SANTHALDISHOM(সানতাল দিশোম): SC/ST অত্যাচার নিরোধক আইন পুনরায় কঠোর করার বিরুদ্ধে ০৬/০৯/২০১৮ ভারত বনধ।

Friday 7 September 2018

SC/ST অত্যাচার নিরোধক আইন পুনরায় কঠোর করার বিরুদ্ধে ০৬/০৯/২০১৮ ভারত বনধ।


SC/ST অত্যাচার নিরোধক আইন পুনরায় কঠোর করার বিরুদ্ধে ০৬ ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ ভারত বনধ পালন উচ্চবর্ণদের সংগঠনগুলির।
তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি অত্যাচার নিরোধক আইন, ১৯৮৯ বা The Scheduled Castes And The Scheduled Tribes (Prevention Of Atrocities) Act, 1989 পুনরায় সংশোধন করে পূর্বকার অবস্থায় ফিরিয়ে আনার বিরুদ্ধে গত ৬ ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ ভারত বন ধের ডাক দিয়েছিল উচ্চবর্ণদের কয়েকটি সংগঠন। এই সংশোধনীর প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে তাণ্ডব চালাল উচ্চবর্ণের একাধিক সংগঠন। উচ্চবর্ণ সংগঠনগুলির ডাকা ভারত বন্‌ধে বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, রাজস্থান-সহ একাধিক রাজ্যে গোলমাল ছড়ায়। ভোটের আগে উচ্চবর্ণের এই বিক্ষোভ চিন্তা বাড়িয়েছে বিজেপির।
মধ্যপ্রদেশ, বিহার, উত্তরপ্রদেশের নানা জায়গায় টায়ার, কুশপুতুল পোড়ানো হয়। রেল অবরোধ হয়। বহু জায়গায় ক্ষোভের মুখে পড়েন বিজেপি নেতারা। মার খান বিহারের সাংসদ পাপ্পু যাদব। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ঝাড়খণ্ড ও মহারাষ্ট্রেও বিক্ষিপ্ত গোলমাল হয়। রাজস্থানে তিন ধর্মঘটী গ্রেফতার হন।
সব চেয়ে বেশি অশান্তি হয়েছে বিহারে। জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয় দোকান। রেললাইন অবরোধ করা হয়। মুজফ্‌ফরপুরে হেনস্থার মুখে পড়েন জন অধিকারী পার্টির প্রধান ও বিহারের সাংসদ রাজেশ রঞ্জন ওরফে পাপ্পু যাদব। গুরুতর জখম পাপ্পু বলতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন, ‘‘ওরা জাত জানতে চাইল। মুখ খুলতেই মার।’’ পটনায় বিহার বিজেপির সদর দফতরও ঘেরা হয়।
মধ্যপ্রদেশে কিছু দিন ধরেই মোরেনা, ভিন্দ, গ্বালিয়র, মন্দসৌর প্রভৃতি জায়গায় বিক্ষোভ চলছিল। আগেই কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি হয়। মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ছিল উত্তরপ্রদেশ। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানান, এই ভারত বন্‌ধের মানে নেই। সংশোধিত আইনের যাতে অপব্যবহার না হয়, খেয়াল রাখবে তাঁর সরকার। জাতীয় তফশিলি কমিশনের চেয়ারম্যান রামশঙ্কর কাঠেরিয়ার অভিযোগ, একটি বিশেষ গোষ্ঠী একই সঙ্গে তফশিলি ও উচ্চবর্ণের আন্দোলনে ইন্ধন দিয়ে আখেরে বিজেপির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে।
মধ্যপ্রদেশজুড়ে ১৪৪ ধারা জারি। মোতায়েন রয়েছে ৩৪ কোম্পানি নিরাপত্তাবাহিনী এবং ৫০০০ নিরাপত্তাকর্মী। স্থগিত ইন্টারনেট এবং মোবাইল পরিষেবা। বিহার, মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশে বন্ধ দোকানপাট, স্কুল, কলেজ সহ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনেও বিক্ষোভ দেখান শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রীরা। ভোপালে পেট্রোল পাম্পগুলি সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত খোলা রাখার কথা জানানো হয়েছে পাম্প কর্তৃপক্ষের তরফে।
