলে। কিন্তু, দলটি গ্রামে ঢোকার আগেই পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের জঙ্গলে পাঠিয়ে দেয়। তাঁদের শাসিয়ে বলা হয়, মানবাধিকার কর্মী কিংবা সাংবাদিক, কারও সঙ্গেই যেন গ্রামবাসীরা কথা না বলেন। প্রবল বৃষ্টির মধ্যে জঙ্গলেই ঘুরে বেড়াতে হয় অসহায় মানুষগুলোকে। তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই ফিরে যেতে হয় কমিটিকে। এ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে।
আদিবাসী গ্রামবাসীদের বক্তব্য, ঘটনার দু’দিন আগে গ্রামে আসে পুলিশের বিরাট বাহিনী। গ্রামের রীতি হল, পুরুষেরা হয় চাষের জমির কাছে তৈরি অস্থায়ী ছাউনিতে থাকেন, না হলে পাশের গ্রামে কোনও আত্মীয়ের বাড়িতে। সে দিনও পরিস্থিতি তেমনই ছিল। পরের দিন কয়েকজন গ্রামে ফিরে পুলিশ দেখে আবার ওই চাউনিতে চলে যান। ৬ তারিখ গুলির শব্দে ঘুম ভাঙে গ্রামের। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, তাঁরা ছাউনির কাছে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাঁদের সরিয়ে দেন নিরাপত্তারক্ষীরা। এমনকী, দেহ পর্যন্ত দেখতে দেওয়া হয়নি। পরে ময়নাতদন্তের পর নিজেদেরই ব্যবস্থা করে মৃতদেহ ঘরে ফেরাতে হয় গ্রামবাসীদের। তাতেও প্রশাসন কোনও সাহায্য করেনি বলেই অভিযোগ। নিহত সোয়াম চন্দ্রর বাড়ির লোকের দাবি, নিজেকে পঞ্চায়েতের সদস্য পরিচয় দিয়েও প্রাণে বাঁচতে পারেননি সোয়াম।
ঘটনা হল, এই অভিযানের পরই প্রশ্ন উঠেছিল পুলিশের মাওবাদী তত্ত্ব ঘিরে। কংগ্রেস বিধায়ক কাওয়াসি লাখমা দাবি করেছিলেন, ‘নিহত ১৫ জনই সাধারণ গ্রামবাসী। বিজেপি সরকার নিরীহ আদিবাসীদের হত্যা করছে।’ কড়া প্রতিক্রিয়ায় তখন বিজেপি বলেছিল, এমন কথা বলে নিরাপত্তা বাহিনীর কৃতিত্বকে খাটো করে দেখানোর চেষ্টা করছে কংগ্রেস। কিন্তু, এবার সেই কথাই শোনা গেল গ্রামবাসীদের মুখে। রক্তাক্ত নাল্কটং এখন বিচারের অপেক্ষায়।

ঝাড়খণ্ড পিপলস পার্টি (JHARKHAND PEOPLES PARTY – JPP) – এর দাবিপত্র পেশ।

বাঁকুড়ার খাতরা কলেজ কতৃপক্ষের কাছে দাবিপত্র পেশ করল ঝাড়খণ্ড পিপলস পার্টি (Jharkhand Peoples Party – JPP) – এর পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটি।
দাবিগুলি –
১) আদিবাসী মহাকবি সাধু রাম চাঁদ মুরমুর মূর্তি স্থাপন,
২) কলেজের একটি ভবনকে স্বাধীনতা সংগ্রামী “বাবা তিলকা মুরমু”-র নামে নামাঙ্কিত করতে হবে,
৩) মহান সাঁওতাল বিদ্রোহের অমর নায়ক “সিধু মুরমু ও কানহু মুরমু” –র প্রতি সন্মান প্রদর্শন করতে হবে।

বীরভূম জেলার রামপুরহাটে আদিবাসী পরিবারকে গ্রামে ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভ।


