SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন সংশোধন রুখতে বিজেপি জোট সরকারের শরিকরা সরব।

Saturday 4 August 2018

তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন সংশোধন রুখতে বিজেপি জোট সরকারের শরিকরা সরব।

তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act) সংশোধন রুখতে বিজেপি জোট সরকারের শরিকরা সরব।
তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act) নিয়ে মোদী সরকারের ওপর চাপ আরও বাড়ল৷ দলের সাংসদ উদিত রাজ আগামী ৯ অগস্টের বিক্ষোভকে সফল করতে উঠেপড়ে লেগেছেন৷ সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে দলের দলিত মন্ত্রীদের ‘পরগাছা’ পর্যন্ত বলেছেন তিনি৷ এর থেকেই স্পষ্ট বিজেপির দলিত সাংসদদের, বিশেষ করে উদিত রাজের মনোভাব। এর পাশাপাশি শরিকি চাপও বেড়েছে৷ রামবিলাস পাসোয়ান সরকারকে চরমসীমা বেঁধে দিয়ে বলেছিলেন, ৭ অগস্টের মধ্যে পুরনো তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act)-কে পুনর্বহাল করতে হবে৷ নীতীশ কুমারের জেডিইউ সেই দাবি সমর্থন করেছে৷ এই অবস্থায় বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে, লোকসভার অধিবেশন শেষ হলে তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act)-কে লঘু করা রুখতে অর্ডিন্যান্স জারি করা হবে৷ তখন আর ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকবে না৷
কিন্তু ঘটনা হল, সংসদের বাদল অধিবেশন ১০ অগস্ট পর্যন্ত চালু থাকবে৷ অর্ডিন্যান্স আনতে গেলে তার পর আনতে হবে৷ কারণ, সংসদের অধিবেশন চালু থাকলে অর্ডিন্যান্স আনা যায় না৷ সংসদ চালু না থাকলে খুব দরকারি বিষয়ে অর্ডিন্যান্স আনা যায়৷ পরে সংসদ বসলে বিল এনে তা পাশ করাতে হয়৷ এখন যে প্রশ্নটা উঠছে, তা হল, সুপ্রিম কোর্টের রায় এসেছিল মার্চের শেষে৷ তারপর এপ্রিল, মে, জুন-তিন মাস হাতে পেয়েছিল সরকার৷ তা হলে বাদল অধিবেশনে কেন বিল আনা হল না? দ্বিতীয় প্রশ্ন, যিনি এই রায় দিয়েছিলেন, সেই বিচারপতি আদর্শ গোয়েলকে কেন অবসরের ৪৮ ঘন্টার মধ্যেই জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যালের প্রধান হিসাবে নিয়োগ করা হল?
এই শেষ সিদ্ধান্ত নিয়েও বিজেপি জোট সরকারের দলিত নেতা উদিত রাজ থেকে রামবিলাস পাসোয়ান সকলেই প্রশ্ন তুলছেন৷ এই সিদ্ধান্ত দলিতদের মধ্যে মোটেই ভালো বার্তা দেয়নি৷ দেশের প্রতিটি রাজ্যেই কমবেশি দলিত ও আদিবাসী ভোট রয়েছে৷ তার মধ্যে বেশি রয়েছে উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ছত্তিসগড়, ঝাড়খণ্ড, ওডিশা, গুজরাট, রাজস্থানে৷ সেই সব রাজ্যেই এই দুই কারণে দলিতরা ক্ষুব্ধ৷ একেই দলিতদের ওপর অত্যাচারের ঘটনা নিয়ে দেশ মাঝে মধ্যেই উত্তাল হয়৷ তার ওপর তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act)-কে লঘু করার অভিযোগ যুক্ত হয়েছে৷ প্রাত্তন বিচারপতি আদর্শ গোয়েলের নিয়োগ সেই সমস্যাকে আরও বাড়িয়েছে৷ বিজেপিতেই এখন সবচেয়ে বেশি দলিত ও আদিবাসী সাংসদ রয়েছেন৷ তাঁরা প্রত্যেকেই চাপটা