গ্বালিয়রে নজরদারি চালাচ্ছে ড্রোন। বিহারের মোকামায় বিক্ষোভকারীরা টায়ার জ্বালিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। আরা, দ্বারভাঙা, মুঙ্গেরের মসুদনে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভকারীরা। মধ্যপ্রদেশ এবং বিহারে রেললাইনজুড়ে কড়া নিরাপত্তা জারি হয়েছে। রাজস্থানের কোটায় বন্‌ধ সমর্থকরা সাধারণ মানুষের হাতে ফুল দিয়ে তাঁদেরও বন্‌ধ সমর্থনের আবেদন জানান। মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান পুরো পরিস্থিতি হেলিকপ্টারে পরিদর্শন করেন। মধ্যপ্রদেশ, উত্তর প্রদেশে বিক্ষোভকারীরা সরকারের কুশপুতুল পোড়ায়।
বিহারে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বাসভবনের সামনেও বিক্ষোভ দেখানোর চেষ্টা করেন বনধ সমর্থকেরা। আগাম সতর্কতা হিসেবে এদিন বিহারের সব স্কুল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়েছিল। এছাড়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানেও বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়ে।
গোটা মধ্যপ্রদেশেই এদিন বন্ধ পালিত হয়। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান আগেই হুমকি দিয়েছিলেন, তিনি থাকতে রাজ্য থেকে সংরক্ষণ তুলে দেওয়া যাবে না। যদিও রাজ্যবাসীর উদ্দেশে তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, ‘মধ্যপ্রদেশ শান্তির জায়গা। আমি আশা করব আমরা সবাই মিলে রাজ্যের সেই শান্তি বজায় রাখব। তাই কারও যদি কোনও বক্তব্য থাকে তাহলে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে কথা বলুক। আমার কাছে আসার রাস্তা সবসময়েই খোলা।’ ভিন্দ, শিবপুরী, গোয়ালিয়রের মতো বেশ কয়েকটি জেলায় আগাম সতর্কতা হিসেবে আগে থেকেই স্কুল ছুটি ঘোষণা করা হয়। পুলিস জানিয়েছে, শান্তিপূর্ণভাবেই রাজ্যে বন্ধ পালিত হয়েছে। কোনও জায়গা থেকে অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি।
ব্রহ্মা সমাগম স্বর্ণ জনকল্যাণ সংগঠনের জাতীয় সভাপতি ধর্মেন্দ্র শর্মা বলেন, মোট ১৫০টি সংগঠন এই বনধের ডাক দিয়েছে বলে তিনি জানান। গোটা রাজ্যেই বনধের খুব ভালোমতো সাড়া মিলেছে বলে শর্মা দাবি করেন। বিশেষ করে কাটনি, বিদিশা, সেহোর, দেওয়াস, ইন্দোর, গোয়ালিয়র, ঝাবুয়া, ছাত্তারপুর, মন্দসৌর, সাগর, উজ্জয়ীন প্রভৃতি শহরে পুরোপুরি বন্ধ পালন করা হয়। অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটলেও ছিন্দওয়াড়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা কালো পোশাক পরে প্রতিবাদ জানান। পুলিস সুপার অতুল সিং বলেন, আগে থেকেই এলাকায় অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন ছিল।
এই বনধের বিরোধিতা করেও গোয়ালিয়র, ভোপাল এবং অন্যান্য শহরে মানুষকে রাস্তায় নামতে দেখা গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে বিরোধীরা তাঁদের মাথার টুপিতে লেখেন, ‘আমিই সেই মায়ের ছেলে’। প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান চ্যালেঞ্জ ছুড়েছিলেন, ‘আমি থাকতে কোন মায়ের ছেলের এত ক্ষমতা যে সংরক্ষণ তুলে দেবে।’ এদিন বনধের সমর্থনে বেশ কয়েকজন মুখ্যমন্ত্রীর সেই মন্তব্যকে ইঙ্গিত করে প্রতিবাদে রাস্তায় নামেন। উল্লেখ্য, রাজ্য পুলিসের ইন্টেলিজেন্স বিভাগের আইজি মকরন্দ দিউসকর বুধবারই জানিয়েছিলেন, আগাম সতর্কতা হিসেবে রাজ্যের বেশ কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ৩৪ কোম্পানি বিশেষ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment

বীরভূম জেলার সিউড়িতে স্বাধীনতা সংগ্রামী বাজাল এর নামে মেলা

 বীরভূম জেলার সিউড়ির বড়বাগানের আব্দারপুর ফুটবল ময়দানে আয়োজিত হতে চলেছে ‘বীরবান্টা বাজাল মেলা-২০১৯’। ১৯শে জানুয়ারি এই মেলা আয়োজিত...