গ্রামছাড়া এক আদিবাসী পরিবারকে ফেরানোর দাবিতে গত মঙ্গলবার ২৮/০৮/২০১৮ দুপুরে রামপুরহাটের ঝাড়খণ্ড ঘেঁষা পাথর শিল্পাঞ্চলের চাদনি গ্রামে অবস্থান-বিক্ষোভ ও মিছিল করে এলাকার শতাধিক আদিবাসী। মিছিলে ছিলেন বীরভূম আদিবাসী গাঁওতার কনভেনর সুনীল সোরেন। তিনি বলেন, বাইকা সোরেনের বিরুদ্ধে তোলাবাজির মিথ্যা অভিযোগ তোলা হয়েছে। এমনকী তাঁর বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়েছে। তাই এলাকাবাসীর সঙ্গে এই আন্দোলনে শামিল হয়েছি।
জানা গিয়েছে, পাথর লোড করতে আসা গাড়ির চালকদের কাছ থেকে জোর করে দীর্ঘদিন ধরে তোলা আদায় করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ। তোলা না দেওয়ায় শিল্পাঞ্চলে যাওয়ার রাস্তায় ঠাকুরপুরা গ্রামের কাছে বাঁশ পুঁতে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে এলাকার বাসিন্দা বাইকা সোরেন ও তাঁর দলবলের বিরুদ্ধে। যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় স্তব্ধ হয়ে পড়ে শিল্পাঞ্চল। কর্মহীন হন কয়েক হাজার শ্রমিক। মাস তিনেক আগে বাইকাকে গ্রেপ্তার করে পুলিস। পরে তিনি জামিন পান। বাইকার বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর, লুটপাট চালানো হয় বলে অভিযোগ। প্রাণভয়ে গ্রামছাড়া হন বাইকা ও তাঁর পরিবার। এদিন চাঁদনি গ্রামে অবস্থান-বিক্ষোভে ওই পরিবারকে গ্রামে ফেরানোর দাবি জানান এলাকার আদিবাসীরা।
বিক্ষোভের জেরে এদিন বিকেলে রামপুরহাট-১-এর বিডিও নীতীশ বালা ও রামপুরহাট থানার আইসি সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করে বৃহস্পতিবার সবপক্ষকে নিয়ে এসডিও অফিসে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ ওঠে। বিডিও বলেন, দ্রুত সবপক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