অনুভব করছেন৷ উদিত রাজের মতো কেউ কেউ প্রকাশ্যে ক্ষোভটা জানাচ্ছেন৷ অন্যরা প্রকাশ্যে ক্ষোভ না জানালেও দলের কাছে বার্তা পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করছেন৷ উদিত রাজ যেমন সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তিনি দলিতদের কথা এ ভাবে বলতে পারছেন, এটা বিজেপির পক্ষে ভালো৷ এটা দলকে সাহায্য করছে৷ যদি সকলেই চুপ থাকতেন, তাতে দলের ক্ষতি হত৷ কংগ্রসের সময় দলিত নেতারা সরকারের কড়া সমালোচনা করতেন৷ তাই এত বছর ধরে দলিতরা কংগ্রেসের সঙ্গে রয়েছেন৷ তিনি বরং সেফটি ভালভের কাজ করেছেন৷ দলিতরা মনে করছেন, বিজেপিতে অন্তত একজন আছেন, যিনি তাঁদের জন্য লড়ছেন৷ দলও তাঁকে জায়গা দিচ্ছে৷ দরজা বন্ধ করে দিচ্ছে না৷
কিন্তু এর পরই বিচারপতি গোয়েলকে নিয়ে উদিত রাজ বলেন, তাঁর মানসিকতাই দলিত-বিরোধী ও সংরক্ষণ-বিরোধী৷ তিনি এমন একটা পদে রয়েছেন, যেখানে থেকে তিনি ক্ষতি করতে পারবেন৷ জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুন্যালের প্রধান হিসাবে তিনি আদিবাসীদের ক্ষতি করতে পারেন৷ এই ধরনের ব্যক্তিকে গ্রিন ট্রাইবুন্যালের প্রধান হওয়ার অনুমতি দেওয়া উচিত নয়৷
এই কথাগুলো নিঃসন্দেহে মোদী-শাহের পক্ষে অস্বস্তির কারণ। এভাবেই চাপ বাড়ানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন উদিতের মতন সরকারপন্থী দলিত নেতা মন্ত্রীরা৷
এই দিকে শিবসেনার পর এ বারে বিজেপির সঙ্গত্যাগের হুঁশিয়ারি দিয়ে দিলেন রামবিলাস পাসোয়ানও। আর এনডিএ-শরিকদের অসন্তোষে সুরে মেলাল রাহুল গাঁধীর দলও। কয়েক দিন ধরেই রামবিলাস পাসোয়ানও দাবি করে আসছেন, তপশিলী জাতি–উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন (SC/ST Attrocity Act) লঘু করা যাবে না। সরকারকে অধ্যাদেশ আনতে হবে। আর সুপ্রিম কোর্টের যে প্রাক্তন বিচারপতি আদর্শ গোয়েলের বেঞ্চ এই আইনকে লঘু করেছিলেন, অবসরের দিনই তাঁকে উপহার দেওয়া হয়েছিল জাতীয় গ্রিন ট্রাইবুনালের চেয়ারম্যান পদ। সেই পদ থেকেও তাঁকে সরাতে হবে। রামবিলাসের পুত্র চিরাগ ইতিমধ্যেই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে অসন্তোষ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, সরকার দাবি না মানলে আগামী ৯ অগস্ট দলিতদের আন্দোলনে তাঁরাও সামিল হবেন। মানুষ ও সরকারের মধ্যে বাছতে হলে জনতার পাশেই থাকবেন।
সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস মন্তব্য করে, ‘‘যাক, সুমতি হয়েছে!’’ কংগ্রেসের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গে দলিতদের অসন্তোষ নিয়ে লোকসভায় সরব হয়েছিলেন। গ্রিন ট্রাইবুনাল থেকে বিচারপতি আদর্শ গোয়েলের অপসারণও চেয়েছেন। শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে আগেই ‘একলা-চলো’র ঘোষণা করেছেন। অমিত শাহের মধ্যস্থতায়ও বরফ গলেনি। বরং অমিত শাহ এখন দলকে একা লড়ার প্রস্তুতি নিতে বলছেন।
সুত্র – আনন্দবাজার পত্রিকা ও এই সময়।

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...