SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): সমবায়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।

Saturday 1 September 2018

সমবায়ের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের।


সমবায়ের মাধ্যমে অভাবী মানুষকে উপার্জনের পথ করে দিতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতিগুলিকে ধান সংগ্রহের কাজে নামিয়ে ব্যাপক সুফল মিলেছে। এ বার সমবায়ের মাধ্যমে এক লক্ষ পরিবারের একজন মহিলাকে পশুপালনের জন্য ১৮ হাজার টাকা করে ঋণ দেবে সরকার। অন্য দিকে, ধানের অভাবী বিক্রি বন্ধ করতে খরিফ মরসুমে সমবায়গুলিকে নিয়ে সরকার কোমর বেঁধে নামছে। গত সোমবার ২৭/০৮/২০১৮ কলকাতার নজরুল মঞ্চে এক আলোচনাসভায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় এবং রাজ্য খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক তাঁদের পরিকল্পনা ও প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন।
রাজ্যের বিভিন্ন সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির হাজার তিনেক সদস্য এসেছিলেন। সমবায়মন্ত্রী অরূপ রায় বলেন, ‘এক লক্ষ পরিবারকে সমবায় সমিতির মাধ্যমে ১৮ হাজার টাকা করে স্বল্প সুদে ঋণ দেওয়া হবে। ওই টাকায় হাঁস-মুরগি, ছাগল কিনে প্রতিপালনের জন্য।’এই পরিকল্পনা নিয়ে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে অরূপ বাবু বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী প্রায়ই স্বামীজির ওই কথাটি বলেন, না-জাগিলে ভারত ললনা এ ভারত জাগে না। গাঁয়েগঞ্জে প্রকৃত অভাবী পরিবারের মহিলাদের এই ঋণ দেওয়া হবে। হাঁস-মুরগি-ছাগল পালন করে এক জন মহিলা অন্তত সাড়ে তিন থেকে চার হাজার টাকা মাসে আয় করতে পারবেন বলে আমাদের আশা। মহিলারা নিয়মিত আয় করলে তার সুফল সুদূরপ্রসারী। এই প্রকল্প অনুমোদন পেয়ে গিয়েছে। একটি পরিবারের এক জন মহিলাকে অনুদান দেওয়া হবে।’
রাজ্যে এখন সমবায়গুলির আওতায় প্রায় ২ লক্ষ ১৮ হাজার স্বনির্ভর গোষ্ঠী আছে। সেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিতে ২০ লক্ষেরও বেশি মহিলা সদস্য আছেন। গত সাত বছরে গ্রামীণ অর্থনীতিতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির মহিলাদের অবদান অনস্বীকার্য। ১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ২০০০ সমবায়কে কৃষি-যন্ত্রপাতি কিনে দেওয়া হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর পরিকল্পনা অনুযায়ী সেই ‘কৃষি-যন্ত্রপাতি হাব’থেকে কম ভাড়ায় কৃষকরা চাষের যন্ত্র পাবেন।
এই মঞ্চেই খাদ্যমন্ত্রী জানান, ১ নভেম্বর থেকে (মূলত কালীপুজোর আগে থেকেই) ধান সংগ্রহ করতে নামছে সরকার। তাঁর কথায়, ‘বাংলায় এখন আর অভাবী বিক্রি হয় না। এই বছর ধান কেনার জন্য তিন হাজার সমবায় সমিতিকে আমরা মাঠে নামানোর টার্গেট করেছি।’তবে কেন্দ্রীয় অসহযোগিতা এখনও অব্যাহত বলে অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘মিড ডে মিলের জন্য এফসিআই চাল নিয়েছে অথচ দু’বছর ধরে কেন্দ্র একটা টাকাও দেয়নি। ৩০০ কোটি টাকা পাই। একবার কেন্দ্রীয় খাদ্য দপ্তরের কাছে বিল পাঠাই। একবার এফসিআইয়ের কাছে বিল পাঠাই। গত বছরও চাল দিয়েছি। এই বছরও দিচ্ছি। চাইলে আরও চাল দেব। কিন্তু টাকা তো এখনও দিচ্ছে না। কেন্দ্র বঞ্চনা চালিয়ে যাচ্ছে।’
সমবায় মন্ত্রী জানিয়েছেন, কয়েকটা রাইস মিল ধান কিনে চাল ফেরত দিচ্ছে না। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এ নিয়ে কথা হয়েছে। খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই মঞ্চেই পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘বাংলার চাষিদের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজকে দিল্লিও মেনে নিয়েছে।’কেন্দ্র এ রাজ্যর ধান কেনার পদ্ধতিকে ‘রোল মডেল’করছে বলে দাবি খাদ্যমন্ত্রীর। আলোচনাসভায় উপস্থিত শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রস্তাব দেন, ‘শাক-সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা ঠিক মতো নেই। চাষিরা সঠিক ভাবে জানে না কোথায় রাখতে হবে। সেখানে ফড়েরা সব নিয়ে চলে যাচ্ছে। তাই সমবায়ের মাধ্যমে ধান সংগ্রহের যেমন ব্যবস্থা করা গিয়েছে, সেই রকম ভাবে যদি আলু, টম্যাটো, পান, উচ্ছে-সহ অন্য শাক-সব্জি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায় সেটা দেখা হোক। সংরক্ষণের অভাবে শাক-সব্জি নষ্ট হয়ে যায় বছর বছর।’
এক নজরে –
�� রাজ্যের এক লক্ষ মহিলাকে ১৮,০০০ টাকা করে ঋণ দেওয়া হবে। হাঁস, মুরগি-ছাগল প্রতিপালন করার জন্য।
�� অর্থসাহায্য দেওয়া হচ্ছে দু’হাজার সমবায়কে। সব মিলিয়ে ১০০০ কোটি টাকার প্রকল্প— ‘কৃষি যন্ত্রপাতি হাব’।
�� ১ নভেম্বর থেকে ধান সংগ্রহ করতে নামছে সরকার। ধান কেনার জন্য তিন হাজার সমবায় সমিতিকে নামাতে চলেছে রাজ্য।

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...