সমবায়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।


সমবায়ের মাধ্যমে অভাবী মানুষকে উপার্জনের পথ করে দিতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলিকে ধান সংগ্রহের কাজে নামিয়ে ব্যাপক সুফল মিলেছে। এ বার সমবায়ের মাধ্যমে এক লক্ষ পরিবারের একজন মহিলাকে পশুপালনের জন্য ১৮ হাজার টাকা করে ঋণ দেবে সরকার। অন্য দিকে, ধানের অভাবী বিক্রি বন্ধ করতে খরিফ মরসুমে সমবায়গুলিকে নিয়ে সরকার কোমর বেঁধে নামছে। গত সোমবার ২৭/০৮/২০১৮ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক আলোচনাসভায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় এবং রাজ্য খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁদের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
রাজ্যের বিভিন্ন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির হাজার তিনেক সদস্য এসেছিলেন। সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘এক লক্ষ পরিবারকে সমবায় সমিতির মাধ্যমে ১৮ হাজার টাকা করে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। ওই টাকায় হাঁস-মুরগি, ছাগল কিনে প্রতিপালনের জন্য।’এই পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে অরূপ বাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই স্বামীজির ওই কথাটি বলেন, না-জাগিলে ভারত ললনা এ ভারত জাগে না। গাঁয়েগঞ্জে প্রকৃত অভাবী পরিবারের মহিলাদের এই ঋণ দেওয়া হবে। হাঁস-মুরগি-ছাগল পালন করে এক জন মহিলা অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা মাসে আয় করতে পারবেন বলে আমাদের আশা। মহিলারা নিয়মিত আয় করলে তার সুফল সুদূরপ্রসারী। এই প্রকল্প অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। একটি পরিবারের এক জন মহিলাকে অনুদান দেওয়া হবে।’
রাজ্যে এখন সমবায়গুলির আওতায় প্রায় ২ লক্ষ ১৮ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে। সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে ২০ লক্ষেরও বেশি মহিলা সদস্য আছেন। গত সাত বছরে গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মহিলাদের অবদান অনস্বীকার্য। ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০০ সমবায়কে কৃষি-যন্ত্রপাতি কিনে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই ‘কৃষি-যন্ত্রপাতি হাব’থেকে কম ভাড়ায় কৃষকরা চাষের যন্ত্র পাবেন।
এই মঞ্চেই খাদ্যমন্ত্রী জানান, ১ নভেম্বর থেকে (মূলত কালীপুজোর আগে থেকেই) ধান সংগ্রহ করতে নামছে সরকার। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় এখন আর অভাবী বিক্রি হয় না। এই বছর ধান কেনার জন্য তিন হাজার সমবায় সমিতিকে আমরা মাঠে নামানোর টার্গেট করেছি।’তবে কেন্দ্রীয় অসহযোগিতা এখনও অব্যাহত বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মিড ডে মিলের জন্য এফসিআই চাল নিয়েছে অথচ দু’বছর ধরে কেন্দ্র একটা টাকাও দেয়নি। ৩০০ কোটি টাকা পাই। একবার কেন্দ্রীয় খাদ্য দপ্তরের কাছে বিল পাঠাই। একবার এফসিআইয়ের কাছে বিল পাঠাই। গত বছরও চাল দিয়েছি। এই বছরও দিচ্ছি। চাইলে আরও চাল দেব। কিন্তু টাকা তো এখনও দিচ্ছে না। কেন্দ্র বঞ্চনা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সমবায় মন্ত্রী জানিয়েছেন, কয়েকটা রাইস মিল ধান কিনে চাল ফেরত দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই মঞ্চেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বাংলার চাষিদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকে দিল্লিও মেনে নিয়েছে।’কেন্দ্র এ রাজ্যর ধান কেনার পদ্ধতিকে ‘রোল মডেল’করছে বলে দাবি খাদ্যমন্ত্রীর। আলোচনাসভায় উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব দেন, ‘শাক-সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা ঠিক মতো নেই। চাষিরা সঠিক ভাবে জানে না কোথায় রাখতে হবে। সেখানে ফড়েরা সব নিয়ে চলে যাচ্ছে। তাই সমবায়ের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের যেমন ব্যবস্থা করা গিয়েছে, সেই রকম ভাবে যদি আলু, টম্যাটো, পান, উচ্ছে-সহ অন্য শাক-সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় সেটা দেখা হোক। সংরক্ষণের অভাবে শাক-সব্জি নষ্ট হয়ে যায় বছর বছর।’
এক নজরে –
�� রাজ্যের এক লক্ষ মহিলাকে ১৮,০০০ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে। হাঁস, মুরগি-ছাগল প্রতিপালন করার জন্য।
�� অর্থসাহায্য দেওয়া হচ্ছে দু’হাজার সমবায়কে। সব মিলিয়ে ১০০০ কোটি টাকার প্রকল্প— ‘কৃষি যন্ত্রপাতি হাব’।
�� ১ নভেম্বর থেকে ধান সংগ্রহ করতে নামছে সরকার। ধান কেনার জন্য তিন হাজার সমবায় সমিতিকে নামাতে চলেছে রাজ্য।

দলিত-আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষায় কেন্দ্রীয় অর্থ বরাদ্দে বঞ্চনা কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারের।


অতি বিলম্বে, অতি সামান্য। দলিত-আদিবাসী ছাত্রছাত্রীদের অনুদান দিবার ইহাই যেন নীতি নরেন্দ্র মোদী সরকারের। সংবাদে প্রকাশ, ২০১৫ সাল হইতে পর পর তিন বৎসর তফসিলি জনজাতির জন্য উচ্চশিক্ষায় জাতীয় বৃত্তি দেওয়া হয় নাই। ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী রাজীব গাঁধীর নামাঙ্কিত ওই বৃত্তিটির নাম পরিবর্তন করিয়া গত বৎসর ফের বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। কিন্তু যত জনকে বৃত্তি দিবার ঘোষণা ছিল, তালিকায় নাম উঠিয়াছে তাহার অর্ধেকের। বৃত্তি পাইবার আশায় যাঁহারা ইতিমধ্যে গবেষণা শুরু করিয়াছিলেন, তাঁহাদের অধিকাংশই নিরাশ হইয়াছেন। অনেকেই গবেষণা সম্পূর্ণ করিতে পারিবেন না, তাহা প্রায় নিশ্চিত। মোদীর শাসনকালে দলিত-আদিবাসীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানে সরকারের কার্পণ্য ও দীর্ঘসূত্রিতা লইয়া বারংবার অভিযোগ উঠিয়াছে। দলিত-আদিবাসীদের উন্নয়ন ও সামাজিক সহায়তার বরাদ্দ পড়িয়া আছে, অথচ সেই অর্থ তাঁহাদের নিকট পৌঁছাইতে সরকার ব্যর্থ। ‘পোস্ট-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া রাখিয়াছে কেন্দ্র। সামাজিক ন্যায় ও সক্ষমতা বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট অনুসারে, ওই খাতে আট হাজার কোটি টাকারও অধিক বকেয়া রহিয়াছে কেন্দ্রের। বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, দলিত ও আদিবাসী মিলিয়া দরিদ্রতম ছাত্রদের উচ্চশিক্ষায় বৃত্তির খাতে তিন বৎসরে বকেয়া ছাড়াইয়াছে তেরো হাজার কোটি টাকা। ‘প্রি-ম্যাট্রিক স্কলারশিপ’লইয়াও একই অভিযোগ। দলিতদের ছাত্রাবাস নির্মাণের জন্য নির্দিষ্ট বরাদ্দের এক-তৃতীয়াংশও রাজ্যগুলিকে পাঠায় নাই কেন্দ্র। এই হিসাব গত আর্থিক বৎসরের।
কিন্তু অর্থের অঙ্ক দিয়া ক্ষতির হিসাব করিয়া লাভ কী? প্রকৃত ক্ষতি মানবসম্পদের অপচয়ে। দলিত-আদিবাসীরা সমাজের দরিদ্রতম দুই বর্গ। সন্তানকে উচ্চশিক্ষিত করিতে হইলে যে দীর্ঘ বিনিয়োগ প্রয়োজন, তাহা জোগান দিবার সামর্থ্য অধিকাংশ দলিত-আদিবাসী পরিবারের নাই। তাহা স্পষ্ট হইয়াছে ২০১১ সালের জনগণনার ফলেও। দলিতদের মধ্যে স্নাতকের হার দেশের গড় হারের অর্ধেক, আদিবাসীদের মধ্যে তাহার চাইতেও কম। দুই সম্প্রদায়েই তরুণীদের মধ্যে সে হার আরও সামান্য। নানা সমীক্ষায় দেখা গিয়াছে, দলিত-আদিবাসী ছাত্রদের অধিকাংশই আসে গ্রাম হইতে, তাহারা পড়াশোনা করে ভারতীয় ভাষায়। স্বভাবতই, উচ্চশিক্ষা সম্পূর্ণ করিতে হইলে নানা প্রকার সহায়তা তাহাদের একান্ত প্রয়োজন।
বিশ্ববিদ্যালয়-সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দলিত-আদিবাসী ছাত্রদের জন্য সংরক্ষণ নূতন সুযোগ তৈরি করিয়াছে, কিন্তু সরকারি অসহযোগিতা ও সামাজিক অমর্যাদা তাহাদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করিতেছে। ২০১৬ সালে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানের ছাত্র রোহিত ভেমুলার আত্মহত্যা সেই বঞ্চনা ও অমর্যাদার পরিণাম। কত দলিত ছাত্রের এই পরিণাম হইয়াছে, কেন হইতেছে, তাহাদের কী সহায়তা প্রয়োজন, সে বিষয়ে সরকারি তরফে অনুসন্ধান করিয়া রিপোর্টও জমা পড়িয়াছে। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সরকারের যাহা ন্যূনতম কর্তব্য, ছাত্রছাত্রীদের প্রাপ্য সহায়তা যথাসময়ে তাহাদের নিকট পৌঁছাইয়া দেওয়া, সে কাজটুকু করিতে সরকার ব্যর্থ। অপর দিকে, দূরশিক্ষার সুযোগকে সঙ্কুচিত করিয়াছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। ইহা নিঃসন্দেহে দরিদ্র ও প্রান্তবাসী ছাত্রছাত্রীদের সর্বাধিক বিপন্ন করিবে। শিক্ষায় সংস্কার আনিতে হইবে ঠিকই, কিন্তু এই কি তাহার উপায়? ভারতে দরিদ্রের উচ্চশিক্ষার সুযোগ প্রসারিত হইবার পরিবর্তে সঙ্কুচিত হইতেছে। তফসিলি জাতি ও জনজাতির প্রতি মোদী সরকারের বঞ্চনা বহুমুখী। কিন্তু শিক্ষাবঞ্চনার ফল দেশের পক্ষে সর্বাধিক সুদূরপ্রসারী হইবে।

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...